হাভানায় অনুষ্ঠিত G77 প্লাস চায়না শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান উপলক্ষ্যে প্রতিনিধি দল গঠন
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাননীয় মন্ত্রী জাহিদ মালেক এর নেতৃত্বে কিউবার রাজধানী হাভানায় অনুষ্ঠিত ১৫-১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে G77 প্লাস চায়না শীর্ষ সম্মেলনে যোগদান উপলক্ষ্যে নিম্নলিখিত সদস্যের সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধি দল গঠন করা হয়:
০১. মাননীয় মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
০২. ড. খলিলুর রহমান, মান্যবর হাইকমিশনার, অটোয়া, কানাডা ও কিউবার অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত
০৩. জনাব দেওয়ান হোসনে আইয়ুব, মিনিস্টার, বাংলাদেশ হাইকমিশন, অটোয়া, কানাডা
০৪. মাননীয় মন্ত্রীর একান্ত সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়
০৫. জনাব হাসান আল বাশার আবুল উলায়ী, প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান, বাংলাদেশ হাইকমিশন, অটোয়া, কানাডা।
G77 প্লাস চায়না শীর্ষ সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মাননীয় মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। শীর্ষ সম্মেলনে ১১৬টি দেশ এবং ১২ টি সংস্থা এবং জাতিসংঘ (UN) ব্যবস্থার সংস্থার ১৩০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করে। হাভানায় শীর্ষ সম্মেলনে ৩১ জন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, ১২ জন ভাইস-প্রেসিডেন্ট, কেবিনেট মন্ত্রীসহ এবং অন্যান্য উচ্চ-পর্যায়ের সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। কিউবার রাষ্ট্রপতি Miguel Diaz-Canel ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ G77 প্লাস চায়না সামিট এর চেয়ারম্যান ও কিউবার রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে এই শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলনে প্রথমেই সকল সদস্য রাষ্ট্র বিতর্ক সেশনে নিজ নিজ দেশের পক্ষে Country Statement প্রদান করে। ইতোপূর্বে, প্রতিনিধিদলগুলি একটি স্বচ্ছ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তঃসরকারি আলোচনা প্রক্রিয়ার ফলস্বরূপ ৪৭টি বিষয়সহ G77 প্লাস চীন গ্রুপের শীর্ষ সম্মেলনের রাজনৈতিক ঘোষণা গ্রহণ করতে সকল সদস্য রাষ্ট্র সমূহ সম্মত হন। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান হিসাবে এবং বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মাননীয় মন্ত্রী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় শীর্ষ এ সম্মেলনে ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে বাংলাদেশের Country Statement পাঠ করেন। মাননীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় করোনা মহামারী সংকট সফলভাবে পরিচালনা করেছিলেন এবং সংকট ব্যবস্থাপনার জন্য উক্ত সময়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলি থেকে সময়মতো ভ্যাকসিন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামাদি প্রাপ্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে, প্রাথমিকভাবে করোনা মহামারী ব্যবস্থাপনা অজানা ছিল তাই মহামারী ব্যবস্থাপনার প্রাথমিক দিনগুলি মোকাবিলা ছিল চ্যালেঞ্জিং। এই অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে সকল সেক্টরে প্রযুক্তিগত জ্ঞানের আদান-প্রদান নিশ্চিত করার উপর তিনি জোর দেন। তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন যে, আমরা বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের যুগে বাস করছি, যা জীবনযাত্রায় দ্রুত বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। তবে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের নেতিবাচক প্রভাব উন্নয়নশীল এবং দ্বীপ দেশগুলিকে জলবায়ু পরিবর্তন এবং সম্পদের ঘাটতির কারণে বিপর্যয়ের গভীরতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী কান্ট্রি স্টেটমেন্ট এ বলেন যে, প্রযুক্তিগত জ্ঞান শুধুমাত্র উন্নত দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়। বরং প্রযুক্তিগত জ্ঞান উন্নত দেশ সমূহ থেকে উন্নয়নশীল দেশের সাথে অবশ্যই দ্রুত সময়ে আদান প্রদান করতে হবে। তিনি সকল সদস্য রাষ্ট্রকে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এবং এ লক্ষ্যে ব্যাপক গবেষণার পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে তিনি মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশের Country Statement-এ আরো বলেন যে, উন্নত দেশগুলোকে শুধুমাত্র উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দিয়েই ক্ষতিপূরণ প্রদান করলে হবে না, প্রযুক্তিগত জ্ঞান অবশ্যই প্রদান করতে হবে।
এ সম্মেলন উপলক্ষ্যে ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী হাভানায় পৌঁছালে কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এ সময় অটোয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার দেওয়ান হোসনে আইয়ুর এবং প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান জনাব হাসান আল্ বাশার আবুল উলায়ী ও মাননীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রীর একান্ত সচিব উপস্থিত ছিলেন।
শীর্ষ এ সম্মেলনে উপলক্ষ্যে অটোয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার জনাব দেওয়ান হোসনে আইয়ুব ও প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান জনাব হাসান আল্ বাশার আবুল উলায়ী ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে কিউবার রাজধানী হাভানায় পৌঁছান । কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয় করে বাংলাদেশের কান্ট্রি স্টেটমেন্ট, প্রেটোকল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলী চূড়ান্ত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের সফল অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেন।
শীর্ষ সম্মেলনের সময়, বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের প্রধান মাননীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী, ইয়েমেন, লিবিয়া, কিউবাসহ জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সচিব মহোদয়ের সাথে দ্বিপাক্ষিক সাক্ষাত করেন। তাঁরা নিজ নিজ দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।
এ সম্মেলন উপলক্ষ্যে কিউবার রাষ্ট্রপতি, G77 প্লাস চায়না এর সদস্য দেশসমূহের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানগণ, কেবিনেট মন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতদের সম্মানে একটি নৈশভোজের আয়োজন করেন। উক্ত নৈশভোজে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের প্রধান মাননীয় স্বাস্থ্য ও পবিরার কল্যাণ মন্ত্রী ও বাংলাদেশ হাইকমিশন,অটোয়া, কানাডার পক্ষে মিনিস্টার জনাব দেওয়ান হোসনে আইয়ুর অংশগ্রহণ করেন।
শীর্ষ সম্মেলনের শেষ তথা দ্বিতীয় দিনে ৪৭- আর্টিকেল হাভানা চূড়ান্ত ঘোষণাপত্র গ্রহণ করা হয়। সমাপনী বক্তব্যে, কিউবার প্রধানমন্ত্রী Manuel Marrero Cruz কিউবার জনগণ ও সরকারের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণকারী সকল সদস্য রাষ্টকে ধন্যবাদ জানান।