ফিচার্ড মত-মতান্তর

তুলসী গ্যাবার্ড-এর বক্তব্য সঠিক, এবং সত্য

বাংলাদেশের-ভবিষ্যৎ-কি

তুলসী গ্যাবার্ড-এর বক্তব্য সঠিক, এবং সত্য

শিতাংশু গুহ, ১৯শে মার্চ ২০২৫। নিউইয়র্ক।

তুলসী গ্যাবার্ড-এর বক্তব্য সঠিক, এবং সত্য। বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু অত্যাচার চরমে উঠেছে, ইসলামী সন্ত্রাসবাদ জাঁকিয়ে বসেছে এবং এঁরা ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নৃশংস পথে এগুচ্ছে। ১৮-টি ইন্টিলিজেন্স সংস্থা নিয়ে গঠিত ‘ডিএনআই’ (ডিপার্টমেন্ট অফ ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স)-র ডিরেক্টর মিস গ্যাবার্ড যা বলেছেন সেটি হোয়াইট হাউসের বক্তব্য, ডিএনআ’র তথ্য-উপাত্ত’র সারসংক্ষেপ। এটিকে ‘হাসিয়া উড়াইয়া’ দেয়ার সুযোগ নেই। ছোটবেলায় ভাবসম্প্রসারণ পড়েছিলাম যে, ‘অমঙ্গলকে হাসিয়া উড়াইয়া দিলে মঙ্গল সমেত উড়িয়া যাইবে’। ড: ইউনুস প্রশাসন তুলসী’র বক্তব্যের প্রতিবাদ ও নিন্দা করে সম্ভবত: ‘উড়িয়া যাইবার’ পথটি আরো একটু সুগম করলেন। পতনের সময় এলে মানুষ এরকম ভুল করে। এটি সত্যি যে ইউনূসের বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে। সামনের দিনগুলোতে তিনি হয়তো ফ্রান্সে গিয়ে পিনাকী’র সাথে গলা জড়িয়ে কান্নাকাটি করতে পারবেন।

(২)

৯মাস পর সুনিতা উইলিয়াম পৃথিবীতে ফিরেছেন। পুরো বিশ্ব ৪জন এস্ট্রোনটের এ ফিরে আসাকে স্বাগত জানিয়েছে, সবার মাঝে এক ধরণের আনন্দের বন্যা বয়ে গেছে। পশ্চিম-বাংলার মুসলিম তোষণকারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীও এ সংবাদে খুশি। তিনি সুনীতাকে ‘ভারতরত্ন’ পুরুস্কার দেয়ার আহবান জানিয়েছে। সাথে এও বলেছেন যে, ‘স্পেস নিয়েও তাঁর যথেষ্ট পড়াশোনা আছে’। মহাকাশ নিয়ে মমতার জ্ঞান-বহরের সংবাদ শুনে সুনীতা উইলিয়াম আগ্রহভরে বলেছেন যে, ‘অক্সফোর্ডে পিসি’র ভাষণ শুনবো বলেই তো আমি তড়িঘড়ি পৃথিবীতে চলে এলাম’। সুনিতা অনেক দিন পৃথিবীতে ছিলেন না, সব খবর ঠিকমত তার কাছে পৌঁছেনি। তিনি হয়তো তৃণমূলের অপপ্রচার শুনেছেন যে, পিসি অক্সফোর্ডে ভাষণ দিচ্ছেন? সুনীতা যখন জানতে পারবেন যে পিসি অক্সফোর্ডের অন্তর্ভুক্ত একটি অখ্যাত কলেজে ভাষণ দেবেন, তখন হয়তো দু:খ পাবেন।

(৩)

প্রধান উপদেষ্টা ড: মোহাম্মদ ইউনুস বলেছেন যে, ‘হিন্দুদের ওপর আক্রমন ধর্মীয় নয়, রাজনৈতিক’। একই সময়ে ধর্ম উপদেষ্টা বলেছেন, ‘যেভাবে বলা হচ্ছে, সে মাত্রায় অত্যাচার হয়নি। একই উপদেষ্টা ক’দিন আগে বলেছিলেন যে, ‘হিন্দুদের হয়রানি সাম্প্রদায়িক নয়, বরং এটি রাজনৈতিক’। বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন একটি ‘ওপেন সিক্রেট’। ইউরোপ, আমেরিকা, জাতিসংঘ বহুবার এটি বন্ধের আহবান জানিয়েছে। কিন্তু এটি থামছে না। এ সময়ে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস মিথ্যা অভিযোগে কারাগারে, এটি কি রাজনৈতিক, নাকি তিনি হিন্দু বলে জেলে?  হিন্দু মন্দিরে আক্রমন বা মুর্ক্তি ভাঙ্গচুর সাম্প্রদায়িক নিপীড়ন। হিন্দু গায়ক রাহুল আনন্দের বাড়িতে আক্রমণ ও তাকে উচ্ছেদ বা ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছিল, কারণ তারা হিন্দু। হিন্দু বলেই ১৯বছরের যুবক উৎসব মণ্ডলকে থানার ভেতর পুলিশ, সেনাবাহিনীর সামনে মাদ্রাসা ছাত্ররা পিটিয়ে হত্যা করতে চেষ্টা করেছিলো। হিন্দু হয়ে মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করায় রবি দাসকে জনতা পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। এ  সবগুলো সাম্প্রদায়িক ঘটনা, রাজনৈতিক নয়! প্রধান উপদেষ্টা, ধর্ম উপদেষ্টা ও জামাতের আমির একাধিকবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়েছেন, হিন্দুর ওপর অত্যাচারের ঘটনাগুলো সাম্প্রদায়িক বলেই, তাইনা?

(৪)

এ সময়ে বাংলাদেশ ছোট্ট মেয়ে আছিয়ার নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যার বিরুদ্ধে উত্তাল, মানুষ ন্যায়বিচার চায়। বাংলাদেশে মেয়েরা আর নিরাপদ নয়। বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন পাকিস্তানের চেয়ে খারাপ। মানুষ ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। সরকার ‘মব-জাষ্টিস’-কে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছেন। টোকাইরা নুতন দল গড়েছে। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ‘জাগপা’ গঠিত হয়েছিলো, টেকেনি। এনসিপি’ টেকার  কথা নয়! সাধারণ মানুষ বর্তমান দমনমূলক শাসনব্যবস্থায় ক্লান্ত। গণহত্যা-ধর্ষণ, ধর্মীয় উন্মাদনা পুরো দেশকে বিপন্ন করে তুলেছে। মানুষ অধীর আগ্রহে পরিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করছে, কারণ এই সরকার কেবল অবৈধই নয়, অযোগ্য এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অপরাধী।

[email protected]; 3/18/25

 


এসএস/সিএ
সংবাদটি শেয়ার করুন