লাইফ সাপোর্ট থেকে ফিরে এসে যেমন আছেন আজিজুল হাকিম
জাহিদ আকবর
‘তাদের মুখে এসব কথা শুনে আমার দু’চোখ বেয়ে অঝরে পানি গড়িয়ে পড়ছিল’
দর্শক নন্দিত অভিনেতা আজিজুল হাকিম করোনায় আক্রান্ত হয়ে অত্যন্ত গুরুতর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন বেশ কয়েকদিন। সব শঙ্কা কাটিয়ে তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। লাইফ সাপোর্ট থেকে ফিরে এসে যেমন আছেন আজিজুল হাকিম …..
নব্বইয়ের দশক থেকে তিনি অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করে রেখেছেন। টেলিভিশন নাটকে বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে তাকে। বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন তিনি। মঞ্চ নাটকেরও একজন নিবেদিত প্রাণ আজিজুল হাকিম।
তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য টেলিভিশন নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘কোন কাননের ফুল’, ‘সংশপ্তক’, ‘নক্ষত্রের রাত’ ও ‘দিনরাত্রির খেলা’। মঞ্চ নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘ইবলিশ’, ‘ওরা কদম আলী’, ‘মানুষ’, ‘গিনিপিগ’, ‘আগুনমুখা’, ‘খেলা খেলা’। চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘পদ্মানদীর মাঝি’ ও ‘শঙ্খনীল কারাগার’।
গত ২১ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন এই অভিনেতা। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ফেরা ও বর্তমান সময়ের অনেক কথা তিনি জানিয়েছেন ।
লাইফ সাপোর্ট থেকে যখন কিছুটা সুস্থ হয়ে ফিরলেন তখনকার অবস্থা কেমন ছিল?
সেসব কথা আমার স্ত্রী, য়ের কাছে শুনেছি। মানুষ আমার জন্য প্রাণখুলে প্রার্থনা করেছেন, ভালোবাসা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন। এতো এতো মানুষের ভালোবাসায় ফিরে এসেছি। তাদের মুখে এসব কথা শুনে আমার দু’চোখ বেয়ে অঝরে পানি গড়িয়ে পড়েছিল। তাদের ভালোবাসার কাছে ঋণী। তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
আমিও প্রাণ খুলে সবাইকে ভালোবাসা জানিয়েছি। ভালোবাসার চেয়ে বড় কিছু নেই বলে মনে করি। আমি দেশের মানুষ, সহকর্মী, আমার পরিবার ও যারা আমাকে চিকিৎসা দিয়ে ভালো করেছে তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ।
করোনামুক্ত হয়ে প্রথম কোন নাটকের শুটিং দিয়ে অভিনয়ে ফিরলেন?
করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর প্রথম শুটিংয়ে অংশ নিয়েছি ‘স্বর্ণমানব-৪’ নামের একটি গোয়েন্দা নাটকের। নাটকটিতে আমার সহশিল্পী হিসেবে ছিলেন সালাউদ্দিন লাভলু, মোশাররফ করিম, মম, রুনা খানসহ আরও অনেকে।
ড. মইনুল খান রচিত আবু হায়াত মাহমুদ পরিচালিত সময়োপযোগী একটা নাটক। এছাড়া কয়েকদিন আগে তারেকের পরিচালনায় একটা বিজ্ঞাপনের শুটিং করলাম।
এখন কী নিয়মিত অভিনয়ে দেখা যাবে?
একজন অভিনেতার অভিনয় করতেই ইচ্ছা করবে। কিন্তু, অভিনয় আর চাকরির মধ্যে একটা সমন্বয় করতে হচ্ছে এখন। যদিও আমি এখন শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ তবুও করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে না আসা পর্যন্ত শুধুমাত্র বিশেষ কিছু নাটকের শুটিং করব।
কিছু ধারাবাহিক নাটক প্রচার হয়ে আসছিল। সেসব নাটকের পরিচালক, প্রযোজকরা যাতে আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি না হন সে কারণে সেসব নাটকের কাজ করছি। আমি স্বাস্থ্যকর পরিবেশেই এসব নাটকের শুটিংয়ে অংশ নিচ্ছি।
সম্প্রতি একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হিসেবে যোগ দিয়েছেন। কেমন লাগছে এই নতুন পরিচয়?
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি যোগ দিয়েছি বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ওয়ালটনের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে। অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল এখানে কাজ করার। এটা এমন একটি কোম্পানি যারা দেশ ও দেশের মানুষকে নিয়ে চিন্তা করে। সবচেয়ে বড় কথা হলো আমাদের দেশের এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটি দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরেও সুনাম পেয়েছে। আগে যেমন মানুষকে অভিনয়ের মাধ্যমে সচেতন করেছি এখন এই চাকরিতে থেকেই মানুষের সেবা করতে চাই।
ভ্যাকসিন নিয়েছেন?
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি শিশু হাসপাতালে গিয়ে করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছি। নিজের সুস্থতার জন্য ও সবাইকে নিরাপদ রাখতে সরকারি নিয়ম মেনে সবাইকে ভ্যাকসিন নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমার কোনরকম অসুবিধা হয়নি। খুব ভালো বোধ করছি। আমার স্ত্রী জিনাত হাকিমও এই টীকা নিয়েছেন।
_দ্য ডেইলি স্টার
এস এস/সিএ