একগুচ্ছ কবিতা ।।। শীতল চট্টোপাধ্যায়
শিল্পী
শিল্পীকে ডেকোনা।
মগ্নতায় সৃষ্টি কথার জন্ম হচ্ছে।
আঁকা হয়ে গেছে ইতিহাস,
রঙের রেখাপথে
জেগে থাকছে চলমান,
শিল্পীর-শিল্প নয়নে
আগামীর আগে-আগামীর স্কেচ-
রেখা হচ্ছে ক্রমশঃ।
প্রতিদিনের সময় পাতা
শিল্পীর আঁকার পাতায়
না ওল্টানোয়।
সেই গত, এই সত্য এবং
খুঁজে চলা যে মুখ, তাকে
শিল্পীই রেখেছে জাগিয়ে।
কবিতা
কবিতার জন্য মেঘ আসে আকাশে,
আসে রোজ রাতের তারারাও।
ছায়ায় কিংবা রাতের অন্ধকারে
কবিতা ওড়ে বাতাস হয়ে,
কবিতা হাঁটে মানুষ হয়ে,
মাটি থেকে আকাশ অবধি
নিঃশব্দ কবিতাপাখির ওড়াউড়ি,
রাত আর দিন রূপে কবিতা পেরোয়
আজ-কাল-পরশুয়।
ঠিকানার খোঁজে
নিজেকে বাঁচিয়ে বাঁচো,
নিজেকে আগলিয়ে রক্ষা করো।
পথ আজ আর দায়িত্ব নেয়না
শেষ অবধি পৌঁছে দেওয়ার।
চেনা আর আশ্বস্তের অবস্থানগুলো
দিনের অন্ধকারে অদৃশ্য হয়েছে ।
নিজেকে বাঁচিয়ে-বাঁচতে
ঠিকানা ফেলে
ঠিকানার খোঁজে চলে গেছে
চেনা মুখ।
কে জানে! অবশিষ্টে কোথাও
বাঁচার ঠিকানা আছে কি না ?
নিয়তি
নিয়তির কাছে
অপ্রতিরোধ্য নয় কিছুই।
আসার জন্য হাঁটা নেই,
বলার জন্য শব্দ নেই,
নেই সমাপ্তির জন্য
তৈরী সংকেত।
ইচ্ছে হলেই মিটিয়ে নেয়
ইচ্ছে তার।
সেই অদৃশ্যের কাছেই
জীবনের মাপ-পরিধি,
শ্বাস বিটের এক-দুই-তিন তরঙ্গ,
বাজাবে আর কতক্ষণ
জানে সে-ই,
থামালে, নিজেই বাজেতে পারেনা আর!
পাথর
পাথর হতে চাই
ভালোবাসার জন্য।
যে ভালোবাসা পাথরের মতোই
নিশ্ছিদ্র, অনমনীয় কঠিন,
অনড় অবস্থানে থাকবে স্থির।
জীবনের সাথে যাপনের
কাল থেকে কালান্তরের
অনন্ত প্রবাহ এক।
গা পোড়া জ্বরে
পাথুরে ভালোবাসার
ঠান্ডা ছোঁয়া কপালে।
দূরের পাহাড় দেখতে-দেখতে বলে-
সমসঙ্গী হতে পেরেছিস,
অপক্ষা কর,
বরফ জমে জেগে থাকবি
ভালোবাসার শুভ্র চূড়োয় ।
জগদ্দল,উত্তর ২৪পরগণা
পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ