বিচিত্র কুমার-এর প্রেমের কবিতাগুচ্ছ
—————————————————————–
তোমার উপমা
একটা রোমান্টিক প্রেমের কবিতা লিখতে চাই
যার প্রতিটি চরণের থাকবে শুধু তোমার উপমা,
একটা প্রেমের গান লিখতে চাই
যার প্রতিটি অন্তরায় থাকবে শুধু তোমার বর্ণনা।
একটা প্রেমের ছোটগল্প লিখতে চাই
যার প্রতিটি শব্দ থাকবে শুধু তোমার
একটা মহাকাব্য লিখতে চাই
যার কাব্যিক চরিত্র থাকবে শুধু তোমার
একটা প্রেমিকার ছবি আঁকতে চাই
যার মুখশ্রীর প্রতিমা হবে শুধু তোমার,
একটা রোমান্টিক উপন্যাস লিখতে চাই
যার প্রধান চরিত্র হবে তোমার আর আমার।
———————————————————————-
একটা রঙিন স্বপ্নের প্রতীক্ষায়
ঘুমন্ত পৃথিবীর বুকে একটি হলুদ পাখি উড়ে গেলে
এই শরতের কাকডাকা দুপুরে,
যেতেযেতে কয়েকটি শব্দ ফেলেদিলো নকশীকাঁথার মাঠে
সেখানে কিছু শব্দ পড়ে থাকল মুক্তা অক্ষরে।
নূপুরের ঝুমুর ঝুমুর শব্দে ঘুম ভাঙ্গল মিটা রৌদ্রের:
আর শুয়ে শুয়ে কচিকাঁচা ঘাসের।
হাঠৎ তারা দেখতে পেলো রঙিন একটা চিঠি
কোথায় থেকে পাঠিয়ে কে পাঠিয়ে রে ? শরৎ
সেখানে লেখা ছিলো কিছু ভালোবাসা কথা
ললনাদের মতো দিয়া দরদ।
কাশফুলেরা প্রতিবেশীর বেশে হাসি ঠাট্টা করে
কবে তুলবে তারে ঘরে।
এদিকে ফুলে ফুলে ঘর সাজিয়ে রাখে শরৎ
একটা রঙিন স্বপ্নের প্রতীক্ষায়,
মেঘের দেশে চিঠি লিখে উওর চেয়ে কে তুমি?
তারপর প্রতীক্ষা আর প্রতীক্ষায়।
————————————————————————-
সেই মেয়েটি
এ কলেজের সেই মেয়েটি
দেখতে লাগে ভালো,
দুষ্টু চোখের তার চাহনী
মনটা নিয়ে গেলো।
ছিপছিপে গা ফর্সা মেয়ে
পাগল করা হাসি,
মেয়ের ঠোঁটে গোলাপ মাখা
আমি যে ভালোবাসি।
মেয়ের সাথে ক্লাস রুমে
প্রথম হলো দেখা,
তার নয়নে নয়ন রেখে
স্বপ্ন হলো আঁকা।
অজানাতেই বাঁধুন দিলে
ভালোবাসার ঘর,
তোমার সাথে আমার দেখা
এই ক্লাসের পর।
স্বপ্ন তুমি স্মৃতি তুমি
তুমি প্রাণের আশা,
তোমার সাথে সখী আমার
এই জনমে দেখা।
———————————————————————–
আধুনিক প্রেমিকা
নীল আকাশে সাদা সুদর্শন মেঘ দেখে
মেঘপরীরা কেউকেউ হাতছানি দেয় নীড়ে,
কাশ তরুণীরা তুলতুলে তুলার শরীর নিয়ে:
কল্পনাতে চুমু দেয় উতলা হাওয়ায় উড়ে।
কথা চলে দিবানিশি প্রেমিকের সাথে সেলফোনে
ফুল আর ভ্রমরের বেশে যেন গুনগুনে।
টানাটানা চোখে তরুণীরা যেন খুব আধুনিক
ডাক দিলেই চলে আসে বুকে,
রঙিন ঘুড়ির মতো উড়তে আকাশের বুকে
আলো আর আঁধারে আনন্দ আর সুখে।
তারপর আবার হারায় যেন অন্যগ্রহে
প্রেম আর ভালোবাসা মোহে।
——————————————————————
তোর প্রেমে পড়েছি
যেদিন থেকে তোর ছবিটি
এঁকেছি আমার হৃদয় পাঁজরে,
সেদিন থেকেই হয়েছি আমি
রোমান্টিক হিরো রে।
বারবার দেখি যে মুখ
আয়নার দিকে চেয়ে,
কদিন আগে ছিলি তুই
অচিনা এক মেয়ে।
এখন কেন আর পারি না
তোর দিকে না চেয়ে,
বুকে ভিতর আগুন জ্বলে
যেন চিনচিনিয়ে।
ঘুম আসে না চোখের কোণে
দিন ফুরিয়ে যায়,
নির্ঘুম রাতে তোকে নিয়ে
কত না স্বপ্ন দেখে কাটায়।
দিবানিশি ছটফট করি
তোকে দেখার জন্য,
তোর ভালোবাসা পেলেই হবে
তবে আমার জীবন ধন্য।
—————————————————————
কুমারী মেয়ে
ওগো কুমারী মেয়ে,
প্রথম দেখাতেই তোমার প্রেমে পড়েছিলাম
ঠিক যেন রমিও মতন
তোমার চোখের না বলা ভাষা বুঝেছিলাম।
তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে কপালে কালো টিপ পড়ে
আলতা রাঙা দু’পায়ে সোনার নূপুর পড়ে,
রিমঝিম বৃষ্টিতে খোঁপায় বকুল ফুল বেঁধে
কিম্বা লাল পারা হলুদ বর্ণের শাড়ি পড়ে।
তোমার মায়াবী হাসি আমার হৃদয়ে বাসা বেঁধেছিলো
তোমার সরলতা যেন আমাকে মুগ্ধ করেছিল,
তোমার চঞ্চলতা আমার দুরন্তর মনকে কেড়ে নিয়েছিল
তোমার দুঃখ যেন আমাকে ভাবিয়ে তুলেছিল।
তোমার প্রতি আমার একটা অদ্ভুত টান রয়েছে
যেমন নদীর প্রতি সাগরের টান,
কিম্বা বৃষ্টির প্রতি যেমন মেঘের টান
অথবা দিনের প্রতি যেমন রাতের টান।
ঠিক তেমনি একটা টান।
——————————————————————————
শরৎ রানী
শরৎ রানী রাঙা সাজে
ওগো কোথায় তুমি যাও?
ও রূপসী কোথায় তোমার গাঁও
একবার ফিরে চাও?
ওই দেখা যায় নয়া গাঁ
চিকন পথটা আঁকা বাঁকা,
ঐ গ্রামেতেই যাচ্ছি আমি
তবে আমার সাথে কী কথা?
স্বপ্নে তোমায় রোজ দেখি
আমি ভীষণ একা,
পাগলা হাওয়ার উদাস সুরে
তোমার সাথে দেখা।
ও ছেলে তুমি উদাস কেন
কই হয়েছে দেরি,
সারা গাঁয়ের চিঠি এসেছে
কাকে যে বন্ধু করি।
বাই আবার হবে কথা
এখন তবে যাই,
ফিরে ফিরে দু’জন দেখি
মনে মনে তোমাকেই চাই।
———————————————————————————————