আমাকে বদলে দাও |||| পুলক বড়ুয়া
আমাকে বদলে দাও |||| পুলক বড়ুয়া
একটি চেয়ার
তাকে ঘিরে শুধু জমে ওঠে
অনেক চাহিদা আর হিসেবনিকেশ
চেয়ারের কোনো চাওয়া নেই
চেয়ারের কোনো পাওয়া নেই
তার কোনো কামনা বাসনা
ওজর আপত্তি নাই
শূন্য দৃষ্টি
অন্ধের মতোন
কে এল কে গেল
সেদিকে খেয়াল নাই
বীরভোগ্যা বসুন্ধরার মতোন বুঝি
নিজেকে দিয়েছে সঁপে
যে জানে সে জানে
যে পারে সে পারে
আরাম আয়েশে তাকে দখল করতে
একটু কায়দা করে
সূক্ষ্ম কারচুপি হোক
যে যেভাবে পারে, হতে পারে, চর দখলের মতো
দরকার হলে বৈধ-অবৈধ যেকোনো উপায়েই
হোক, তবু, বিনামূল্যে তো দূরের কথা
এমনি তে তো দূরের কথা
কেউ কেন ছেড়ে দিতে রাজি হবে
কেউ কেন ছাড় দিতে রাজি হবে
চাইবে সহজে
সবাই তো আঁকড়ে থাকতে মশগুল
যারা বসে আছে, চেয়ে আছে—
তাদের খেয়াল একটাই—
ছাড়বে না এ চেয়ার আর
আরাম কেদারা হলে
তো কথাই নেই; ওহ্, তোফা !
সিংহাসন-মসনদ-কুরসি মানেই
কুর্নিশ, সেলাম
আদিগন্ত সুখ
একদম অসামান্য না-হোক একটা
সামান্য আরশ চাই, অমূল্য আসন—
অসাধারন না-হোক চলবে, না-হয়
কতিপয় তাহাদের কোনো মানে নাই
সাময়িক কেদারা ব্যতীত মুক্তি নাই
স্বাধীনতা নাই
মনে বিন্দুমাত্র স্বস্তি নাই
অস্থির-উদ্বিগ্ন
শুধুমাত্র চেয়ারের জন্য
চেয়ার তো—একটু বসতে না-পারলে—শান্তি নাই
চেয়ার তো—একটু বসতে পারলে যে ভালো লাগে
খাপে খাপ মিলে গেলে তো কথাই নেই
দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যথা হয়ে এল
কোন জাদুমন্ত্রবলে
মনের মতোন একটি চেয়ার পাব, বলো, কোন
ঐশ্বরিক ক্ষমতা আমাকে
এনে দেবে একটি চেয়ার
একজোড়া নিতম্ব একটু আশ্রয়-আশ্রম খুঁজে
পাবে : কার ভরসায়, কোন ভরসায়
কোথায় ঘুরব গচ্ছিত রাখব তাকে
আমার মাংসল নিতম্বের নিচে শুকনো কাঠের
কেদারা চালান করে দাও—দয়া করে
আমি ঠের পাব
আরামদায়ক কিছু না-হলেও চলবে
আমার যুগল নিতম্বকে
শুষ্কং কাষ্ঠং এই কেদারায়
সর্বোচ্চ উজাড় করে
তাদের বিছিয়ে দেব
না-হয় একটু পেতে দেব
নিজেকে বিকিয়ে দেব
একটি ব্যঞ্জন বর্ণের দ-য়ের মতোন
দম্ভের রকমফেরের কাছে,
—প্রভু, মালিক, হুজুর,
আমাকে বদলে দাও
আমাকে মানুষ করে দাও
আমার সকল অহংকার
অলংকার করে দাও
এইবার !