নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্ট বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৬ এর ২০১৭ সালে পরপর দুই বছর ৭৫০ ডলার করে আয়কর দিয়েছেন।
২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং তার পরের বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে একবছর দায়িত্ব পালনের সময় এই পরিমাণ কর দিয়েছেন তিনি।
প্রতিবেদনে যা বলা হচ্ছে
নিউ ইয়র্ক টাইমস বলছে, তারা ১৯৯০-এর দশক থেকে থেকে মি. ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ও তার কোম্পানির গত কয়েক দশকের আয়কর বিষয়ক নথিপত্র জোগাড় করেছে। তারা লিখছে, ১৫ বছরের মধ্যে ১০ বছরই তিনি কোন আয়কর দেননি।
নথিপত্রে ‘ধারাবাহিক লোকসান’ উল্লেখ করা রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তিনি আয়ের চেয়ে অনেক বেশি লোকসান দেখিয়েছেন’।
যদিও মি. ট্রাম্প এটিকে ‘ফেক নিউজ’ বা ভুয়া খবর বলে আখ্যা দিয়েছেন।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, “আমি আসলে আয়কর দিয়েছি। আমার ট্যাক্স রিটার্ন শেষ হলেই আপনারা তা দেখতে পাবেন। আমার আয়করের হিসাব-নিকাশ চলছে।”
তিনি আরও বলেছেন, “আইআরএস (ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিস) আমাকে একেবারেই ভাল চোখে দেখে না। ওরা আমার সাথে খুব খারাপ আচরণ করে।”
নিজের ব্যবসা ও সম্পদ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে অস্বীকার করায় ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগে মামলার মুখে পড়েছেন।
১৯৭০ সালের পর থেকে তিনিই প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি নিজের আয়কর বিষয়ক তথ্য প্রকাশ করেননি। যদিও যুক্তরাষ্ট্রে এ বিষয়ে কোন আইন নেই তবে প্রেসিডেন্ট ও নির্বাচনে প্রার্থীরা সেটি করে আসছেন।
এমন সময় এই তথ্য প্রকাশিত হল যার মাত্র কয়েকদিন পরই মি. ট্রাম্প প্রথমবার ৩রা নভেম্বরের নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ জো বাইডেনের সাথে বিতর্কে মুখোমুখি হবেন।
প্রতিবেদনে আরো যা বলা হয়েছে
২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার আগে রাজনীতি নয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিচয় ছিল যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রভাবশালী তারকা ব্যবসায়ী হিসেবে। তিনি একজন ‘রিয়েল এস্টেট টাইকুন’ হিসেবে পরিচিত। বিলাসবহুল গল্ফ কোর্স ও হোটেলের মালিক তিনি।
মি. ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে তিনশ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে যে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পাওয়ার জন্য বিদেশি কর্মকর্তা সহ অনেকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অর্থ দিয়েছেন।
২০১৮ সালে মি. ট্রাম্প যে তথ্য প্রকাশ করেছিলেন তাতে দেখা গেছে তিনি ৪৩৪ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমস দাবি করছে, তার আয়কর বিষয়ক নথিতে দেখানো হয়েছে তিনি ৪৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি লোকসান করেছেন।
হোয়াইট হাউজে প্রথম দুই বছর তিনি ৭৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছেন যার উৎস যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের কোন দেশ। এসব দেশের মধ্যে ভারত, তুরস্ক ও ফিলিপাইনের নাম উঠে এসেছে।
এমনকি ‘দি অ্যাপ্রেন্টিস’ নামে একটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপনার জন্য তিনি ৪২৭ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন।
বিভিন্ন ব্রান্ড তার নাম ব্যবহার করবে সেজন্যেও তিনি ১৭৬ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন।
এসব আয়ে তিনি কর প্রদান করেননি বলে নিউ ইয়র্ক টাইমস দাবি করছে।
মি. ট্রাম্পের প্রতিপক্ষরা তার কড়া সমালোচনা করছেন।
ওয়াশিংটনে সবচেয়ে ক্ষমতাধর ডেমোক্র্যাট হিসেবে পরিচিত, হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, “কর ফাঁকি দেয়ার নানা নিয়মাবলী নিয়ে মি. ট্রাম্প বেশ ভালই খেলেছেন। কর ফাঁকি দিতে তিনি অভিনব পন্থা অবলম্বন করেছেন।”
সূত্রঃ বিবিসি বাংলা
বাঅ/এমএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন