ফোনে হ্যালো নয়, বলুন ‘জয় বাংলা’: মমতা
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসন্ন বিধান সভা নির্বাচনে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে তার নির্বাচনে হাতিয়ারের মতো ব্যবহার করছেন। এবারের প্রতিটি নির্বাচনী সভায় মুখ্যমন্ত্রীর মুখে বারবার শোনা যাচ্ছে এই স্লোগান।
হুগলির জনসভায় বুধবার বারবার মমতার মুখে উঠে এল এই স্লোগান। জনসভায় তিনি বললেন, আপনারা ফোন করার সময় হ্যালো বলবেন না৷ বলুন ‘জয় বাংলা’। আবার ফোনে কথা শেষ হওয়ার পর বলুন ‘জয় বাংলা’। খবর ডিডব্লিউ বাংলা।
খবরে বলা হয়, ‘জয় বাংলা’কে তৃণমূলের প্রধান সম্ভাষণ, সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্লোগানে পরিণত করেছেন মমতা৷ ফলে ২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গের ভোটে ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রধান ধ্বনি৷ ‘খেলা হবে’ আগেই প্রায় থিম সং করে ফেলেছে তৃণমূল৷ এবার তারা ‘জয় বাংলা’কেও আঁকড়ে ধরেছে বিজেপি-র মোকাবিলায়৷
যে ধ্বনি ছিল বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের প্রেরণা, সেই ‘জয় বাংলা’ এখন পশ্চিমবঙ্গের মহারণে বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম রাজনৈতিক হাতিয়ার। কিছুদিন ধরে মমতা এ বিধানসভা নির্বাচনকে বাঙালি বনাম অবাঙালি পরিণত করতে চাইছেন। অর্থাৎ, পশ্চিমবঙ্গের নেত্রী মমতা বনাম বাইরের রাজ্য থেকে আসা বিজেপি নেতাদের লড়াই। পুরো পশ্চিমবঙ্গকে ৭ ভাগে ভাগ করে প্রতিটি ভাগের দায়িত্ব একজন অবাঙালি নেতার হাতে তুলে দিয়েছেন মোদী-শাহ। এরপর তৃণমূল বাঙালি বনাম অবাঙালি প্রচারে আরো সোচ্চার হয়েছে।
তৃণমূল নেতারা বিজেপির দিকে প্রশ্ন তুলে বলছেন, দিলীপ ঘোষ, লকেট চট্টোপাধ্যায় বা কোনো বাঙালি নেতাকে কি বাইরের কোনো রাজ্যে দায়িত্ব দেন বিজেপি-র শীর্ষ নেতারা?
এই পরিপ্রেক্ষিতে বিধানসভা ভোটের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই পরিণত হয়েছে ‘জয় বাংলা’ বনাম ‘জয় শ্রীরামে’৷
জয় বাংলা কীভাবে এলো?
উইকিপিডিয়া বলছে, ‘জয় বাংলা’র কথা প্রথম পাওয়া যায় কাজী নজরুলের একটি কবিতায়। আর এটি স্লোগানে পরিণত হয় ১৯৬৯ সালে। শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে তার ভাষণ শেষ করেন ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি দিয়ে। তারপর পুরো মুক্তিযুদ্ধ জুড়ে এই ধ্বনি ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা।
পরে অবশ্য এ স্লোগান আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগানে পরিণত হয়। ভারতেও স্বাধীনতা আন্দোলনে অন্যতম ধ্বনি ছিল ‘বন্দে মাতরম’৷ পরে তা কংগ্রেসের প্রধান স্লোগানে পরিণত হয়।