করোনা ভাইরাস
উহানে ঘরে বন্দী বাংলাদেশি পরিবারের দেশে ফেরার আকুতি
উহানের চায়না ইউনিভার্সিটি অব জিও সায়েন্সেসে পিএইচডি করছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইশরাত জাহান লিজা। মঙ্গলবার দুপুরে তার সঙ্গে কথা হয় সমকালের। তিনি বলেন, সাত দিন ধরে ঘরে বন্দী, বাইরের আলো বাতাস নিতে পারছি না। উহানের রাস্তাঘাট একেবারে জনশূন্য।
ইশরাত জাহান লিজা বলেন, যে কোনো সময় যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে। এই আতঙ্কে দিন কাটছে আমাদের। কেউ আক্রান্ত হলে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিচ্ছে চীন সরকার। একটি হট লাইনও চালু করেছে দেশটির সরকার।
স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে উহানে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন বলে জানান লিজা। তিনি বলেন, ‘আমার ছোট বাচ্চা ঘরে বন্দী থাকায় তার মানসিক সমস্যা হচ্ছে। শুনেছি বাংলাদেশ সরকার আমাদের ফেরত নেওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু কবে নেবে তা জানি না। কিন্তু আমরা দেশে ফিরতে চাই।’
লিজা জানান, উহানে তিন শতাধিক বাংলাদেশি রয়েছেন। ২৩ জানুয়ারির পর সেখানকার কোনো বাংলাদেশি দেশে ফেরেন নি বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশে যেন এই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে এজন্য বিমানবন্দরে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন লিজা।
শুধু লিজা নন উহানে যেসব বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন তাদের অধিকাংশই দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশে ফিরে আসার আকুতি জানিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাহায্য চেয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, উহান থেকে বাস, ট্রেন ও বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ ঘরে থাকছেন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় খাবারের সংকটেরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উহান ছাড়াও চীনের হুবেই প্রদেশের ১৮টি শহরে সড়ক, পানি ও আকাশপথে সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা হয়েছে। এই সংক্রমণ প্রতিরোধে যে সামরিক মেডিকেল কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তারা এর আগে সার্স ও ইবোলা প্রতিরোধের কাজে অভিজ্ঞ। সংক্রমণ প্রতিরোধে ক্রমেই কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে চীন।
চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সোমবার মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। গার্ডিয়ান ও বিবিসির খবর অনুযায়ী সোমবার রাত পর্যন্ত ৪ হাজার ৫১৫ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে দেশটিতে।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাসটি ইতোমধ্যে সে দেশের রাজধানী বেইজিংসহ ২৯টি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, নেপাল, ফ্রান্স, সৌদি আরব, কানাডাসহ অন্তত ১৩টি দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে।