ফিচার্ড লেখালেখি

নাইন ইলেভেন–মানবিকতার জয় হোক ||| প্রকৌশলী আবদুল্লা রফিক

নাইন ইলেভেনমানবিকতার জয় হোক ||| প্রকৌশলী আবদুল্লা রফিক

২০০১ সালের সেপ্টেম্বরের ১১ তারিখে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এর নেতৃত্বে আত্মঘাতী কয়েকজন চারটি যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে নিয়ে নিজেরা বিমানগুলো চালিয়ে সরাসরি টুইন টাওয়ার বিল্ডিং এর ভিতর ঢুকিয়ে দেয়, সারা পৃথিবী হতবাক হয়ে দেখতে থাকে কিভাবে বিমানগুলো উঁচু বিল্ডিংগুলোর ভীতর আছড়ে পড়ছে ! পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরের প্রাণ কেন্দ্র ম্যানহাটন এ অবস্থিত এই “টুইন টাওয়ার” এ এই অকল্পনীয় ধ্বংসযজ্ঞ মার্কিন সরকারের ভীত যে নড়ে দিয়েছিলো একথা বলার অপেক্ষা রাখে না l ধারণা করা হয় আল-কায়দা নেতা “ওসামা বিন লাদেন” পরিকল্পনাসহ সবকিছুর মূলে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে l তৎকালীন সময়ে আফগানিস্তানের ভূখণ্ড আল কায়দার ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছিলো কারণ ক্ষমতাসীন তালেবান সরকার একই ভাব ধারায় বিশ্বাসী ছিলো l

আমি এবং আমার বৌ ২০০১ সালের অগাস্ট মাসের ২০ তারিখ থেকে ২৯ তারিখ পর্যন্ত কানাডা থেকে যেয়ে নিউইয়র্ক শহর ভিজিট করছিলাম আর আমাদের মেয়ে শারলিন এর বয়স তখন মাত্র চার মাস l আমরা খুব এনজয় করেছি, আমাদের সময়ের একটা বড় অংশ সেই “টুইন টাওয়ার”অতিবাহিত করেছি কারণ শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সরাসরি ট্রেনে এসে এই টাওয়ার এই নিচে অবস্থিত স্টেশন এ নামতাম l কিন্তূ এখনো গা শিউরে উঠে যদি ঘটনাটি আমরা থাকাকালীন ঘটতো !

সন্ত্রাস সবসময় মানবিক বিপর্যয় টেনে আনে, বহু নির্দোষ, নিরাপরাধ সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে শুধু মাত্র ভুল সময়ে ভুল জায়গায় থাকার জন্য l

গোয়েন্দাদের রিপোর্টার বরাত দিয়ে জানা যায়, ওই বৈমানিকরা নাকি আমেরিকার একটি বিমান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শিক্ষা নিয়ে পাইলট লাইসেন্স গ্রহণ করেছে, এবং গোয়েন্দারা তৎকালীন মার্কিন প্রশাসনকে সতর্ক করেছিলো এই ভাবে – মধ্যেপ্রাচ্যের সৌদিসহ বিভিম্ন দেশ থেকে ২৫/২৬ তরুণ বিমান চালনায় প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, কিন্তূ আমেরিকায় এটা খুবই সাধারণ ঘটনা – সারা পৃথিবী থেকেই মানুষ সেখানে পাড়ি জমায় বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য, আর তাই প্রশাসন বিষয়টিকে অতটা গুরুত্ব সহকারে দেখে নাই l

এর পরের ঘটনা আমরা সবাই জানি – মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী একত্রিত হয়ে তালেবানদের ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে, উদ্দেশ্য একটাই আল কায়দা সহ পৃথিবীর সব জঙ্গী সংগঠনের মূল উৎপাটন করা l এই বিশ বছরে সেটা কতোখানি সফলতার মুখ দেখেছে সেটা আপেক্ষিক বিতর্কের বিষয়, তবে আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস অনেকখানি সফলতা এসেছে কারণ পুরোপুরী কখনোই সম্ভব নয় l

আত্মহননের মাধ্যমে সন্ত্রাস করে মানবিক বিপর্যয় ঘটানো কোনো ধর্মে আছে বলে আমার জানা নেই, সাধারণ মানুষ সবসময়ই শান্তি চায়, অন্যায়ের প্রতিরোধ করে তবে অনেক সময় নেতৃত্বের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ে ভুল মতবাদের পক্ষে চলে যায় !!

কাজেই নেতৃত্বকে সবসময় ব্যক্তিগত ইচ্ছেকে দূরে রেখে সাধারণ মানুষের মঙ্গলের জন্য প্রয়োজনীয় কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হবে l মানবিকতাকে সবসময় সামনে রাখতে হবে, ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা মানুষকে দিতে হবে, নিজের সুবিধার্তে ধর্মকে ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে হবে তাইলেই পৃথিবী মঙ্গলময় হবে l

জয় হোক মানবিকতার, জয় হোক মানুষের —

লেখক: প্রকৌশলী, কলামিস্ট ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী।


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন