বিশ্ব

শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঝুঁকির সম্মুখীন ব্রিটেন : বরিস

শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঝুঁকির সম্মুখীন ব্রিটেনঃ বরিস জনসন
বরিস জনসন

তিনি বলেন, লকডাউন চলাকালে একবার ব্যায়াম, জরুরি পণ্য সামগ্রী ও ওষুধ কেনা ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না। একসঙ্গে দু’জনের বেশি জমায়েত হওয়া যাবে না। আইন ভঙ্গকারীদের ৩০ পাউন্ড করে জরিমানা করা হবে। কেউ নির্দেশ অমান্য করলে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পারব।

সোমবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টায় লন্ডনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঝুঁকির সম্মুখীন ব্রিটেন। এই তিন সপ্তাহে নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট ছাড়া সবকিছুই বন্ধ থাকবে। আপনারা অবশ্যই বাসায় অবস্থান করবেন। লাইব্রেরি, খেলার স্থান, ব্যায়ামাগার এমনকি উপাসনালয়ও বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেন তিনি। পার্ক খোলা থাকলেও জনসমাগম সীমিত থাকবে।

সামাজিক অনুষ্ঠান, বিয়ে ও ধর্মীয় সমাবেশ বন্ধের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘তিন সপ্তাহ পর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।’

বরিস জনসন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘করোনাভাইরাস মোকাবেলায় শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঝুঁকির সম্মুখীন ব্রিটেন। এই ভাইরাসের বিস্তার রুখতে না পারলে এক ভয়ানক পরিস্থিতির মুখোমুখি হব আমরা। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে এই ভাইরাসের বিস্তৃতি এখনই ঠেকাতে হবে। তা না হলে এমন একটি সময় আসবে যখন বিশ্বের কোনো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই এই ভাইরাসের মোকাবেলা করতে পারবে না। কারণ, মৃত্যুর হার তখন এমন পর্যায়ে পৌঁছাবে যে চিকিৎসার জন্য ডাক্তার,  নার্স এমনকি ভেনটিলেট, ইনটেনসিভ বেড কিছুই পাওয়া যাবে না।’

ব্রিটেনে সোমবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৬৫০ জন, যাদের মধ্যে মারা গেছেন ৩৩৫ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১৩৫ জন।

 

ব্রিটিশ রাজপরিবারের কর্মীর শরীরে করোনা শনাক্ত

 

বাকিংহাম প্যালেস

যদিও তার কোনও অসুস্থতা নেই, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন। এমনকি তিনি নিজেই স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরলস পরিশ্রমের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাজপরিবারের দেখভাল করেন, এমন এক সদস্য করোনাভাইরাস পরীক্ষা করিয়েছিলেন। তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপরই উইন্ডসর ক্যাসল থেকে তাকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার তোড়জোড় চলছে।

ব্রিটেনের পত্রিকাগুলোর খবর অনুযায়ী, এই কর্মীর সংস্পর্শে আসা প্রাসাদের সমস্ত কর্মীকেই আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। গোটা প্রাসাদে সবমিলিয়ে মোট ৫০০ জন কর্মী রয়েছেন। সকলকে আইসোলেশনে পাঠানোর খবর প্রকাশিত হতেই আতঙ্ক আরও ছড়িয়ে পড়ে।যদিও বাকিংহাম প্যালেস থেকে জানানো হয়েছে, আতঙ্কের কিছু নেই। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক মুখপাত্রের কথায়, “আমরা কোনও একজন কর্মীর অসুস্থতার ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। সতর্কতার জন্য আমরা সব কর্মীকেই যথাযথ প্রযত্নের মধ্যে রাখতে চাই।”

গত ১৫ মার্চ, ব্রিটেনে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রানি এলিজাবেথকে বাকিংহাম প্যালেস থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় উইন্ডসর ক্যাসলে। তবে তার পিছনে গ্রীষ্মের ছুটি কাটানোর তত্ব দাঁড় করানো হয়েছিল রাজপরিবারের পক্ষ থেকে। বলা হয়েছিল, সদ্য রাজপরিবার ত্যাগ করা হ্যারি-মেগান এবং তাদের পুত্র আর্চির সঙ্গে সময় কাটাবেন রানি এলিজাবেথ। কিন্তু সেই ছুটি কাটানোর আবহের মাঝেই করোনা সংক্রমণ হু হু করে বেড়ে যায় ব্রিটেনে। ফলে ছুটির আনন্দ মাটি তো হয়েছেই। তার উপর উইন্ডসর ক্যাসলেরই কর্মী করোনা আক্রান্ত। রানিকে নিয়ে তাই আর ঝুঁকি নেয়নি কেউ।

ব্রিটিশ রাজপরিবারের তরফে বলা হয়েছে, “এই আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে এখনও অনেকের মধ্যে সচেতনতা আসেনি। সেটাই উদ্বেগের। তবে রাজপরিবারের সদস্যরা নিজেদের কর্তব্য সম্পর্কে খুবই সচেতন। তারা নিজেদের এবং দেশবাসীর সুরক্ষার জন্য যা যা করার, সবই করবেন।”

এর মধ্যে আবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে রানি এলিজাবেথের বৈঠকের কথা ছিল। তা বাতিল হয়েছে।

 

করোনার প্রভাব : পেছাল টোকিও অলিম্পিক

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মরণব্যাধি করোনাভাইরাসের কারণে থমকে পড়েছে বিশ্ব। জান-মালের পাশাপাশি, ক্রীড়াঙ্গন, অর্থনীতিদর ওপরেও পড়েছে এর হানা। করোনাভাইরাসের কারণে এবার পেছালো চলতি বছরে অনুষ্ঠেয় টোকিও অলিম্পিক।

আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

আগামী ২৪ জুলাই শুরু হওয়ার কথা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়াযজ্ঞের এবারের আসর। তবে বিশ্বজুড়ে কভিড-১৯ রোগের বিস্তারে গত কয়েক দিনে প্রতিযোগিতাটি স্থগিতের চাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে।গেমসটি এবারের গ্রীষ্মে হলে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া তাদের অ্যাথলেটদের পাঠাবে না বলে জানিয়ে দেয়।

গতকাল সোমবার একই ঘোষণা আসে ব্রিটিশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন থেকেও।তবে গত রোববার অলিম্পিক কমিটি জানায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে তারা চার সপ্তাহ অপেক্ষা করতে চায়। কিন্তু দুদিনেই পাল্টে গেল প্রেক্ষপট। অন্তত এক বছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হলো অলিম্পিকের এবারের আসর।প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের আঘাতে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পিছিয়ে গেছে আগামী জুন-জুলাইয়ে হওয়ার কথা থাকা ফুটবলের কোপা আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপও।

কাঅ/এসএস



 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − 11 =