অট্টালিকা ছেড়ে এখন ভাড়াবাড়িতে ‘কাঁচা বাদামের’ সেই ভুবন বাদ্যকর!
’কাঁচা বাদাম’ গান দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই গোটা বিশ্বের কাছে পরিচিত হয়েছিলেন ভুবন বাদ্যকর। ‘কাঁচা বাদাম’ গান গেয়েই সকলের মন জয় করে নিয়েছিলেন বীরভূমের এই বাদামকাকু।
একটা সময় গ্রামে গ্রামে ঘুরে কাঁচা বাদাম বিক্রি করতেন তিনি। আর কাঁচা বাদাম বিক্রি করে যা উপার্জন হত সেই দিয়েই চলত তার সংসার। তবে তার এই গান তাকে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল। এনে দিয়েছিল অর্থ ও সুনাম।
বেশ কিছু সময় আগে তার কাছ থেকে গোপাল নামের এক ব্যক্তি ৩ লাখ টাকায় তার গানের সত্ত্ব কিনে নেন। এখন তার গান আর তার নেই। এখন নিজের গান নিজে গেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়লেও কপিরাইট খেয়ে যান তিনি। সেই নিয়েও এখন দুঃখের শেষ নেই তার।
গান গেয়ে ভালোই অর্থ উপার্জন করেছিলেন তিনি। ধীরে ধীরে অবস্থা ফিরছিল তার। কাঁচা বাড়ি থেকে বেরিয়ে বানিয়ে ছিলেন পাকা বাড়িও। সেখানেই নিজের পরিবার নিয়ে থাকতে শুরু করেছিলেন তিনি। অবশ্য তার ঝলক একাধিকবার মিলেছে মিডিয়াতেই। এখন নিজের কষ্টের উপার্জনের টাকায় বানানো পাকা বাড়িও ছাড়তে হয়েছে তাকে। নিজের পরিবার নিয়ে উঠেছেন দুবরাজপুরের এক ভাড়া বাড়িতে। মাসে মাসে ২৭০০ টাকা গুনতে হয় ভাড়ায়।
কেন নিজের বানানো রাজপ্রাসাদ ছাড়লেন ভুবন বাদ্যকর? গায়ক জানান, খ্যাতির বিড়ম্বনা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন তিনি। তার কথায়, ‘আমার কাছে অনেক টাকা আছে ভেবে বিভিন্ন গ্রাম থেকে লোক আসছে টাকা চাইতে। কেউ মেলার নামে টাকা চাইছে, কেউ ছেলের শরীর খারাপ বলে, কারোর মেয়ের বিয়ের টাকা চাই। তাও ১০০-২০০ নয়, হাজার হাজার টাকা।’
ভোগান্তির শেষ নয় এখানেই। বিখ্যাত হওয়ার পর আইফোন কিনেছিলেন ভুবন বাবু। সেটিও টাকা চাইতে এসে ছিনতাই করে নিয়ে গিয়েছিল এক যুবক। পরে ৩০০০ টাকা নিয়ে ফিরিয়ে দিয়ে যায় ফোনটি।
তিনি জানান, ছেলের রোজগারেই এখন চলছে সংসার। তার উপার্জনও খুব একটা বেশি নয়। এত অল্প উপার্জনে কিভাবে একটা গোটা সংসার তিনি চালাবেন সেই ভেবেই কূল কিনারা পাচ্ছেন না তিনি। পাশাপাশি এখন সেভাবে আর গান গাওয়ার অনুষ্ঠানেও ডাকা হয় না তাকে। গানের সত্ত্ব বেঁচে দেওয়ার পর থেকে তার উপার্জনও প্রায় পুরোপুরিই বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ভবিষ্যতের চিন্তায় চিন্তিত বাদামকাকু।
-সূত্র: যুগান্তর