প্রতিদিন ব্যায়াম করা কেন গুরুত্বপূর্ণ
অধ্যাপক ডা. আলতাফ সরকার।। শরীর সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই জরুরি। অল্প বয়সী থেকে বয়স্ক– যে কেউ যদি প্রতিদিন ব্যায়াম করেন, তাহলে অবশ্যই উপকৃত হবেন। নিয়মিত ব্যায়াম শুধু শারীরিক নয়, মানসিক সুস্থতা এনে দেয়। এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যাদের বয়স ৬০-এর ওপরে, তারা যদি সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাহলে বছরে যে টাকা তিনি চিকিৎসার জন্য ব্যয় করেন, তা অনেকাংশে কমে আসে।
নিয়মিত ব্যায়ামের একাধিক উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো–
১. নিয়মিত ব্যায়াম হৃৎপিণ্ডের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে ভুগছেন, তারা যদি প্রতিদিন ব্যায়াম করেন, তাহলে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি তিন ভাগের এক ভাগ কমে যায়।
২. নিয়মিত ব্যায়াম করলে মাংসপেশি, হাড় এবং অস্থিসন্ধি শক্ত হয়। মানবদেহে হাড়ের ডেনসিটি বেড়ে যায়; যা অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও অস্টিওপোরোসিসসহ অস্থিসন্ধির বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়।
৩. নিয়মিত ব্যায়াম করলে অনেক ক্যালরি ক্ষয় হয়, যা স্বাস্থ্যসম্মত ওজন ধরে রাখে। ওজন ঠিক থাকলে অনেক ধরনের শারীরিক সমস্যা দূর করে। নিয়মিত ব্যায়াম করার পাশাপাশি আমাদের প্রতিদিনের খাওয়ার প্রতি যত্নশীল হতে হবে।
৪. নিয়মিত ব্যায়াম ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এর মধ্যে স্তন ক্যান্সার, মলাশয় ক্যান্সার অন্যতম।
৫. গোটা বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্যায়াম দুই ধরনের ডায়াবেটিক বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমায়। আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হন, তাহলে একটি ডায়েরি মেইনটেইন করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। প্রতিদিন আপনার সুগার লেভেল লিখে রাখুন। এভাবে নিয়মিত ব্যায়াম করলে দেখতে পাবেন আপনার রক্তের গ্লুকোজ লেভেলে কতটা পরিবর্তন এসেছে।
৬. প্রতিদিন ব্যায়াম করলে আমাদের শরীরে রক্ত চলাচল বাড়ে; যার ফলে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ে। এর ফলে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ রোগ প্রতিরোধ করে।
৭. নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের চর্বি কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণে সাহায্য করে।
৮. নিয়মিত ব্যায়াম করলে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে, আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং হতাশা কমিয়ে দেয়। আমাদের নেগেটিভ চিন্তা-ভাবনা দূর করে। এ ছাড়া মাননিক চাপ, দুশ্চিন্তা দূর করে আমাদের মনকে প্রফুল্ল করে তোলে। সারাদিন অনেক কাজ করার পরও শরীর ও মন সজীব থাকে।
লেখক : মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিজঅর্ডারস বিশেষজ্ঞ।
এসএস/সিএ