দেশের সংবাদ ফিচার্ড

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ পরিণত করতে সংবাদ সম্মেলন

সিলটী আওয়াজ ও ক্যাম্পেইন কমিটি ইউকে উদ্যোগে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ পরিণত করতে সংবাদ সম্মেলন

শহিদুল ইসলাম, সিলেট থেকে।। ‘‘সিলেটী প্রবাসীরা বাঁচলে সিলেট বাঁচবে, প্রবাসীরা দুর্ভোগে পড়লে, সিলেটবাসীরা দুর্ভোগে পড়ব’’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ২৬ অক্টোবর ২০২৪, শনিবার সিলেট নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে ৯ দফা দাবীতে ‘‘সিলটী আওয়াজ ও ক্যাম্পেইন কমিটি ইউকে ফর ফুল্লি ফাঙ্কশনাল ওসমানী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট’’ এর যৌথ উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেটী আওয়াজ এর আহবায়ক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মালেক খান এসময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট আফতাব চৌধুরী, মুফতি আতাউর রহমান চৌধুরী, সিলটী আওয়াজ কুয়েত কমিটির আহবায়ক হাজী শওকত আলী, ক্যাম্পেইন কমিটি ইউকে’র সদস্য সচিব আলহাজ্ব এম এ রব, সিলটী আওয়াজ সৌদি আরব কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ আলহাজ্ব কাপ্তান হোসেন, সিলটী আওয়াজ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব এম এ মতিন, ফ্রান্স বিএনপি নেতা হাজী হাবিব, সিলটী আওয়াজ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সচিব শহিদুল ইসলাম, সাংবাদিক প্রিন্স বাহার চৌধুরী, সিলটী আওয়াজ মৌলভীবাজর শাখার সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, দপ্তর সচিব মোশারফ হোসেন খান প্রমূখ।

দাবীতে সমূহ: ১) ওসমানী বিমানবন্দরকে আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করতেই হবে।২) বাংলাদেশের জাতীয় এয়ারলাইন বিমান বাংলাদেশের পাশাপাশি বৃটিশ, তুরস্ক, কাতার, আমিরাত, দুবাই, ওমান, প্যান আম, সৌদিআরব সহ অন্যান্য দেশের ফ্লাইট চালু করতেই হবে।৩) ওসমানী বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতেই হবে। ৪) বাংলাদেশ বিমানের ভাড়া হ্রাস করতে হবে এবং ঢাকা ও সিলেটের মধ্যে বিমানের ভাড়ার অস্বাভাবিক পার্থক্য দূর করতেই হবে। ৫) ওসমানী ও শাহজালাল বিমানবন্দরে কাষ্টমস ও ইমিগ্রেশন সেকশনে প্রবাসী যাত্রীদের অহেতুক হয়রানী বন্ধ করতেই হবে। ৬) ওসমানী বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গরুপে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করতেই হবে। ৭) সিলেটের গ্যাস, বাসা-বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে সংযোগ অনুমতি প্রদান করতেই হবে। ৮) ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো সিলেট টু আখাউড়া নতুন ডাবল রেললাইন নির্মাণ করতেই হবে। ৯) সিলেট টু ঢাকা মহাসড়কের ৬ লাইনের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতেই হবে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মালেক খান বলেন, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নামে মাত্র আন্তর্জাতিক হলেও কাজে এখনো আন্তর্জাতিক হয়নি। একমাত্র বিমান ছাড়া অন্য কোন এয়ারলাইন্সকে ওসমানী বিমানবন্দরে নামতে দেয়া হচ্ছেনা। অথচ চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতি সপ্তাহে বিমান ছাড়াও ৭টি বিদেশী এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট উঠানামা করছে। বাংলাদেশ সরকার ও সিভিল এভিয়েশন অথোরিটি সিলেটবাসীর সাথে ইচ্ছাকৃতভাবে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে, যা নিন্দনীয় এবং দুঃখজনক ।

বাংলাদেশ বিমানের শতকরা ৯৫ ভাগ যাত্রী সিলেট অঞ্চলের। বিমানের বেশীরভাগ যাত্রী সিলেটী হওয়ায় সিলেটীদের জিম্মি করে বিমানের রিটার্ন ভাড়া লন্ডন থেকে সিলেট পর্যন্ত কখনো ১৫০০, কখনো ১২০০, কখনো ১৮০০ পাউন্ড পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। অথচ সমান ফ্লাইটে ঢাকার যাত্রীদের জন্য ৮০০ পাউন্ড ভাড়া নেয়া হয়। এটা প্রবাসী সিলেটবাসীর প্রতি আক্রোশমূলক এবং অভিনব বৈষম্য। যার ফলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সিলেটীরা তাদের ছেলে মেয়েসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে এক সাথে স্বদেশে আসতে পারেন না অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে।

অতীতের সরকার সিলেটবাসীর উপরোক্ত সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছেন। আমাদের নতুন প্রজন্ম সন্তানেরা বিদেশী এয়ারলাইন্সের ভাড়া কম থাকার কারণে বাংলাদেশে না এসে তুরস্ক, মরক্কো, মিশর ও ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে হলিডেতে যাচ্ছে। ফলে আমাদের সন্তানেরা স্বদেশমুখী হচ্ছেনা-বাপদাদার ভিটে-মাটিতে, এতে বাংলাদেশ সরকার ও বিরাট অংকের আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করার জন্য ১৯৯১ সালে ‘ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করে তৎকালীন বিএনপি শাসনামলে সরকারের নিকট জোর দাবি জানানো হয় । ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাস্তবায়নে সিলেটের কৃতিসন্তান বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদ, বিশ্বব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী সিলেট বিভাগের রুপকার মরহুম এম. সাইফুর রহমান এর অবদান সিলেটবাসী কৃজ্ঞতার সাথে স্মরণ রাখবে ।

এদিকে ওসমানী বিমানবন্দরে নতুন টার্মিনাল নির্মাণের কাজ তিন বছর মেয়াদে শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে। বিগত চার বছরে কাজ হয়েছে মাত্র শতকরা ২২ ভাগ। অথচ ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাজ ২০২০ সালের জানুয়ারী মাসে তিন বছর মেয়াদে শুরু হয়ে তা শেষ করে সদ্য সাবেক সরকার তা উদ্বোধন করেছেন। এটাও সিলেটবাসীর প্রতি আরেকটি ঈর্ষান্বিত বৈষম্যমূলক আচরণ বলে আমরা মনে করি ।
ওসমানী বিমানবন্দরে প্রবাসী বিমান যাত্রীদের হয়রানী এখনো কমেনি। আন্তর্জাতিক মানের কোন সেবা নেই এখানে । বিমানের চেক ইন কাউন্টারে প্রতিনিয়ত যাত্রীরা হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন ।

পরিশেষে সকল সাংবাদিক ভাই/বোনদের ধন্যবাদ ও কৃজ্ঞতা জানিয়ে উক্ত সংবাদ সম্মেলন সমাপ্ত ঘোষণা করেন।

আগামী ১ লা নভেম্বর ২০২৪ ইং শুক্রবার বাদ জুম’আ সিলেটের ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্টে ‘‘সিলটী আওয়াজ ও ক্যাম্পেইন কমিটি ইউকে ফর ফুল্লি ফাঙ্কশনাল ওসমানী ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট’’ এর যৌথ উদ্যোগে বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে।

 

এসএস/সিএ
সংবাদটি শেয়ার করুন