কমলগঞ্জে মণিপুরি ভাষা শহীদ সুদেষ্ণা দিবস পালিত
পিন্টু দেবনাথ, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) : ১৬ মার্চ মণিপুরি (বিষ্ণুপ্রিয়া) ভাষা শহীদ সুদেষ্ণা দিবস। সুদেষ্ণা সিংহ পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয় নারী ভাষা শহীদ। দিবসটি পালন উপলক্ষে সিলেট, মৌলভীবাজার, রাজধানী ঢাকা ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মণিপুরিরা বিভিন্ন কর্মসুচির আয়োজন করা হয়েছে।
রবিবার ১৬ মার্চ বিকেল ৫ টায় ভাষা শহীদ সুদেষ্ণা স্মরণে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মণিপুরি ললিতকলা একাডেমির আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। একাডেমির উপ-পরিচালক প্রভাস চন্দ্র সিংহের সভাপতিত্বে ও সংগীত প্রশিক্ষক সুতেপা সিনহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মণিপুরি সমাজ কল্যাণ সমিতির সভাপতি প্রতাপ চন্দ্র সিংহ, কমলগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি পিন্টু দেবনাথ, শহিদ গিরিন্দ্র সিংহ স্মৃতি পরিষদের সভাপতি রুপেন্দ্র কুমার সিংহ, মনিপুরী যুব কল্যান সমিতির সভাপতি শিবচন্দ্র সিংহ প্রমুখ।
এর আগে সুদেষ্ণা সিংহ প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রথমেই ভাষা শহীদ সুদেষ্ণার স্মরণে প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।
প্রচলিত ইতিহাসের লিপিপঞ্জির বাইরে থেকে যায় অনেক ঐতিহাসিক প্রান্তিক ঘটনা। আজকের দিনটি সে রকমই এক অপ্রচল ইতিহাসের উজ্জ্বল দিন। কেবল বাংলা নয়, ভাষার জন্য রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মুখোমুখী হতে হয়েছে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী জাতিকে।
বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও প্রাথমিক স্তরে শিক্ষা-কার্যক্রম চালু করার দাবিতে ভারতের আসাম ও ত্রিপুরায় গত শতকের পঞ্চাশের দশক থেকে প্রায় অর্ধশত বছর ধরে সংঘটিত হয়েছে দীর্ঘ আন্দোলন। সে আন্দোলনের চরম পর্যায়ে পুলিশের গুলিতে আত্মাহুতি দেন বিদ্রোহী তরুণী সুদেষ্ণা সিংহ। আজ সেই রক্তরাঙা দিন।
১৯৯৬ সালের ১৬ মার্চে আসামের করিমগঞ্জ জেলার বিল বাড়িতে মণিপুরী ছাত্র তরুণদের ডাকা ৫০১ ঘণ্টার ‘রেল রোকো’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সুদেষ্ণা সিংহের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে ভারত ও বাংলাদেশে মণিপুরী (বিষ্ণুপ্রিয়া) সম্প্রদায় প্রতি বছর শহীদ সুদেষ্ণা দিবস (মণিপুরী ভাষাশহীদ দিবস) নামে উদযাপন করে আসছে। আসাম ও ত্রিপুরায় বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষাভাষীর।