আপনার ফুসফুসের ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি, প্রতিদিন দূষিত বাতাসে শ্বাস নিলে মানসিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হতে পারে। পরিবেশ বিজ্ঞান ও ইকোটেকনোলজিতে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, বায়ু দূষণের দীর্ঘক্ষণ সংস্পর্শে থাকার সাথে বিষণ্ণতার ঝুঁকি বৃদ্ধির সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
হারবিন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্র্যানফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা পরিচালিত এই গবেষণায় ৪৫ বছরের বেশি বয়সী চীনা প্রাপ্তবয়স্কদের সাত বছর ধরে অনুসরণ করা হয়েছিল এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ছয়টি প্রধান বায়ু দূষণকারীর সম্ভাব্য প্রভাব পরীক্ষা করা হয়েছিল।
গবেষণায় দেখা গেছে যে সালফার ডাই অক্সাইড (SO₂) সবচেয়ে শক্তিশালী দূষণকারী উপাদান ,যা বিষণ্নতার উচ্চতর ঝুঁকির সাথে যুক্ত। উপরন্তু, সূক্ষ্ম কণা দূষণ (PM2.5) এবং কার্বন মনোক্সাইড (CO) মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই দূষণকারীদের সংমিশ্রণের সংস্পর্শে বিষণ্নতার সম্ভাবনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষকরা স্পষ্ট করেছেন যে বায়ু দূষণ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারে। রক্তপ্রবাহ, ট্রাইজেমিনাল নার্ভ, এমনকি ঘ্রাণজনিত রিসেপ্টর নিউরনও বায়ুদূষণের দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। বায়ু দূষণ কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে তা সম্পূর্ণরূপে বোঝার জন্য, আরও গবেষণার প্রয়োজন বলে জানান বিজ্ঞানীরা।
বিষণ্নতা কি?
দৈনন্দিন কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা এবং ক্রমাগত দুঃখ বোধ করা হতাশার লক্ষণ, যাকে মেজাজের ব্যাধি বলা যেতে পারে। এটিকে প্রায়শই ক্লিনিকাল ডিপ্রেশন বলা হয়। এর ফলে উদ্বেগ, ক্লান্তি, বিরক্তি, অনিদ্রা এবং একসময় উপভোগ করা জিনিসগুলোর প্রতি উৎসাহের অভাবের মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশু সহ যে কেউ বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, নিম্নলিখিত অবস্থাগুলোতে বিষণ্নতা বেশি দেখা যায়:
১. স্নায়ুতন্ত্রের রোগ, যেমন পার্কিনসন এবং আলঝাইমার
২. স্ট্রোক
৩. মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস
৪.খিঁচুনি জড়িত ব্যাধি
৫. ক্যান্সার
৬.দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা
কীভাবে বিষণ্ণতার চিকিৎসা করা হয়?
বিষণ্ণতার চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে সাইকোথেরাপি, ওষুধ এবং মস্তিষ্ক উদ্দীপনা সংক্রান্ত থেরাপি।বিষণ্ণতার লক্ষণগুলো উপশম করতে আপনি বাড়িতে নিম্নলিখিত কাজগুলো করতে পারেন:
১. নিয়মিত ব্যায়াম করা
২.পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো। খুব কমও না, খুব বেশিও না
৩. পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ
৪. অ্যালকোহল এড়িয়ে চলা কারণ এটি মানুষকে হতাশাগ্রস্থ করে তোলে
৫. আপনার ভালোবাসার মানুষদের সাথে সময় কাটানো
সূত্র: মানবজমিন