প্রবাসের সংবাদ

একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবিতে নিউইয়র্কে সমাবেশ

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শনের পর মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের কর্মসূচি শুরু করে ‘জেনোসাইড-৭১ ফাউন্ডেশন’।

জাতিসংঘ ঘোষিত গণহত্যা দিবস স্মরণে ‘জেনোসাইড ’৭১ ফাউন্ডেশন’ নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে খাবার বাড়ি পার্টি হলে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয় সোমবার সন্ধ্যায়। এ সময় বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শনের পর সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের প্রতি সম্মান জানাতে।
এরপর “আন্তর্জাতিক জেনোসাইড (গণহত্যা) দিবসের তাৎপর্য ও একাত্তরে বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইড (গণহত্যা)’র আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি” শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেনোসাইড ’৭১ ফাউন্ডেশন এর সভাপতি এবং নিউইয়র্কের রকোফেলার ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড.  প্রদীপ রঞ্জন কর। পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মনজুর চৌধুরী। এতে অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা, জাতিসংঘে বাংলাদেশের উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক মো. আরিফুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) নূরএলাহী মিনা।এ সময় বক্তারা উল্লেখ করেন, ১৯৭০ সালের পাকিস্তান সাধারণ নির্বাচনের রায়কে অস্বীকার করা, বাঙালিদের  হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা এবং বাঙালির স্বাধীনতার দাবিকে চিরতরে ধ্বংস করার মতলবে ১৯৭১ সালের পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে পূর্ব পাকিস্তানে হত্যা করে ৩০ লাখ বাঙালি, ধর্ষণ করে ২ লক্ষাধিক বাঙালি নারীকে। নারী ধর্ষণ ব্যবহৃত হয় যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন দলিলপত্রেও বলা হয়েছে যে স্মরণকালের ইতিহাসে নৃশংসতম গণহত্যার একটি হল ১৯৭১ বাংলাদেশের জেনোসাইড। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বাংলাদেশের পাকিস্তানিদের চালানো জেনোসাইড (গণহত্যা) সবচেয়ে ভয়ংকর জেনোসাইড। ‘গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে’ বাংলাদেশের হত্যাযজ্ঞকে বিশ শতকের পাঁচটি ভয়ঙ্কর গণহত্যার অন্যতম বলে উল্লেখ করা হয়।
কন্সাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা বলেন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য মার্কিন রাজনীতি ও প্রশাসনে লবিং চালাতে হবে প্রবাসীদেরকে। নিজ নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধিরা তাদের দাবিকে উপেক্ষা করতে পারবে না। তবে এজন্য দরকার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। এছাড়া, কলেজ-ভার্সিটিতে সভা-সিম্পোজিয়ামের পাশাপাশি কনসার্ট করাও যেতে পারে। হলিউডের কোন পরিচালক দিয়ে একাত্তরের গণহত্যার ওপর একটি সিনেমা নির্মাণ করতে পারলে আন্তর্জাতিক জনমত জোরদার করার ক্ষেত্রে বড় একটি কাজ হবে বলেও উল্লেখ করেন কন্সাল জেনারেল।
নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা কামরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান, দফতর সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এম এ করিম জাহাঙ্গীর, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. বখতিয়ার, মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মমতাজ শাহনাজ, আওয়ামী লীগ নেতা শরীফ কামরুল হীরা, আকতার হোসেন, শেখ হাসিনা মঞ্চের সভাপতি  জালাল উদ্দিন জলিল ও সাধারণ সম্পাদক কায়কোবাদ খান, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ জামাল হোসেন , যুগ্ম আহ্বায়ক রহিমুজামান সুমন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি হাসান জিলানী, নিউইয়র্ক মহানগর যুবলীগের সভাপতি খন্দকার জাহিদুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five − 3 =