লেখালেখি

কোভিড ক্লান্তি এবং গন্তব্য

কোভিড ক্লান্তি এবং গন্তব্য || দিন দুয়েক আগে ম্যাসেঞ্জারে কথা হচ্ছিল কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বন্ধু/সহপাঠী হাসানুজ্জামান কল্লোলের সাথে। কোভিডের  পেছন পেছন ধেয়ে আসা বৈশ্বিক আর্থিক মন্দা  বিশেষ করে সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবিলায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক প্রশংসনীয় তৎপরতা নিয়েও কথা হল। যে কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত করা আগেই মাঠের বোরো ধান  গোলায় তোলার জন্যে মন্ত্রণালয়ের কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার সরবরাহ, শ্রমিকদের পরিবহণ/স্থানান্তর সহ অন্যান্য মোটিবেশনাল কাজকর্মে খাদ্য উৎপাদন আর মজুদে বেশ সন্তোষজনক  অগ্রগতি  হলেও  সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়  আম্ফানের প্রলয়ে  শেষতক বেশ কিছু ক্ষতি হয়েই গেল। কথা প্রসঙ্গে জানতে চাইলাম কোভিডে  আক্রান্ত  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডঃ মুয়ীদের  শারীরিক অবস্থায় কথা। কৃষি সেক্টরের এই কোভিড যোদ্ধার হারতে হারতে ফিরে আসার কাহিনী করোনা কালে  বেঁচে থাকার সংগ্রামের  আরেকটি উপাখ্যান। কোভিড সংকট বাংলাদেশে যতই ঘনীভূত হচ্ছে অনেক পরিচিত জনের আক্রান্ত হবার, হেরে যাবার, বিজয়ী হবার একেক জনের একেক রকম  অবস্থায়  আমাদের আশাবাদী আর সংকোচিত হওয়া পালাক্রমে চলছেই। করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে সদ্য অবসরোত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাওয়া অতিরিক্ত সচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রজ তৌফিকুল আলম চলে গেলেন না ফেরার দেশে। চলে গেলেন অনেক চিকিৎসক, ব্যাংকার, পুলিশ সহ সমাজের নানা শ্রেনী আর পেশার মানুষ। অনেক সাংবাদিক করোনা আক্রান্ত, আমরা উদ্বিগ্ন।  একজন চৌকস, সজ্জন পুলিশ কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ছোট ভাই RAB-4 এর কমান্ডিং অফিসার মোজাম্মেল হক, অতিরিক্ত  ডিআইজি করোনায় আক্রান্ত হবার খবর আমাদের দুশ্চিন্তার কারণ। এই উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা আর মর্মস্পর্শী উপাখ্যানের নানান এপিসোড বিশ্বব্যাপী।  ডাক্তার হিসেবে সেবা দিতে গিয়ে মানুষের কষ্ট  সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যাই করে ফেলল নিউ ইয়র্ক সিটি ডাক্তার লোরনা  ব্রিন। শতকরা হারে গুরুতর কোভিড  রোগী ৫%  হলেও সংখ্যায় তো হাজার হাজার, লাখ লাখ। ভেন্টিলেটরে দিতে না দিতেই চলে যাবার অসংখ্য ঘটনায় মানসিকভাবে  বিধ্বস্ত অনেক চিকিৎসক।  মন্ট্রিয়ল, নিউ ইয়র্ক, রোম, মস্কো, দিল্লী, রিওডিজেনেরিও থেকে ঢাকা, সর্বত্রই  এরকম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় মানবজাতি পার করে দিচ্ছে মাসের পর মাস; আমাদের মনে হচ্ছে “ক্লান্তি আমায় ক্ষমা কর প্রভু—এই যে হিয়া থরোথরো কাঁপে আজি এমনতরো”।

ক্লান্ত, শ্রান্ত, বিধ্বস্ত  অর্থনীতি থেকে সামাজিকতা, ধর্মীয় আচার আচরণ, শিল্প, সাহিত্য, বিনোদন, ভ্রমণ সবকিছু। মুসলিম সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠা একজন মানুষ শুধু তাঁর প্রজন্মে নয়, পূর্ব পুরুষদেরও এমন নজীর পাননি  মসজিদের সাথে সংযোগবিহীন রমজান, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধববিহীন ঈদ। থেমে  গেছে ক্রীড়া  জগত। মানুষের স্বাভাবিক চিকিৎসা ব্যবস্থাও অচল হয়ে আয়ু কমিয়ে দিচ্ছে জটিল অসুখ বিসুখে আক্রান্ত কোটি কোটি মানুষের। করোনার প্রভাবে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত কোটি কোটি মানুষ। করোনার প্রত্যক্ষ  কুদৃষ্টির চাইতে পরোক্ষ কুদৃষ্টি বহুগুনে সর্বনাশা আর এই সর্বনাশের প্রভাব অনেক বেশী দীর্ঘ মেয়াদী।  মানব সভ্যতার এমনি এক কঠিন পরিস্থিতিতে অনেকেই জানতে চান আমাদের গন্তব্য, কোথায় নিয়ে যাচ্ছে করোনা আমাদের? এর কোন সুনির্দিষ্ট উত্তর নেই।

কোভিড যুদ্ধে সব দেশ বা জাতির কণ্টকাকীর্ণ পথ চলা হলেও গন্তব্যের রকমফের হবে। শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ আর গরীব দেশগুলোর  পরিণতি এক হবার কথা নয়। অন্যদিকে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলির কোভিডের  ভয়াবহতা  দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলিতে একই মাত্রায় অনুভূত হচ্ছে না।

কঠোর লকডাউন মেনে চলা দেশগুলো যেহেতু গ্রাফটি লিনিয়ার করার চেষ্টায় লিপ্ত, ফলে   লকডাউন শিথিলতায় সংক্রমণের  উঠা নামার চিত্রটি সহজেই  চোখে পড়বে এবং এই  ডাটা বিশ্লেষণ করে কর্তৃপক্ষের নজরদারী কৌশলে পরিবর্তন  এনে পরিস্থিতির  ক্রমশ উন্নতি ঘটানো যাবে। লকডাউন অনিচ্ছুক জাতি গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রায় সংক্রমণ দীর্ঘ দিন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা বেশী, এদের ক্ষেত্রে এক্সপোনেনশিয়ালি উঠে  আবার নেমে আসার সম্ভাবনা বেশী।

বাংলাদেশে  এখন পর্যন্ত  প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশী মানুষের টেস্ট করা হয়েছে, যার মধ্যে আক্রান্ত প্রায় ৩২ হাজার।  এখন  ৫০ টির মত ল্যাবে  দিনে প্রায় ১০ হাজার টেস্ট  করা হয়। কখনো ১২% কখনো ১৭% আক্রান্ত বনাম টেস্টের এই ধারাটি প্রথম থেকেই বজায়  থাকছে, যার গড়পড়তা হার হচ্ছে প্রায় ১৪% কাছাকাছি। বৈশ্বিক তুলনামুলক চিত্রে এটি বেশ বড়  শতকরা হার এবং যেহেতু  এই হারটি দীর্ঘদিন যাবৎ চলছে, ধরা যায় পরীক্ষা করা হয়নি জনসংখ্যার মাঝে এটি কমবেশি সম্ভাব্য হার।   ঈদ উপলক্ষ্যে আরো শিথিল লকডাউনের ইমপ্যাক্ট বুঝতে হলে জুনের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ অপেক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশে মৃত্যু হার অনেক কম, এমনকি  সরকারী  তথ্যের  (১.৩৫% মৃত্যু বনাম আক্রান্ত) সাথে দ্বিমত পোষণ করে “করোনার মত”  উপসর্গে মৃত্যুগুলি হিসেবে ধরলেও  বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট থেকে অনেক কম (৩% এর কম হবে)।  ভারতে  মৃত্যু বনাম আক্রান্তের হার ৩%। বৈশ্বিক মৃত্যু বনাম আক্রান্তের হার প্রায় ৬.৫%। ভারতে ২.৬ মিলিয়ন মানুষের পরীক্ষা করা হয়েছে, আক্রান্ত পাওয়া গেছে  প্রায় ১লক্ষ ২৪ হাজার। আক্রান্ত বনাম টেস্টের হিসেবে ভারতে  সংক্রমিত মানুষের  সংখ্যা ৫% এর কম, অথচ বাংলাদেশে এটি প্রায় ১৪%। বাংলাদেশে  সংক্রমণের এই উচ্চ মাত্রার পেছনে সরকারের নির্দেশ না মানার প্রবণতা বোধগম্য হলেও মৃত্যু  সংখ্যা কম হবার বায়োলজিক্যাল কারণগুলো গবেষণার দাবী রাখে। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে কনফ্লিক্টিং মতামত থাকায় বিষয়টি খোলাসা করার জন্যে  হলিস্টিক গবেষণার প্রয়োজন। কম মৃত্যু কেবল সুখবরই নয়, কোভিড ব্যবস্থাপনার কর্তৃপক্ষের কৌশল নির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা  রাখবে। সামাজিক বা শারীরিক  দূরত্ব না মানার একটি দেশে অবশ্যম্ভাবী বিপুল সংক্রমণের বিপরীতে  বৈশ্বিক মানদণ্ডে  খুব কম ফ্যাটালিটি বিধাতার আশীর্বাদ তো বটেই। যুক্তরাষ্ট্রের কথাই ধরি মৃত্যু সংখ্যা লাখ এর কাছাকাছি,  অবস্থায় উন্নতি হওয়া সত্ত্বেও  আক্রান্ত বনাম টেস্টের হার হচ্ছে ১৩%, মৃত্যু বনাম আক্রান্তের হার প্রায় ৬%। সংক্রমণের হার বাংলাদেশের কাছাকাছি হলেও মৃত্যুর হার অনেক বেশী।

মাই সিটি মন্ট্রিয়ল, কোভিড সন্ত্রাসে কানাডার  সবচেয়ে বড় ভিকটিম, যেমন নিউ ইয়র্ক যুক্তরাষ্ট্রে। প্রায় আড়াই হাজার মানুষের মৃত্যুর মিছিলে শোকার্ত নগরী মন্ট্রিয়ল।  কানাডায়  আক্রান্ত বনাম টেস্টের হার ৫.৪% আর  মৃত্যু বনাম আক্রান্তের হার প্রায় ৭.৫%। কানাডার সবচেয়ে আক্রান্ত প্রদেশ কুবেকে আক্রান্ত বনাম টেস্টের হার ৩.৩%। মৃত্যু বনাম আক্রান্তের হার প্রায় ৮.৪%। কানাডার হটস্পট মন্ট্রিয়ল নগরীতে মৃত্যুর হার ১০.৫%। বাংলাদেশের চাইতে কানাডার চিত্রটি   ভিন্ন। মৃত্যুর মিছিলে বয়স ভিত্তিক তারতম্যে বাংলাদেশের অবস্থানও কানাডার চাইতে একেবারেই ভিন্ন। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশী মৃত্যু ঘটছে ৫০-৬০ বছর বয়সের মধ্যে, দুয়েকদিন আগের  একটি হিসেবে এই বয়স রেঞ্জে মৃত্যু প্রায় ৪৫%। অথচ কুবেকে এই বয়স রেঞ্জে মৃত্যু  মাত্র ১.৭%।  কুবেকে  ৮০-৯০ বছর বয়স  গ্রুপে মৃত্যুর হার ৪০% হয় আর ৩৩% হয় ৯০ বছরের এর উপরে। কানাডা  বিশেষ করে  কুবেক  প্রদেশ আর মন্ট্রিয়ল শহরে অধিকাংশ মৃত্যু  ঘটেছে  সিনিয়র সিটিজেন হোম বা বয়স্ক কেন্দ্রে।

বাংলাদেশে  ৫০-৬০ বছরের এই মাঝ বয়সীদের মৃত্যুর হার বেশী হবার বিষয়টি গবেষণার দাবী রাখে। সিনিয়র সিটিজেনদের  পারিবারিক পরিবেশে  থাকার কারণটি  বাংলাদেশে সম্ভবত পজিটিভ ফ্যাক্টর। কুবেকে এখন বিতর্ক শুরু হয়েছে বয়স্ক কেন্দ্রের সার্ভিস নিয়ে  এবং অনেকেই ভাবছেন সিনিয়রদের পারিবারিক পরিবেশে রাখলে এই পরিণতি হয়তো হতো না।

করোনা সন্ত্রাসে  যুক্তরাষ্ট্রের পর  দ্বিতীয় ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হচ্ছে ব্রাজিল, তিন নম্বরে আছে রাশিয়া।  যুক্তরাষ্ট্র যখন প্রবল আঘাতে নাকানিচুবানি খাচ্ছে কম্যুনিস্টদের মধ্যে চাপা গুঞ্জন ছিল কোভিড  ব্যবস্থাপনায় রাশিয়ার সাফল্যে।   না,  করোনার কাছে বাম রাজনীতির জন্যে করুনা ছিলনা,  সুসময় বেশীদিন থাকেনি, করোনা ক্রমশ বাড়তে থাকে রাশিয়ায়। তবে রাশিয়ার ব্যবস্থাপনায়  সবচেয়ে বড় সাফল্য প্রায় ৮ মিলিয়নের বেশী টেস্ট, ইউরোপের সবচেয়ে বেশী টেস্ট। বিশ্ব স্বাস্থ্য  সংস্থার টেস্ট টেস্ট টেস্ট মন্ত্র রাশিয়া পালন করেছে। রাশিয়ায় আক্রান্ত বনাম টেস্টের হার ৪% আর মৃত্যু বনাম আক্রান্তের হার ১% চেয়ে একটু  কম।  ইউরোপ আর যুক্তরাষ্ট্রে  তাণ্ডব লীলার তুলনামুলক বিচারে রাশিয়া  এখন পর্যন্ত ভাল অবস্থানে আছে। সোয়া তিন লাখ আক্রান্তের মাঝে মৃত্যু ঘটেছে  ৩ হাজারের কিছু বেশী। রাশিয়া এখন ফোকাল পয়েন্টে,  ইউরোপ আর আমেরিকার পর বিশ্ব দেখছে এদের করোনা ব্যবস্থাপনা।

দক্ষিণ  গোলার্ধের দেশ  ব্রাজিল। দক্ষিণ গোলার্ধের আর সব দেশগুলোর তুলনায় অবস্থা খুব খারাপ। এরকম হবার কথা ছিল না। ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো কে বলা হয় ট্রপিক্যাল ট্রাম্প। ভদ্রলোকের লকডাউনের বিপক্ষে শক্ত অবস্থা, মানবিকতায় প্রশ্নবিদ্ধ। মত পার্থক্যের  কারণে বাদ গেলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।  ট্রাম্পের স্টাইলের করোনা  ব্যবস্থাপনা করতে গিয়ে কোভিড  যুদ্ধে  ডেকে আনলেন একই পরিণতি। তবে ট্রাম্প যা করতে পারেনি অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্র ব্যবস্থা যা করতে  দেবে না সেই খারাপ কাজটি করলেন, তথ্য  উপাত্তে  লুকোচুরির নানা কায়দা। তারপরেও এখন পর্যন্ত  মৃত্যু বনাম আক্রান্তের হার ৬.৫%। সঠিক ডাটা না পাওয়া গেলেও আক্রান্ত বনাম টেস্টের হারে বিশ্ব রেকর্ড  করার  সম্ভাব্য দেশ মনে করছেন অনেকে। অর্থনীতি রক্ষার নামে কোভিড  যুদ্ধে উন্নাসিকতায় আক্রান্তের তালিকায় উঠে এসেছে  দ্বিতীয় স্থানে। ট্রাম্পের ভাষায়  কোভিড  সংক্রমণে চ্যাম্পিয়ন হওয়া যদি  গৌরবের হয় তবে  ট্রপিক্যাল ট্রাম্প বোলসোনারোর দেশ ব্রাজিল প্রায় সাড়ে তিনলাখ সংক্রমণ আর  ২১ হাজার কফিনের ভার কাঁধে  নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রথম রানার্স আপ হিসেবে বিশ্বের সন্মানিত দেশ বটে।

সুতরাং একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা কোভিড সংকটে সবার জন্যে প্রযোজ্য বৈশ্বিক ইমপ্যাক্টের পাশাপাশি কে কোন গন্তব্যে পৌছবে রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণের একটি প্রভাব তো সেটিকে ত্বরান্বিত করবেই। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবস্থাপনার সাথে কানাডার ব্যবস্থাপনার পার্থক্য সুস্পষ্ট, ফলে ফলাফলে রয়েছে এর অবধারিত প্রভাব। কানাডা গ্রাফটিকে যথেষ্ট চাপিয়ে রাখতে পেরেছে।  সাফল্য   কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ওল্ডহোমের  অব্যবস্থাপনার কারণে। এই মুহূর্তে কানাডায় ওল্ডহোমকে  ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করছেন সেনাবাহিনী।  কুবেক প্রদেশে বিশেষ করে মন্ট্রিয়লে  ইমিগ্রেন্টদের আর্থিক অবস্থাকে পরিস্থিতি খারাপের জন্যে দায়ী করা  হয়। মন্ট্রিয়ল উত্তরের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়, সমীক্ষায় দেখা গেছে ইমিগ্রেন্ট অধ্যুষিত মন্ট্রিয়ল উত্তর মাথাপিছু আয়ে কানাডার  শীর্ষ গরীব এলাকা। আর্থিক অনটন স্বাস্থ্যসম্মত আর জীবাণুমুক্ত জীবন ধারনে সহায়ক নয়, ফলে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশী।  একই চিত্র দেখা গিয়েছে নিউ ইয়র্কে।

এশিয়ার পাক ভারত উপমহাদেশের  দেশগুলোর অর্থনীতি, জনসংখ্যা আর লকডাউন অমান্যের সবগুলো পয়েন্ট কোভিড পরিস্থিতি খারাপ হবার খুবই সহায়ক হওয়ার পরও  উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ কিংবা ব্রাজিলের মত পরস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি।  বাংলাদেশে আক্রান্ত বনাম টেস্টের ১৪% হারটি উদ্বেগের কারণ। আগামী কয়েক সপ্তাহ প্যাটার্নটি বুঝার জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সপ্তাহে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লকডাউন  শিথিলতার কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঈদে সামাজিক আর শারীরিক দূরত্বে জনগণের শিথিলতার বিষয়টি কিভাবে কোভিড পরিস্থিতিকে  প্রভাবিত করে  আগামী কয়েক সপ্তাহের ডাটা  ধারণা দেবে আমাদের গন্তব্য সম্পর্কে। পিকে না উঠে অর্থাৎ এক্সপোনেনশিয়াল অবস্থায় না পৌঁছে নীরবে কমে আসার আশা তো করতেই পারি।

 

লেখকঃ কলামিস্ট  এবং মাইক্রোবিয়াল বায়োটেক  বিষয়ে বহুজাতিক কর্পোরেটে  ডিরেক্টর পদে কর্মরত এবং সিবিএনএ-এর উপদেষ্টা।

সিবিএনএ/এসএস


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন