এক লাখ ‘সাইবার যোদ্ধা’ বানাচ্ছে আওয়ামী লীগ
মোস্তাফিজুর রহমান | প্রায় সবার হাতেই পৌঁছে গেছে তথ্যপ্রযুক্তি। যার ফলে মানুষের জীবনযাপন, কর্মধারাসহ প্রায় অনেক কিছুই বদলে গেছে। এমনকি এর প্রভাব পড়েছে রাজনৈতিক অঙ্গণেও। সভা, সেমিনার থেকে শুরু করে প্রতিবাদ কর্মসূচিও এখন দেয়া হচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে। এতে করে প্রচার-অপপ্রচারে রাজনৈতিক ‘সাইবার যুদ্ধে’ পরিণত হয়েছে।
আর এই অনলাইন যুদ্ধ মোকাবিলায় সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে নেতৃত্ব দেয়া ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের। এ কারণে অনলাইনে সক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। এজন্য সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগও নিয়েছে তারা।
বিশেষ করে মূল দল ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে এক লাখ ‘সাইবার যোদ্ধা’ তৈরি করছে আওয়ামী লীগ। এরা সবাই একটি প্লাটফর্মে থেকে কাজ করবে। ইতোমধ্যে ৪৫ হাজার নেতাকর্মীকে এ প্লাটফর্মের জন্য তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এর নির্দেশে আমরা নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণের কাজ এগিয়ে নিচ্ছি। এ কাজে সহযোগীতা করছে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।’
তিনি বলেন, ‘সিআরআইয়ের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের বিভাগীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ৩৫ হাজার দক্ষ অনলাইন এক্টিভিটিস তৈরি করেছি। তাদের মাধ্যমে নতুন করে আরো ১০ হাজার দক্ষ অনলাইন এক্টিভিটিস তৈরি হয়েছে। পর্যায়ক্রমে একলাখ অনলাইন এক্টিভিটিস তৈরি করা হবে।’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে ‘ডিজিটাল দেশে’ রূপ দিয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেকেই সরকারবিরোধী নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিশেষ করে বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীরা সরকারবিরোধী গুজব ও অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছে। এসব অপপ্রচারের পাল্টা জবাব দেয়ার জন্য সকল স্তরের নেতাকর্মীদের মাঝে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক প্রচারণা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি।’
বাহাউদ্দিন নাছিম আরো বলেন, ‘নেতাকর্মীদের দক্ষ করে সাইবার যোদ্ধা হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়াও সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ করে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত ডিজিটাল যোগাযোগ স্থাপন করা, সাংগঠনিক কার্যক্রম আরো গতিশীল করা এবং সরকারের উন্নয়নের প্রচার-প্রচারণা বাড়ানোর উদ্যোগও নেয়া হয়েছে।’
জানা গেছে, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকায় নেতাকর্মীদের একটি বড় অংশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় নন। আবার অনেকে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার জানলেও অতটা দক্ষ নন। এতে সরকারবিরোধী গুজব রোধ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারণা কম হচ্ছে। এমনকি দলীয় কার্যক্রমের গতিশীলতাও ব্যহত হচ্ছে। ফলে এক লাখ ‘সাইবার যোদ্ধা’ বানাচ্ছে আওয়ামী লীগ ।
এর প্রেক্ষিতে নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। এরপরই সিআরআইয়ের সহযোগীতায় নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনার কার্যক্রম শুরু হয়।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, মূল দল ছাড়াও ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাদের পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। প্রথমে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে হলেও ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরও প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রশিক্ষণে ই-মেইল ব্যবহার, টাইপ, চিঠিপত্র লেখার কৌশল শেখানো হচ্ছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় শেখানো হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘আমাদের বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, প্রচার সম্পাদকসহ চারটি বিভাগের নেতাকর্মীদের বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে। পাশাপাশি যারা আগ্রহী তাদেরও প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে যারা তরুণ তাদেরকে প্রশিক্ষণের বিষয়ে জোর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।-বাংলাদেশ জার্নাল
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান