বিশ্ব

অ্যাপল, নাইকি’কে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান


অ্যাপল, নাইকি’কে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান

উইঘুর জনগোষ্ঠীকে জোরপূর্বক শ্রমে নিযুক্ত করার কারণে চীনের সরবরাহকারীদের সঙ্গে অ্যাপল ও নাইকি’র মতো জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানানো হয়েছে। অধিকারকর্মীরা এ বিষয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন। তাতে বলা হচ্ছে, পশ্চিমাঞ্চলীয় সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ব্যবহার করে চীনের ওইসব কোম্পানি সমৃদ্ধ হচ্ছে এবং সুবিধা ভোগ করছে। এভাবে জোরপূর্বক শ্রম নির্যাতনের বিষয়ে কঠোর সতর্কতার অংশ হিসেবে অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নাইকি এবং অন্য বড় ব্রান্ডগুলো বলেছে, তারা অভিযোগ খতিয়ে দেখছে। নাইকি বলেছে, তারা চীনে এমন শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত সরবরাহকারীদের শনাক্ত করার জন্য কাজ করছে। তাদের দাবি, তারা সরাসরি সিনজিয়াং থেকে পণ্য সরবরাহ নেয় না। অন্যদিকে অ্যাপল বলেছে, তারাও অভিযোগ তদন্ত করে দেখছে।

তারা আরও বলেছে, অ্যাপলের প্রোডাকশন লাইনে জোরপূর্বক শ্রম ব্যবহারের পক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ তারা পায় নি। তবে তারা অব্যাহতভাবে এ বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
রাজনীতিবিদ ও অধিকারকর্মীরা বলছেন, চীন সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে এসব কোম্পানিকে আরো অনেক কিছু করতে হবে। এমন চাপ সৃষ্টি করছে ১৮০টিরও বেশি সংগঠন। তার একটি এন্টি-স্লেভারি ইন্টারন্যাশনাল। এর ক্লোই ক্রানস্টোন বলেছেন, বড় বড় এসব ব্রান্ড এবং খুচরা ক্রেতাদের অনেক আগেই চীনকে ছেড়ে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তারা তা করেনি। এ জন্যই এখন জনগণের পক্ষ থেকে তাদেরকে এই আহ্বান জানানো হচ্ছে। এটা এখন গুরুত্বপূর্ণ ও অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। এটা শুধু একটি সরবরাহকারীর সঙ্গে সম্পর্কের ইতি ঘটানো নয়। বাস্তবে এটা হলো একটি সমন্বিত উদ্যোগের বিষয়।
কি ঘটছে সিনজিয়াংয়ে
অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট (এএসপিআই) এবং ইউএস কংগ্রেস সহ অন্যদের রিপোর্টে এটা দেখা গেছে যে, পুরো চীনে বিভিন্ন কারখানায় কাজ করতে হাজার হাজার উইঘুরকে স্থানান্তর করা হয়েছে। এএসপিআইয়ের রিপোর্টে শক্তভাবে দাবি করা হয়েছে, সেখানে জোরপূর্বক শ্রমে ব্যবহার করা হচ্ছে উইঘুরদের। যেসব কারখানায় এসব করা হচ্ছে সেখানে নাইকি, অ্যাপল ও গ্যাপের মতো কমপক্ষে ৮০টি হাই-প্রোফাইল ব্রান্ড জড়িত বলে বলা হয়েছে।
সিনজিয়াংয়ে অন্তর্বর্তী ক্যাম্পে কমপক্ষে ১০ লাখের বেশি উইঘুরকে চীন আটকে রেখেছে বলে মনে করা হয়। তাদের দাবি, ওইসব সেন্টারে উইঘুরদের কর্মসংস্থান ও শিক্ষার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তবে সেখানে জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণ করা হয় বলে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। চীনের সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, এসব মানুষ উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকে যাচ্ছিল বলে তারা এমন ব্যবস্থা নিয়েছে। তাদেরকে এসব শিবিরে বন্দি রাখার অভিযোগকে চীন ভুয়া বলে দাবি করে। কিন্তু উইঘুর হিউম্যান রাইটস প্রজেক্টের নির্বাহী পরিচালক ওমের কানাত বলেছেন, চীনকে তার এসব নীতি পরিবর্তনে রাজি করাতে সিনজিয়াং থেকে কোম্পানিগুলোর ব্যবসা সরিয়ে নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীন সরকার এখন পর্যন্ত যা করছে তার জন্য নিন্দা জানানো হচ্ছে এখনও। কিন্তু এখনও এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। বাস্তবসম্মত কোনো চাপ না পড়লে চীন সরকার আসলে কিছু করবে না। তাই এসব কোম্পানির অনেক কিছু করার আছে।
এ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে চীনের ওপর এমন চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানানো হলো। এ মাসে ওই অঞ্চলের ওপর নজরদারি করে এমন চীনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে সিনজিয়াংয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসা করে তাদেরকে সতর্ক করেছে। সম্প্রতি সিনজিয়াং থেকে পাঠানো ১৩ টন চুল জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তরক্ষীরা। এর মূল্য ৮ লাখ ডলার বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে চীনের কমপক্ষে ১১টি কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে, যারা অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করে।
মার্কিন কংগ্রেসের আইন প্রণেতারা সিনজিয়াং থেকে পণ্য আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করতে একটি প্রস্তাবতা বিবেচনা করছেন। ইউরোপও একটি প্রস্তাব আনার হুমকি দিয়েছে, যা এসব কোম্পানির ওপর আরো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ চালাবে।

-মানবজমিন থেকে নেওয়া অ্যাপল, নাইকি’কে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান

সিএ/এসএস


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন