ফিচার্ড বিশ্ব

আফগান নারীদের সামনে কী

আফগান নারীদের সামনে কী
আন্তর্জাতিক নারী দিবস

আফগানিস্তানে লাখ লাখ নারী শিক্ষার্থী হাইস্কুলে যেতে পারছে না এবং দেশটির বিশ^বিদ্যালয়গুলোর দরজা নারীদের জন্য চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছে তালেবান শাসকরা। এমন পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল দেশে দেশে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালিত হয়েছে। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা একটি বিশেষ প্রবিবেদন প্রকাশ করেছে।

জাতিসংঘ বুধবার একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, নারী অধিকার খর্বের দিক থেকে তালেবান সরকারের অধীনে আফগানিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে নিগৃহীত দেশে পরিণত হয়েছেÑ যেখানে কর্তৃপক্ষ প্রতিনিয়ত নারীদের ঘরের মধ্যে জোর করে ফেরত পাঠাচ্ছে। আফগানিস্তানে জাতিসংঘ মিশনের প্রধান রোজা ওটুনবেভা আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘তারা (তালেবান) যেভাবে পদ্ধতিগত, স্বতঃস্ফূর্ত ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে জনজীবন থেকে নারীদের বিচ্ছিন্ন করে তাদের গৃহে আবদ্ধ করছেÑ এটা দেখাও কষ্টকর।’

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে ক্ষমতায় এসেই তালেবানরা ষষ্ঠ শ্রেণির পর নারীদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করে দেয়। প্রথমে তারা শিক্ষক স্বল্প করে দেয়, এরপর স্কুল কমিয়ে দেয় সর্বোপরি নারী শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া কার্যত কঠিন করে তোলে।

তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। এদিকে তালেবানের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা নারীদের স্কুল পুনরায় চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলছেনÑ ইসলামে নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়নি। কিন্তু সেই আহ্বানের কোনোবাস্তবায়ন নেই। সম্প্রতি ইউনেস্কো জানিয়েছে, দেশটিতে স্কুলে যাওয়ার মতো বয়সী ৮০ ভাগ মেয়েশিশু শ্রেণিকক্ষে যেতে পারছে না। এই সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ।

এদিকে শীতের ছুটির পর আফগানিস্তানে আবারও বিশ^বিদ্যালয় খুলেছে কিন্তু নারী শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত। গত বছরের শেষ দিকে তালেবান সরকার নারীদের জন্য উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ করে। সেই সময় বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে নারী উপস্থিত হতে পারবেন না। এ নিয়ে কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ক্ষোভ-দুঃখ নিয়ে বিবিসিকে বলেন, এখন আমি আর কেউ না। আমার পরিকল্পনা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শেষ করে আমি আমার ?মাস্টার্স করব, তারপর পিএইচডি। আমি আমার দেশ, জাতি ও মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। আমি এখন আর সেটা করতে পারব না। এমন আরও অনেক নারী শিক্ষার্থীর ফল আজ অকালেই বিনষ্ট হতে চলেছে। বিভিন্ন চাকরিতে নারীদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এনজিওগুলোতে নারীদের জন্য দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

তবে তালেবানদের হুমকি-ধমকি উপেক্ষা করে এখনো কিছু নারী রাজপথে নিজেদের অধিকার রক্ষায় সরব হতে দেখা যায়। গতকাল রাজধানী কাবুলে প্রায় বিশজন নারী বিক্ষোভ করেন। এ সময় সংবাদমাধ্যম এএফপির সংবাদদাতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

-সূত্র: আমাদের সময়

 

সংবাদটি শেয়ার করুন