ব্যবসায় ক্ষতি, চরম আর্থিক সংকটে ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট হিসেবে শুরুটা ভালো হলেও শেষটা মোটেই ভালো নয়। একরকম লজ্জাজনক বিদায় নিতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
কিন্তু তার মন্দ ভাগ্যের এখানেই শেষ নয়। হোয়াইট হাউজ থেকে বিদায় নেওয়ার পর এবার তার ব্যবসাতেও মন্দা দেখা দিয়েছে। ফলে চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন ট্রাম্প। আর এই সমস্যা ক্রমেই প্রকট রূপ নিচ্ছে।
ক্ষমতা ছাড়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এ খবর দিয়েছে সিএনএন। এদিকে ট্রাম্পের অভিশংসন প্রক্রিয়া আগামী ফেব্র“য়ারি মাস পর্যন্ত বিলম্ব করতে ডেমোক্র্যাটদের কাছে আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা। তারা বলছেন, ট্রাম্পকে নিজের পক্ষ অবলম্বনের জন্য সময় দেয়া প্রয়োজন। বিবিসি ও এপি।
ক্ষমতা হস্তান্তরের পর হোয়াইট হাউস ছেড়ে স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পকে নিয়ে ফ্লোরিডার নতুন বাড়িতে উঠেছেন ট্রাম্প। এর কিছুক্ষণ পরই তার আর্থিক হিসাব-নিকাশের নথি প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে জানা গেছে, গেল বছর ট্রাম্পের নামে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখন হয়েছে।
২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে ট্রাম্পের সব ব্যবসা প্রায় ৪০ শতাংশ কম আয় করেছে। ওয়াশিংটনে ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেল ও স্কটল্যান্ডে তার প্রেসিডেন্টস টার্নবেরির আয়ও ৬০ শতাংশ কমে গেছে।
এদিকে গেল ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে (ক্যাপিটল বিল্ডিং) ট্রাম্পপন্থিদের নজিরবিহীন হামলা, ভাঙচুর ও সহিংসতার ঘটনায় ট্রাম্পের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বহু কোম্পানি সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। যদিও ট্রাম্পের আয় কমে যাওয়ার উল্লিখিত হিসাব ক্যাপিটল হামলার আগের।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ভ্রমণ কড়াকড়িকে ট্রাম্পের ব্যবসায় ধস নামার বড় কারণ হিসাবে মনে করা হচ্ছে।
ক্ষমতায় থাকাকালীন গেল ৪ বছরে ট্রাম্পের কাঁধে ৪২ কোটি ১০ লাখ (৪২১ মিলিয়ন) ডলারের ঋণের বোঝা থাকায় আগামী দিনগুলোতে তার আর্থিক সঙ্কট আর তীব্রতর হতে পারে বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো আগেও সংবাদ প্রকাশ করেছিল।
এখন একদিকে ক্ষমতা হারিয়েছেন, অন্য দিকে ব্যবসা টিকিয়ে লাভের মুখ দেখতে ও ঋণের বোঝা কমাতে চার পাশ থেকে নতুন নতুন উপায় খুঁজে বের করতে হবে ট্রাম্পকে। অন্যথায় ক্রমেই বাড়তে থাকা ঋণ পরিশোধ করা সদ্য সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষে খুবই দুরূহ হতে পারে।
গত ৬ ডিসেম্বর ক্যাপিটল নজিরবিহীন সহিংসতার আগে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প সমর্থকদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্যাপিটলের দিকে এগিয়ে আসতে ও লড়াই করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। ওই সহিংসতায় এক পুলিশ অফিসারসহ চারজন নিহত হন।
সহিংসতার পর দ্রুত কংগ্রেসের দুই কক্ষ নির্বাচনে জো বাইডেনের ইলেকটোরাল ভোটে জয়ের অনুমোদন দেয়। এক সপ্তাহ পর ১৩ জানুয়ারি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগ এনে তাকে অভিশংসন করে কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ।
প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্রেট সদস্যরা বলছেন, তারা এখন এই মামলা সিনেটে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত। সিনেটে তার বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া হবে প্রথম কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসনের বিচার। তবে এই বিচার প্রক্রিয়া আরও কয়েক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে বিরোধী রিপাবলিকানরা।
শেষ মুহূর্তে যুদ্ধবিমান ও ড্রোন বিক্রির চুক্তি ট্রাম্প প্রশাসনের : এদিকে বিদায়ের শেষ মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে একটি সামরিক চুক্তি সম্পাদন করে গেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই চুক্তির আওতায় অত্যাধুনিক এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান এবং উন্নতমানের ড্রোন সরবরাহ করবে ওয়াশিংটন।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র বাইডেনের ক্ষমতাগ্রহণের কয়েক ঘণ্টা চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। তাতে বলা হয়েছে, চুক্তির আওতায় ৫০টি এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান এবং সামরিক কাজে ব্যবহারযোগ্য ১৮টি ড্রোন পাবে আমিরাত।
সূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর
বাঅ/এমএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন