বাংলাদেশে কয়েক সপ্তাহ ধরে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ার পটভূমিতে এখন সরকার ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবির মাধ্যমে কম দামে আলু বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এজন্য কেজি প্রতি আলুর দাম ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি রোবাবর একথা জানিয়েছেন।
এর আগে গত সপ্তাহে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কেজি প্রতি আলুর মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু এখনো বাজারে ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে আলু।
কেন টিসিবির মাধ্যমে বিক্রির সিদ্ধান্ত?
বাংলাদেশে গত সপ্তাহ দুয়েক ধরেই আলুর দাম ক্রমাগত বাড়ছিল।
২০-২২ টাকা কেজি দরের আলুর দাম বাড়তে বাড়তে ৫০-৫৫ টাকায় গিয়ে ঠেকে।
যে কারণে সরকার প্রথমবারের মত আলুর মূল্য নির্ধারণ করে দেয় কেজিতে ৩০ টাকা।
বাংলাদেশে সাধারণত চাল, ডাল বা তেলের মূল্য সরকার নির্ধারণ করে দেয়, বিশেষত রমজানের সময় যখন বাজারে চাহিদা ব্যাপক থাকে।
কিন্তু এর আগে আলুর মূল্য নির্ধারণ করে দেয়ার কথা শোনা যায়নি।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি যখন আজ টিসিবির মাধ্যমে আলু বিক্রির ঘোষণা দেন, তখন তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন যে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ঠিক করে দেয়া দাম আসলে কার্যকর করা যায়নি।
যে কারণে এখন এই টিসিবির ট্রাক সেলের মাধ্যমে আলু বিক্রি করা হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, নতুন নির্ধারিত দাম কার্যকর হচ্ছে কীনা সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং র্যাব মনিটর করবে।
কেন আলুর সংকট?
সরকার বলছে বাজারে আলুর কোন সংকট নেই, এবং চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদন হয়েছে বলে সরকারের দাবি।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ১ কোটি ৯ লাখ টন আলু উৎপাদিত হয়েছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বলছে দেশে বছরে আলুর চাহিদা ৭৭ লাখ টন, ফলে চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি উৎপাদন হয়েছে বলে মনে করে সরকার।
কিন্তু তারপরেও দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে সরকার মনে করে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
কিন্তু ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকেরা বলছেন এ বছর মহামারি এবং বন্যার কারণে সরকারি ও অন্যান্য সংস্থার ত্রাণ হিসেবে দেয়া পণ্যের তালিকায় আলু ছিল, যে কারণে মজুদ আলুর একটি বড় অংশ খরচ হয়ে গেছে।
ফলে সরবারহে ঘাটতি হয়েছে। এছাড়া এবছর আলুর রপ্তানিও বেড়েছে, সেটিও বাজারে আলুর মজুদ কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ বলে মনে করেন তারা।
কেন আলুর দাম এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলো?
আলু বাংলাদেশে সব শ্রেণীর মানুষের খাদ্য তালিকায় সবচাইতে কমন ও জনপ্রিয় একটি সবজি।
বাংলাদেশে ভাত ও রুটির বিকল্প হিসেবে অনেকে আলু খেয়ে থাকেন।
বিশেষ করে বাজারে যখন অন্য সবজির দাম বেড়ে যায় নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে তখন এটি অনেক সময়ই অন্য সবজির বিকল্প হয়ে ওঠে।
ভাতের সঙ্গে একটু আলুভর্তা বা ভাজি তখন নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিকল্প খাবার হয়ে দাঁড়ায়।
এছাড়া আলুর পুষ্টিগুণের কারণে পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকেরা বলে থাকেন যে, শিশুদের জন্য আলু একটি অত্যাবশ্যক খাবার।
আলুতে একদিকে যেমন ভাতের মতো শর্করা আছে, তেমনি সবজির মতো আঁশ, খনিজ লবণ, ভিটামিন ও উদ্ভিজ্জ প্রোটিন আছে।
ফলে সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশের মানুষের কাছে আলু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে।
সূত্রঃবিবিসি
বাঅ/এমএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন