যুক্তরাষ্ট্রে গতকাল কয়েকজন প্রবাসী মৃত্যুবরণ করেছেন। ছবিগুলো ফেসবুক থেকে সংগৃহিত
করোনায় ইতালিতে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যু।। সিঙ্গাপুরে একদিনে করোনা শনাক্ত ৩৮৬, ২০৯ জনই বাংলাদেশি!।। ব্রিটেনে করোনায় আরও দুই বাংলাদেশির মৃত্যু ।। নিউইয়র্কে আরও ৭ বাংলাদেশির মৃত্যু
নিউইয়র্কে আরও ৭ বাংলাদেশির মৃত্যু
করোনায় দেশে দেশে প্রবাসীদের মৃত্যু মিছিল এক.।। প্রাণঘাতী আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাত বাংলাদেশির প্রাণ হারানোর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ রাজ্যে ১৩১ বাংলাদেশি প্রাণ হারালেন। নিউইয়র্কে প্রাণ হারানোদের মধ্যে অর্ধেকই নারী। এসব মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে ১৩ এপ্রিল সোমবার রাত পর্যন্ত।
জানা গেছে, রোববার আপস্টেট নিউইয়র্কের বাফেলো সিটিতে মারা গেছেন একজন। এদিন ভার্জিনিয়ার উডব্রিজ শহরে মারা গেছেন ৭০ বছর বয়সী মুজাহিদুর রহমান। ভার্জিনিয়ায় এটি প্রথম বাংলাদেশির মৃত্যু ঘটেছে। জ্যামাইকা ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মনির হোসেনের স্ত্রী পেয়ারা হোসেন বেবী (৫৫) লং আইল্যান্ড জুইস হাসপাতালে, নরসিংদির সন্তান এডভোকেট হাসনা বেগম (৫৮) এলমহার্স্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
উল্লেখ্য, করোনার প্রকোপ শুরুর কদিন আগেই হাসনা বেগম নিউইয়র্কে এসেছিলেন সন্তানের সাথে কটা দিন কাটাতে।
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কুইন্স শাখার অন্যতম সহ-সভাপতি সমিরুল ইসলাম বাবলুর পিতা কক্সবাজারের শফিকুর রহমান (৬৪) ১৩ এপ্রিল সোমবার ইন্তেকাল করেছেন। লং আইল্যান্ডের জুইশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এর আগেরদিন মারা গেছেন আমেনা খাতুন (৫৫)। ১১ এপ্রিল শনিবার নিউইয়র্ক সিটির উডসাইডে বসবাসরত সাংস্কৃতিক সংগঠক রওশন আরা ফেরদৌস (৬১) মারা গেছেন মাউন্ট শিনাই হাসপাতালে। নিউইয়র্ক মারা যান বিজিত বাবু। বাংলাদেশ বিটিভি ,ও রেডিওর ,লোক সঙ্গীত শিল্পী বীনা মজুমদার আজ সকাল ৮ টায় নিউইয়ক এর জ্যামাইকা হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ গত ২৪ ঘণ্টায় নিউইয়র্ক সিটিতে মারা গেছে মোট ১৪৭ জন এবং করোনায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২ হাজার ৫০৪ জন। এরমধ্যে সস্রাধিক বাংলাদেশি রয়েছেন বলে সিটি স্বাস্থ্য বিভাগীয় কর্মকর্তারা জানান। নিউইয়র্ক স্টেটে মারা গেছে মোট ১০০৫৬। ১৩ এপ্রিল সোমবার রাত ১১টা পর্যন্ত সারা আমেরিকায় মারা গেছে মোট ২৩৬৪০ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৯৪১ জন।
করোনায় ইতালিতে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যু
করোনায় দেশে দেশে প্রবাসীদের মৃত্যু মিছিল দুই. ।। ইসমাইল হোসেন স্বপন,ইতালি ।। মৃত্যুপুরি ইতালিতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কিছুটা কমতির দিকে। গত কয়েকদিনে আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটোই কম। প্রবাসীরাও দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে জানা গেছে, ইউরোপের দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৮ বাংলাদেশি। তবে মোট কতজন বাংলাদেশি ইতালিতে আক্রান্ত হয়েছেন, তা জানা না গেলেও ৮ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে দেশটির বাংলাদেশি কমিউনিটি। যদিও বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইতালিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের পরই শক্ত অবস্থান বাংলাদেশি কমিউনিটির। সংগঠনটির সদস্য প্রবাসী সাংবাদিক ও কমিউনিটি নেতা তুহিন মাহামুদ দৈনিক আমাদের সময়কে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
তুহিন বলেন, ‘মারা যাওয়া ৮ বাংলাদেশির মধ্যে ৩ জনকে ধর্মীয় রীতিনীতি ও রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা মেনে দাফন হয়েছেন।’
যারা মারা গেছেন-
গত শনিবার মানিক মিয়া (৪১) নামে এক প্রবাসীর মৃত্যু হয় মিলানে। তিনি সুনামগঞ্জের বাসিন্দা ছিলেন। এর আগে গত বুধবার মারা যান মো. সালাউদ্দিন ছৈয়াল (৪২)। শরীয়তপুরের এ বাসিন্দা থাকতেন বেরগামোতে। একই এলাকায় মৃত্যু হয় মানিকগঞ্জের বাসিন্দা মিজানের। একই দিন রোমে মৃত্যু হয় আনোয়ার হোসেন হিরু (৭২) নামে পিরোজপুরের এক বাসিন্দার।
গত ২ এপ্রিল কুমিল্লার বাসিন্দা মজিবুর রহমানের (৪৬) মৃত্যু হয়। এর আগে গত ৩০ মার্চ মারা গেছেন অপু (৪২) নামে এক বাংলাদেশি। তিনি মিলানে বসবাস করতেন। দেশে তার বাড়ি নারায়ণগঞ্জে।
গত ২০ মার্চ মিলানের নিগোয়ারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় গোলাম মাওলা (৫৫) নামে এক প্রবাসীর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইতালির বাণিজ্যিক এলাকা মিলানে স্বপরিবারে বসবাস করে আসছিলেন। দেশে তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে। এ ছাড়া নাপোলিতে এক বাংলাদেশির মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে। তবে তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
মিলানের স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা আবদুস সোবহান জুনায়েদ তিন বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গোলাম মাওলা, অপু এবং মুজিবুর রহমান মজুুর জানাজা ও দাফন তার তত্ত্বাবধানে হয়েছে। মিলানের মুসলিম কবরস্থানে তিনজনকে দাফন করা হয়েছে।
মাওলানা জুনায়েদ আরও জানান, ইতালিতে করোনায় বিপর্যস্ত প্রবাসীদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলা কমিউনিটি। তাদের ফান্ড থেকে অসহায়দের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
এদিকে ইতালিতে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যুর ব্যাপারে জানতে দেশটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান শিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি।
অপরদিকে লকডাউনের কারণে দূতাবাসে যেতে পারছেন না প্রথম সচিব ইরিন ইসলাম এবং শ্রম ও কল্যাণ সচিব এরফানুল হক। দূতাবাস না যাওয়া পর্যন্ত কতজন মারা গেছেন তা বলা সম্ভব না বলে তারা জানিয়েছেন।
করোনা সংক্রমণ রোধে দেশটিতে লকডাউনের সময় ৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে এর আগে জরুরি কারণে কিছু কিছু এলাকায় লকডাউন তুলে নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দেশটির প্রায় ৬ কোটি নাগরিকদের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা, খাদ্যসামগ্রীর নিশ্চয়তার জন্য সামরিক বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। এ ছাড়া অর্থনৈতিক জীবন চাকা সচল রাখতে প্রত্যেকের জন্য বোনাস ঘোষণা করেছে ইতালি সরকার।
ইতালিতে এখন পর্যন্ত করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২০ হাজার ৪৬৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩৫ হাজার ৪৩৬ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫৯ হাজার ৫১৬।
সিঙ্গাপুরে একদিনে করোনা শনাক্ত ৩৮৬, ২০৯ জনই বাংলাদেশি!
করোনায় দেশে দেশে প্রবাসীদের মৃত্যু মিছিল তিন .।। মো. আব্দুর রহিম( বিপ্লব) ।। সিঙ্গাপুরে গতকাল সোমবার একদিনে সর্বাধিক ৩৮৬ জন করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২০৯ জনই বাংলাদেশি। এই নিয়ে দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২ হাজার ৯১৮ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে ৮৭৪ জন বাংলাদেশি রয়েছেন।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গতকাল একদিনে দেশটিতে মোট ৩৮৬ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এই নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৯১৮ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ৫৮৬ জন।
গতকাল করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬৫ বছর বয়সী একজনের মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সিঙ্গাপুরে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর একজন করোনাভাইরাস পজিটিভ ফলাফল পাওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করেন।
নতুন আক্রান্ত ৩৮৬ জন সবাই স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। ২৮০ জন পূর্বের ক্লাস্টারের কিংবা রোগীদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই অভিবাসীদের থাকার জায়গা ডরমিটরির সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। তবে ৯৪ জনের তথ্য এখনো অজানা।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ১ হাজার ১৫৮ জন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এর মধ্যে ২৯ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদেরকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া ১ হাজার ১৬৫ জনের অবস্থা ক্লিনিক্যালি ভালো। কিন্তু পরীক্ষায় করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ায় তাদেরকে অন্য রোগীদের কাছ থেকে আলাদা রাখা ও যত্নের জন্য কনকর্ড ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতাল, মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল, গ্লেনেগল হাসপাতাল এবং দ্য কমিউনিটি আইসোলেশন ফ্যাকাল্টি অ্যাট ডিজোর্টে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে দেশটির সরকার। গত সপ্তাহে ওই বিজ্ঞপ্তিতে সরকার জনগণকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এবং অতি প্রয়োজনীয় কাজ বাদ দিয়ে বাইরে না বের হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো বাদে অন্যান্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছিল।
ব্রিটেনে করোনায় আরও দুই বাংলাদেশির মৃত্যু
কবির আহমদ-শাহ আলাউর রহমান
সরকারি সূত্রে সঠিক কোন পরিসংখ্যান প্রকাশিত না হলেও স্যোশাল মিডিয়ার পরিসংখ্যানেও রয়েছে মতভেদ। করোনায় মৃতদের তালিকা করারও চেষ্টা করছেন সংবাদকর্মীরা। ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ৯০ জন বাংলাদেশির এই মহামারিতে মৃত্যু হয়েছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ইপ্সউইচের বাসিন্দা কবির আহমদ। তিনি গত ১২ এপ্রিল নিজ ঘরে তার মৃত্যু হয়। তার দেশের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার দরবেশপুর গ্রামে।অন্যদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মৃত্যু হয়েছে শাহ আলাউর রহমান (আলাউদ্দিন)। ইলফোর্ডে বেনটন রোড়ে বাসিন্দা আলাউদ্দিন গত ১২ এপ্রিল রবিবার লন্ডনের রমফোর্ডের কুইন্স হাসপাতালে তার মৃ্ত্যু হয়। তার বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার পাল গাও জাওয়ায়।
কানাডায় ৪ জন বাংলাদেশির মৃত্যু বেশ কয়েকজন আক্রান্ত
করোনায় দেশে দেশে প্রবাসীদের মৃত্যু মিছিল পাঁচ ।। কানাডার বিভিন্ন শহরে এ পর্যন্ত ৪ জন বাংলাদেশি ক্যানেডিয়ান মৃত্যুবরণ করেছেন । এছাড়াও টরন্টো ও মন্ট্রিয়ল শহরে আরও বেশ কয়েকজন আত্রান্ত রয়েছেন এর মধ্যে দু’জন স্বাস্থ্য কর্মীও রয়েছেন। ইতোমধ্যে দু’জন প্রবাসী সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন। যদিও ভয় শংকা এবং হতাশা প্রবাসীদের মধ্যে বিরাজ করছে।
সিবিএনএ/এসএস
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন