পলাশ পোড়েল-এর একগুচ্ছ কবিতা
———————————————————————
লালমাটির পথে বাউল মনোরথে অপূর্ব জগৎ
মেঠো পাহাড়- বনে , বাতাস জুড়ে পলাশ শিমুল,
পরাণবন্ধু বাঁশি বাজায়।মিঠানিয়া সুর…..
ধামসা মাদল চাঁদনী রাতে করছে বেয়াকুল।
মন ভেসে যায় , সুজন সখা, ডাকছে বহুদূর….
বুকের মধ্যে দোলা দিলো, একতারাটার সুর ।
আমার ক্যানভাসে নতুন ছবি, ফাগুন বনের সুখ,
পলাশের রূপে মন মজেছে, ঘুচেছে রুখা মাটির দুখ।
—————————————————————————
বর্ষাকে ছুঁয়ে থাকি
(১)
বৃষ্টি নামে থইথই আকাশে
মন খারাপ করলে
আষাঢ়ের কাছ থেকে কিছু স্মৃতি
ধার নেওয়া যায় ;
নেবো , আবার ফিরিয়ে দেবো ,
গোপনে গোপনে শিরায় শিরায়
জ্বালাবো , আবার নিভিয়ে দেবো ;
সহমত হচ্ছিলো মেঘ ….
এতটুকু বুকের জমি , তাতে কতো বড়ো স্বপ্ন
মরি হায় … ছড়িয়ে গেল টাপুর টুপুর !
উৎসবের রাত জেগে ওঠে লোহার বাসরে
রাস্তা ভাসছে সর্বনাশে , সর্বনাশ বেহুলার
তবু বুকের বিস্তারে কতো নষ্ট দিন , শোকতর্পণ ।
(২)
টুপটাপ অশ্রু যতো সবটুকু নেবো
আমাদের দুঃখের বারোমাস্যা এখন
রাঙতার মোড়কে লুকিয়ে রাখলাম ।
আঁচলের তলায় হে প্রিয় লখিন্দর
পারো তো ভেসে যাও …..
বৃষ্টি মুছে দেয় ক্লান্ত গাঙুরের জল
তুমি বিধবার সিঁথির প্রেমিক ।
ভিজতে ভিজতে আসুক
ঠোঁটে ঠোঁটে শস্য নিয়ে
এবং চাতক এবং তিতির ।
একটি পালকে সব কথা লেখা থাক
সবার জন্য নিবিড় বর্ষামঙ্গল
সবার জন্য বাউল মন
দু’হাতে সব বিলিয়ে দেবো ।
(৩)
একা থাকে অনতিদূরের
শাপলাশালুক দুঃখী মেয়ে
সেই মেয়েটির সেই চিঠিটি
আজও আমি লুকিয়ে পড়ি ।
স্বপ্ন মেখে অনেক ডানা
নীড় বেঁধেছে অনিকেতে
কেমন করে পেখম থেকে
ময়ূর দেবে বর্ণমালা ।
বৃষ্টি জানে বাউন্ডুলে কবির জীবন
আবাদ করা শস্য নিয়ে ওই পারে যাই
দু’পার ছুঁয়ে অন্যঘাটে , অন্য কোলে
আমরা ভাসি ,স্বপ্ন ভাসাই , নতুন জলে ।