বরিশালে মুখোমুখি প্রশাসন-আওয়ামী লীগ
- দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- সংঘর্ষে ওসিসহ আহত অর্ধশত, আটক ১২
- পৃথক ২ মামলা, মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহসহ আসামি কয়েকশ
- ১০ অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
- আইনি পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা বিসিসি মেয়রের
জহির খান (বরিশাল ব্যুরো ।। আগস্ট মাসের ব্যানার অপসারণকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বরিশাল নগরীতে। স্থানীয় প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। গতকাল নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। নতুন করে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নগরীতে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন, ১০ জন অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার একটির বাদি হয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান এবং অপরটির বাদি হয়েছে পুলিশ। ইউএনও মুনিবুর রহমানের করা মামলায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় ৩০-৪০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত কয়েকশজনকে আসামি করা হয়েছে। এর আগে বুধবার রাতভর র্যাব-পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে হামলার সাথে জড়িত মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে ফিরোজ, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অলিউল্লাহ অলি, নগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের আরও ১১ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়। এছাড়া ইউএনওর বাসভবনে হামলার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বাবুকে আটক করে পুলিশ। আটক করা হয় বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ শাহারিয়ার বাবুকে। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিকেলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম পিপিএম জানান, ইউএনওর সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া দায়ের হওয়া দুটি মামলায় ৪০ থেকে ৫০ জন নামধারী এবং কয়েক শতাধিক অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। ওসি আরও জানান, আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য ছিলো নগরীর কালীবাড়ি রোডের সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বাসভবনে দায়ের হওয়া মামলার আসামিরা আত্মগোপনে ছিলো। এজন্য সকাল ১০টার দিকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য সেখানে অবস্থান নেন। তবে পরক্ষণে নিশ্চিত হয় সেখানে আসামি নেই। সেখানে গিয়ে সেরকম কাউকে পাওয়া যায়নি এবং কাউকে সেখান থেকে আটকও করা হয়নি।
এদিকে বরিশাল নগরীতে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মাঠে থাকবেন অতিরিক্ত ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলার ঘটনার পর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বিজিবি ও অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পিরোজপুর ও পটুয়াখালী থেকে ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসেন। এছাড়া খুলনা জোন থেকে ১০ প্লাটুন বিজিবি বরিশালের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সামনে বুধবার রাতে শোক দিবসের ব্যানার খুলতে যান বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীরা। এ সময় ব্যানার খোলার কারণ জানা নিয়ে ইউএনও মুনিবুর রহমানের সঙ্গে সিটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসের কথা কাটাকাটি হয়। প্রশাসনিক কর্মকর্তার সঙ্গে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ওই সময় ইউএনওর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। পরে সেখানে উপস্থিত আনসার সদস্যদের সঙ্গে হাতাহাতি শুরু হলে উপস্থিত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ইউএনওর বাসায় হামলার চেষ্টা চালান। এ সময় আনসার সদস্যরা গুলি ছুড়লে প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসসহ চারজন আহত হন। সংঘর্ষের পর ইউএনও কার্যালয়ের সামনে পুলিশ অবস্থান নিলে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা ফের ইউএনওর বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে আহত হন বেশ কয়েকজন। গুলিবিদ্ধ ২৩ জনকে শেরে বাংলা মেডিকেলসহ অন্যান্যদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মনির হোসেন পেশকারের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত শ্রমিক লীগ কর্মী নাসির আলমসহ পুলিশের দুই সদস্যকে ভর্তি করা হয় জেলা পুলিশ হাসপাতালে। কোতোয়ালি থানার ওসি মো. নুরুল ইসলামের বুকেও একটি স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়েছে। তবে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হননি।
গুলিবর্ষণের পর থেকে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মধ্যরাত পর্যন্ত পুলিশের সাথে জেলা-মহানগর ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কয়েক দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের দাবি, এতে অন্তত তাদের আরও অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনার জেরে উপজেলা পরিষদের সামনের বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের ওপর ময়লা ও ময়লাবহনকারী গাড়ি দিয়ে রাস্তা আটকে দেয় সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীরা। একই সাথে ঘটনার পর রাত ১১টা থেকে সিটি মেয়র অনুসারী শ্রমিক লীগ নেতারা বরিশাল লঞ্চঘাট এবং বাসটার্মিনাল অবরোধ করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর সিটি মেয়রের নির্দেশে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্রমিক লীগ নেতারা অবরোধ তুলে নিলে বাস-লঞ্চ চলাচল শুরু হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলে রাত ২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান, রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান, র্যাব-৮ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক জামিল হাসান এবং জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারসহ অন্যান্যরা। এ সময় তাদের সামনে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমান জানান, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণের ভেতরে বিভিন্ন স্থানে শোক দিবস উপলক্ষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুকের ব্যানার-পোস্টার লাগানো ছিলো। রাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসব ছিঁড়তে আসে। রাতে লোকজন ঘুমাচ্ছে জানিয়ে তিনি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বৃহস্পতিবার সকালে এগুলো ছিঁড়তে বলেন। এরপর তারা তাকে গালিগালাজ করতে থাকে। শেষাবধি রাত সাড়ে ১০টা এবং ১১টায় দুই দফায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাসভবনে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে হামলা চালাতে শুরু করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করতে চাইলে বিক্ষুব্ধরা পুলিশের ওপরও চড়াও হয়। একপর্যায়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও র্যাবের সাথে তাদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
গণমাধ্যমে ইউএনওর এমন বক্তব্য দেয়ার পরপরই বুধবার মধ্যরাতে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বলেন, যে কাজ করতে গিয়ে আজকের এ ঘটনা, ওই কাজটি আমাদের রেগুলার কাজ। গতকাল আপনারা ছিলেন আমার সংবাদ সম্মেলনে তখন আমি ব্যানার নিয়ে স্টেটমেন্ট দিয়েছি, পুরোনো ব্যানার বা ভুঁইফোড় সংগঠনের ব্যানারগুলো সরিয়ে ফেলতে। এতে শহর পরিষ্কার হবে। আর আপনারা জানেন মনে হয়, আমার নিজের করা ব্যানারটিও আমি খুলে ফেলেছি। আর সেই ধারাবাহিকতায় পরিষ্কার করতে করতে তারা থানা কাউন্সিলে গিয়েছে। আপনারা দেখেছেন থানা কাউন্সিলের ভেতরে বিভিন্ন লোকজন, বিভিন্ন ব্যানার দেয়। আর যেখানে সিটি কর্পোরেশনের লোকজন কাজ করছিল সেটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসা না। ওখানে পুকুর আছে, যেখানে সাধারণ মানুষ গোসল করে, ওখানে মসজিদ আছে, ওখানে আরও অনেক অফিস আছে, ওখান থেকে পেছনে বসবাসকারী মানুষদের যাতায়াতের রাস্তাও রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা আমাকে যেটা জানিয়েছেন, ওখানে কাজ প্রায় শেষের পথে ছিলো, পরিষ্কার করে চলে আসবে তখন ইউএনও সাহেব বের হয়ে সিটি কর্পোরেশনের কর্মীদের বলেছে কার কাছে জিজ্ঞাসা করে সেখানে তারা গিয়েছে। কর্মীরা বলেছে, তাদের গালাগালি করা হয়েছে। আর এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওনার বাসায় হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু ওনার বাসার গেটের ভেতরে কি তারা ঢুকেছে। ওখানে আমাদের ১ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক ছিলো, তারপর প্রচার সম্পাদকের সঙ্গে সিনিয়রদের পাঠালাম সেখানে কি হয়েছে দেখার জন্য। মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ আরও বলেন, যখন তারা আমাকে বললো যে গুলি হচ্ছে, তখন আমার বাসায় আমি, আমাদের সিটি কর্পোরেশনের সিও, মহানগর আওয়ামী লীগের অনেক নেতা উপস্থিত ছিলো। আমি তাৎক্ষণিক একাই ঘটনাস্থলে চলে গেলাম। সিও সাহেবও পেছনে পেছনে রওনা দিলেন। আমি যখন ঘটনাস্থলে গিয়ে হেলমেট খুলে কর্মীদের বললাম তোমরা গেটের বাইরেই দাঁড়াও কেউ ভেতরে যেও না। এরপর একা থানা কাউন্সিলের গেট দিয়ে যখন ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করলাম এবং বললাম আমি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। তারা সে কথা শুনে অনবরত গুলি করা শুরু করলো। এর মধ্যে পেছনে যে নেতাকর্মীরা ছিলো তারা সবাই এসে মানবপ্রাচীর বানিয়ে আমাকে বাইরে নিয়ে এলো। তারপর ওখানে থেকে আমার খুবই খারাপ লাগছে, খুবই লজ্জা লাগছে। তাই আমি ওখান থেকে চলে আসছি। চলে আসার পরে শুনলাম আবারো গুলি হয়েছে। আমাদের প্যানেল মেয়র গাজী নঈমুল হোসেন লিটুকে রেখে আসছিলাম যাতে ওখানে অপ্রীতিকর কিছু না ঘটে। এছাড়া আমি গুলিবিদ্ধ হইনি, তবে আমাকে গুলি করা হয়েছে, আর সেগুলো আমার জ্যাকেটের কারণে শরীরের ভেতরে লাগেনি কিন্তু গায়ে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছি। আর গুলির সময় নেতাকর্মীরা সামনে চলে আসায় তাদের গায়েই গুলিগুলো লেগেছে। কতজনের গায়ে লেগেছে তা আমি বলতে পারবো না। কতজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন সে বিষয়েও এখন কিছু বলতে পারবো না।
তিনি আরও বলেন, মেয়র হিসেবে এভাবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না। আমি মেয়র হিসেবে তাহলে ব্যর্থ। ঘটনার অবশ্যই জোড়ালো তদন্ত চাইবো এবং অবশ্যই আমরা আইনের আশ্রয় নেবো। প্রধানমন্ত্রী আমাকে শপথ পড়িয়েছেন, আমার বাবা আছেন তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে, আমি আমার রেজিগনেশন লেটার দিয়ে দেবো।
অপরদিকে গতকাল বিকেল ৫টার দিকে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস জানান, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা উদ্দেশ্যমূলক। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসায় হামলার অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে এ ঘটনায় সাংগঠনিক ও আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর। চোখের সামনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিবিদ্ধ হতে দেখে ব্যথিত হওয়ার কথা বলেন সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান জানান, সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে উদ্ভূত পরিস্থিতি তাৎক্ষণিক মোকাবিলা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ইউএনওর বাসভবনে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। জড়িত অন্যদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি এ হামলার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে বলেও জানান পুলিশ কমিশনার।
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. সাইফুল হাসান বাদল বলেন, আগস্ট মাসে আমাদের প্রতিজ্ঞা হচ্ছে শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে সবাই মিলে বরিশালবাসীর সেবা নিশ্চিত করবো। এ সময় এরকম একটি ঘটনায় আমরা সবাই ব্যথিত, মর্মাহত। আমাদের পুলিশ কমিশনার বলেছেন, ঘটনার তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা চাই মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ ভালোভাবে অগ্রসর হোক, এগিয়ে যাক। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এদিকে, বরিশালের ঘটনায় কঠোর নজরদারি করছে সরকার। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ১৫ আগস্ট উপলক্ষে স্মরণসভায় অংশ নিয়ে বরিশালের ঘটনার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি এই অনুষ্ঠানে আসার আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আমি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গেও কথা বলেছি। পুলিশ জানিয়েছে তারা ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। দোষীদের ধরতে অভিযান চলছে। নেত্রীর নির্দেশে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না’, বলেন কাদের। তিনি বলেন, ‘এটা আওয়ামী লীগ, এটা বিএনপি নয়। নিজেদের দলের কেউ অপরাধ করলে শাস্তি দেয়ার দৃষ্টান্ত বিএনপিতে নেই। আওয়ামী লীগ আমলে শেখ হাসিনা এমন ভুরিভুরি দৃষ্টান্ত দিয়েছেন। আপন লোকদের শাস্তি দিয়ে, জেলে পাঠিয়ে প্রমাণ দিয়েছেন।’ -আমারসংবাদ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান