নৃতত্ত্ব গবেষকদের জন্য এই অঞ্চল খুবই আকর্ষণীয় কারণ এখানে প্রায় ১০০০-এর বেশি ভাষা প্রচলিত ছিল। এখন তা নেমে এসেছে ৮৫১-তে।
যে দেশের ৬০০ ভাষা ইউনেস্কোর বিপন্ন ভাষার তালিকায়!
এম. জেড ।। প্রায় ষাট হাজার বছর আগে থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগীয় দ্বীপরাষ্ট্র পাপুয়া নিউগিনিতে মানব বসতি শুরু হয়। এটি ওশেনিয়া অঞ্চলের অন্তর্গত। মেসোপটেমিয়া ও মিসরে যখন কৃষিকাজ শুরু হয় সে সময় পাপুয়া নিউগিনির কিছু জায়গায় বাগান করার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। পঞ্চাশ হাজার বছর আগে থেকেই এখানকার মানুষ ২,০০০ মিটার উঁচুতে বসবাস শুরু করেন।
সুসংগঠিত কৃষি ব্যবস্থা, হাঁড়, কাঠ ও পাথরের তৈরি নানা সরঞ্জাম ছিল এখানকার নিত্য ব্যবহার্য। মাটির তৈরি তৈজসপত্র, ঝিনুকের অলংকার ছিল তাদের জীবনযাত্রার অংশ।
ইউরোপের নাবিকরা পাপুয়া নিউগিনি সম্পর্কে জানতে পারেন সতের শতকের প্রথম দিকে। পর্তুগিজ ও স্পেনিশ নাবিকেরা এখানে আসা শুরু করেন। ১৫২৬ সালে পর্তুগিজ নাবিক জর্জি ডি মেনেজেস ভুল করে এখানে এসে এলাকার নাম দেন পাপুয়া এবং স্পেনিশ নাবিক ইয়াগিও আর্তিজ দে রেজেস ১৫৫৪ সালে দ্বীপের মানুষের সঙ্গে আাফ্রিকার গিনি এলাকার মানুষের সাদৃশ্য খঁজে পান বলে এর নাম দেন নিউগিনি। তবে নাবিকরা আসতেন মূলত ব্যবসার স্বার্থে। ১৮৭০-এর দশকে রাশিয়ান গবেষক নিকোলাই মিকলুখো মাকলাই নিউগিনির বিভিন্ন এলাকায় আদিবাসীদের সঙ্গে বসবাস করেন। তার লেখা থেকে অনেকেই পাপুয়া নিউগিনির আদিবাসীদের সম্পর্কে জানতে পারেন।
স্পেনিশ, পর্তুগিজ, জার্মান, বৃটিশ, জাপানিজ, ইন্দোনেশিয়া, অস্টেলিয়ানসহ নানা দেশের মানুষ এখানে এসেছেন এবং তাদের অনেকেই শাসনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন।
প্রায় ৮১ লাখ মানুষের এই দেশটি অসংখ্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের বসবাস। জনসংখ্যার শতকরা ১৩ ভাগ মানুষ শহরে বসবাস করেন। বাকি সবাই নিজস্ব গোত্রভিত্তিক এলাকায়। নৃতত্ত্ব গবেষকদের জন্য এই অঞ্চল খুবই আকর্ষণীয় কারণ এখানে প্রায় ১০০০-এর বেশি ভাষা প্রচলিত ছিল। এখন তা নেমে এসেছে ৮৫১-তে। তবে এসব ভাষায় যারা কথা বলেন তার অধিকাংশের জনগোষ্ঠী সংখ্যা ১০০০-এর মতো। কখনো একটি ছোট জনগোষ্ঠী বা একটি গ্রামে শুধু একটি ভাষার খোঁজ মেলে। পাবর্ত্য এলাকা বলে পারস্পরিক যোগাযোগ এদের মধ্যে আগে থেকেই কম। অনেক ভাষাই এখন চর্চার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকির মধ্যে থাকা ভাষার মধ্যে আছে মস্কনা, ইনিয়াই, ওয়াহগি, মুরিস ইত্যাদি। এঙ্গা ভাষাটি এখানে বেশি চলে তবে এর চর্চাকারী হচ্ছেন দুই হাজার মানুষ। এর পরে বেশি ব্যবহৃত ভাষা হলো মেলপা এবং হুলি।
তরুণ নাগরিকদের মধ্যে আদি ভাষার পরিবর্তে ইন্দোনেশিয়ান ভাষা প্রধান হয়ে উঠেছে। কিছু জায়গায় ইংরেজির চর্চা বেড়েছে। ইউনেস্কোর বিপন্ন ভাষার তালিকায় নাম উঠেছে পাপুয়া নিউগিনির ৬০০ ভাষা! -সারাক্ষণ
এস এস/সিএ
সর্বশেষ সংবাদ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন