রাজাকারের তালিকা মুক্তিযোদ্ধাদের নাম থাকাকে রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তালিকা প্রকাশ করতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় গোলমাল করে ফেলেছে। এটি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। খুবই খারাপ একটি কাজ হয়েছে। এটি কোনোভাবেই রাজাকারের তালিকা নয়। গণভবনে গতকাল বুধবার আওয়ামী লীগের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির শেষ সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের কাছে সর্বজন শ্রদ্ধেয়, জাতির কাছে সর্বজন শ্রদ্ধেয়। তালিকার ভুলটি অজ্ঞতাপ্রসূত হয়েছে, ঠিক করে দেওয়া হবে। যারা এই ভুলের সঙ্গে জড়িত তাদের সাজা হবে। যারা যুদ্ধ করেছেন, শহীদ হয়েছেন, তাদের পরিবারকে যদি রাজাকার শব্দটি শুনতে হয়- এটি খুব কষ্টের বিষয়। আমি বলব- যারা দুঃখ পেয়েছেন, তারা শান্ত হোন। ধৈর্য ধরুন। যারা মুক্তিযোদ্ধা, তারা কোনো দিনও রাজাকারের তালিকায় থাকতে পারেন না- এটি হতে পারে না।
তিনি বলেন, এ তালিকায় এক হাজার জনের মতো মুক্তিযোদ্ধার নাম দেওয়া হয়েছে। সেটি কীভাবে ওই তালিকায় চলে গেল তা এক রহস্য। রাজাকারদের তালিকা গেজেট করা আছে। আলবদর, আলশামস- এদের তালিকা গেজেট করা আছে। আমরা যখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল করলাম, ওই গেজেট থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কাজেই যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তা কোনোভাবেই রাজাকারের তালিকা নয়। যাদের ওই সময়ে জন্ম হয়নি, এমন অনেকেরই নাম তালিকায় ঢুকে গেছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীকে বলেছিলাম- তালিকাগুলো নিয়ে ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করতে। এত তাড়াতাড়ি এটি প্রকাশ করার কথা নয়। তাও বিজয় দিবসের আগে। এত সুন্দর বিজয় দিবস উদযাপন করলাম, কিন্তু শহীদ পরিবার, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এতে কষ্ট পেয়েছে। তালিকাটি সময় নিয়ে প্রকাশ করা দরকার ছিল। আসলে আমিও ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম, সবদিক সময়মতো খেয়াল রাখতে পারিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, রাজাকারদের তালিকা করতে গিয়ে স্বাধীনতার পর যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল তাদের তালিকাও ঢুকে পড়েছে। যারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিল, তাদের অনেককেই পাকিস্তান দুর্বৃত্ত-সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে মামলা দিয়েছিল। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের নেতাদের তালিকা ধরে ধরে কষ্ট দিয়েছে। এরশাদের সময়ও এটি ব্যবহার করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জে সন্ত্রাসীর তালিকায় ১ নম্বর নাম ছিল জিল্লুর রহমানের। আমরা ক্ষমতায় এসে এটি বাতিল করতে বলেছিলাম।
সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভালো কাজ করলে সবার সহযোগিতা পাওয়া যায়। সবার সহযোগিতায় উন্নয়নের চাকা ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। যার ফল জনগণ পাচ্ছে। দারিদ্র্যের হার ১৬-১৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে সরকার সক্ষম হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা যে উন্নয়ন করেছিলাম ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে নষ্ট করে দিয়েছিল। ২০০৯ সালে আমরা ক্ষমতায় এসে আবার উন্নয়নগুলো নতুন করে শুরু করলাম। কাজেই বাংলাদেশের যে উন্নয়ন শুরু হয়েছে তার অগ্রযাত্রা কেউ থামিয়ে রাখতে পারবে না। সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে বাংলাদেশ অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে।
সূত্রঃ আমাদের সময়
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন