দেশের সংবাদ ফিচার্ড

জন্মের পর চুরি, সাত মাস পর সেই নবজাতক মায়ের কোলে

জন্মের পর চুরি, সাত মাস পর সেই নবজাতক মায়ের কোলে

কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালের বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারের সামনে থেকে গত বছরের ১৩ আগস্ট সকালে মাত্র চার দিন বয়সের শিশু চুরির ঘটনা ঘটে। নবজাতকটি ওই হাসপাতালেই জন্ম নিয়েছিল। ওই দিন হাসপাতালের বারান্দায় নানির কোলে ছিল নবজাতক। বহির্বিভাগে ‘বড় ডাক্তার’ দেখানোর টিকিট কেটে দেবেন বলে লোভ দেখিয়ে নানির কোল থেকে চার দিনের ওই শিশুকে নিয়ে পালিয়ে যান বোরকা পরিহিত এক নারী।

নবজাতকের নানি তখন বিষয়টি তাঁর মেয়েকেও জানাননি।

এ ঘটনার পরদিনই কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ দমন আইনে একটি মামলা করেন শিশুটির বাবা। কিন্তু প্রায় তিন মাস চেষ্টা করেও শিশুটিকে উদ্ধার করতে পারেনি থানা-পুলিশ। পরবর্তী সময়ে শিশুটির বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), কুমিল্লাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।

চুরি হওয়ার প্রায় সাত মাস পর অবশেষে সেই নবজাতককে উদ্ধার করেছেন পিবিআইয়ের সদস্যরা। উদ্ধারের পর শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে মায়ের কোলে। এ সময় নাড়িছেঁড়া ধনকে বুকে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা। আর এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুই নারীকে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পিবিআই কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান মামলার তদন্তকারী কর্তকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মফজল আহমদ খান। এ সময় পিবিআই কুমিল্লার পুলিশ পরিদর্শক হিলাল উদ্দিন, মঞ্জুর আলম, বিপুল চন্দ্র দেবনাথসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চুরি হওয়া ওই কন্যাশিশু কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বারোপাড়া এলাকার জসিম উদ্দীন ও আয়েশা আক্তার কলি দম্পতির সন্তান। ঘটনার সময় নবজাতককে দেখাশোনার জন্য আয়েশা আক্তার কলির সঙ্গে তাঁর মা নুরজাহান বেগম ওই দিন হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন। নানির কাছ থেকেই কৌশলে শিশুটিকে চুরি করা হয়।

পুলিশ পরিদর্শক মফজল আহমদ খান বলেন, এ চুরির ঘটনার নেপথ্যে ছিল শিশুটির বাবা জসিম উদ্দীনের বাড়ির ভাড়াটিয়া পারভীন আক্তার। তিনি ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে বিক্রি করে দেন জেসমিন আক্তার নামের আরেক নারীর কাছে। জেসমিন ছেলেসন্তান মনে করে শিশুটিকে ক্রয় করেছিলেন, পরে দেখতে পান শিশুটি মেয়ে। গত সোমবার রাজধানী ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে শিশুটিসহ জেসমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ওই দিন রাতে তাঁর দেওয়া তথ্যে জসীমের বাড়ি থেকে পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জেসমিন জেলার বরুড়া উপজেলার পূর্ব পদুয়া গ্রামের আব্দুল মালেকের মেয়ে। আর পারভীন জেলার মুরাদনগর উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের জাকির হোসেনের স্ত্রী। তাঁদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

শিশুর মা আয়েশা আক্তার কলি বলেন, ‘সাত মাস শুধু আল্লাহর কাছে কেঁদেছি। বিশ্বাস ছিল আল্লাহ আমার নাড়িছেঁড়া ধনকে ফিরিয়ে দেবেন। অবশেষে সন্তানকে ফিরে পেয়েছি।’

সূত্র: কালের কন্ঠ


CBNA24  রকমারি সংবাদের সমাহার দেখতে হলে
আমাদের ফেসবুক পেজে ভিজিট করতে ক্লিক করুন।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল ভিজিট করতে পোস্ট করুন।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন