কিসিঞ্জারের কূটচাল: ঢাকা দখলের পথে মুক্তিবাহিনী
একাত্তরের (৯ ডিসেম্বর) আজকের এই দিনে মিত্রবাহিনী দ্রুত ঢাকা পৌঁছার জন্য চারদিক থেকে অগ্রসর হয়। আগে একটি বাহিনী যায় আশুগঞ্জ, দাউদকান্দি ও চাঁদপুর। পশ্চিমে আরেকটি বাহিনী পৌঁছে মধুমতি নদীর তীরে। আরেকটি বাহিনী কুষ্টিয়া মুক্ত করে যায় গোয়ালন্দ ঘাটের দিকে। হালুয়াঘাট থেকে এগিয়ে আসা বাহিনীও পৌঁছে যায় ময়মনসিংহের কাছাকাছি।
মুক্তিযোদ্ধাদের অপ্রতিরোধ্য লড়াইয়ে মুক্ত হতে থাকে দেশের নানা জনপদ। ৯ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী বীরদর্পে দেশের নানা জায়গায় বিজয় কেতন উড়িয়ে ঢাকা দখলের জন্য এগিয়ে আসতে থাকে। পাকিস্তানি সেনারা চারদিক থেকে অবরুদ্ধ। এ অবস্থায় শেষ কূটচাল চালেন ড. হেনরি কিসিঞ্জার। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন এই নিরাপত্তা উপদেষ্টা প্রেসিডেন্ট নিক্সনকে পরামর্শ দেন সপ্তম নৌবহরকে বঙ্গোপসাগরের দিকে যাত্রা করতে।
একাত্তরের (৯ ডিসেম্বর) আজকের এই দিনে মিত্রবাহিনী দ্রুত ঢাকা পৌঁছার জন্য চারদিক থেকে অগ্রসর হয়। আগে একটি বাহিনী যায় আশুগঞ্জ, দাউদকান্দি ও চাঁদপুর। পশ্চিমে আরেকটি বাহিনী পৌঁছে মধুমতি নদীর তীরে। আরেকটি বাহিনী কুষ্টিয়া মুক্ত করে যায় গোয়ালন্দ ঘাটের দিকে। হালুয়াঘাট থেকে এগিয়ে আসা বাহিনীও পৌঁছে যায় ময়মনসিংহের কাছাকাছি।
সপ্তম নৌবহরের যাত্রার খবরে পাকিস্তান ও তাদের পশ্চিমা মিত্রদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। তারা ভেবেছিল সপ্তম নৌবহর আসার কথা শুনে যৌথবাহিনীর মনোবল ভেঙে যাবে। সেই সুযোগে একেবারে শেষলগ্নে চরম আঘাত হেনে বাঙালির মুক্তি সংগ্রামকে তছনছ করে দেয়া হবে। কিন্তু ঘটনা ঘটে উল্টো। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এই কথা জেনে মুক্তিযোদ্ধারা আরও বিপুল উৎসাহে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে।
সেদিন বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের আরেক পরীক্ষিত মিত্র, তৎকালীন পৃথিবীর অন্যতম পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন সপ্তম নৌবহর পাঠানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায় এবং এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয়। ফলে সপ্তম নৌবহরের যাত্রা শুরু হওয়ার পরই থেমে যায়।
এদিনে জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রতিনিধিত্বকারী পাকিস্তানি দলের নেতা মাহমুদ আলী দেশে ফিরে এসে দেখা করেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সঙ্গে। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সোভিয়েত ইউনিয়নের উচিত বিশ্ব শান্তির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ভারতের পাশ থেকে সরে দাঁড়ানো। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘নির্ভীক ও ঐতিহাসিক সমর্থনের জন্য পাকিস্তান তাদের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।’
কুমিল্লার দাউদকান্দি এই দিনেই মুক্ত হয়। দাউদকান্দি মুক্ত হওয়ার ভেতর দিয়েই শুরু হয় মেঘনা তীরের অঞ্চলগুলো মুক্তির প্রক্রিয়া। দিন না পার হতেই মেঘনার পুরো পূর্বাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা শত্রুমুক্ত হয়। একইদিনে স্বাধীন দেশের পতাকা ওড়ে গাইবান্ধা, গাজীপুরের শ্রীপুর, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ ও নেত্রকোনায়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কার্যত বন্ধই ছিল। তারপরও ৯ ডিসেম্বর এক সরকারি ঘোষণায় বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভারতীয় হামলার অজুহাতে বন্ধ করে দেয়া হয়। -সূত্রঃ সারাক্ষণ (কিসিঞ্জারের কূটচাল: ঢাকা দখলের পথে মুক্তিবাহিনী )
-এসএস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন