নোবেলের ‘মাতলামি’ কাণ্ডে স্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে একটি অনুষ্ঠানে সংগীতশিল্পী মাইনুল আহসান নোবেল মঞ্চে উঠে একটি গানের পর মাইক্রোফোনের স্ট্যান্ড ভেঙে ‘অসংলগ্ন’ আচরণ শুরু করেন। এ ঘটনার পর ওই অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের ৫০ বছর পূর্তি ও সুর্বণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ঘটেছে এই ঘটনা। মঞ্চে ‘অসংলগ্ন’ আচরণ করায় জুতা ও পানির বোতল ছুড়ে মারেন দর্শকরা। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নোবেলের স্ত্রী সালসাবিল মাহমুদ। আজ শুক্রবার ফেসবুকে তিনি প্রতিক্রিয়া জানান।
ফেসবুকে সালসাবিল লিখেছেন, ‘সকাল থেকে শুরু করে ডজনখানেক নিউজ। সমস্যাটা যদি শারীরিক হতো হয়তোবা মানুষ কমেন্টে দেওয়ার মাহফিল বসাত। কিন্তু সমস্যাটা মানসিক তাও আবার মাদকঘটিত। যে রকম মানুষ নোবেল কোনো দিনই প্রথম থেকে ছিল না । এটা আমার নিজেরই দীর্ঘদিনের দেখা। শোয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি দাঁড় করিয়ে নোবেলের নামাজ পড়া। সা রে গা মা পা চলাকালীন পুরো শুটিং ইউনিটকে বসিয়ে রেখে নামাজ পড়া আর সবার সঙ্গে অমায়িক ব্যবহার।’
তিনি আরও লেখেন, ‘সে মানুষটা এখন নিজের কার্যকলাপে নিজেই নিজেকে চিনতে পারে না। নিজের নিরহংকার রূপকে ঢেকে পরিবার ও ভক্তবৃন্দদের কাছে নিজের অস্বাভাবিক রূপ প্রকাশের দীর্ঘ প্রচেষ্টা।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিও এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের ৫০তম বর্ষপূর্তি উদযাপন করতে সংগীতশিল্পী নোবেলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ওইদিন রাত ৯টার দিকে মঞ্চে গান পরিবেশনের কথা ছিল নোবেলের। কিন্তু তিনি মঞ্চে ওঠেন রাত ১১টা ২০ মিনিটে।
মঞ্চে উঠে নোবেল তার চশমা খুলে পাঞ্জাবির কলারে রেখে বলেন, ‘দ্বিতীয়বার কুড়িগ্রামে আসলাম। এর আগে এসেছিলাম তোমাদের সঙ্গে দেখা হয়নি। সুদূর ইন্ডিয়ার বর্ডার লাইনে থেকে গেছিলাম। তোমাদের কারও সঙ্গে দেখা হয়নি। এবার দেখা হলো আলহামদুলিল্লাহ।’
আরও পড়ুন:মঞ্চে নোবেলের মাতলামি, জুতা-বোতল ছুড়ল দর্শকরা
এরপর তিনি তার চশমা খুঁজতে থাকেন আর চিৎকার করে বলেন, ‘আমার চশমা কই।’ পরে পাঞ্জাবির কলার থেকে চশমা নিয়ে চোখে দিয়ে ‘সে যে আমার জন্মভূমি’ গানটি পরিবেশন করেন।
গান শেষে দর্শকেরা যখন উল্লাস করছিলেন, তখন নোবেল তাদের চুপ থাকতে বলে মাইক্রোফোনের স্ট্যান্ড আছড়াতে থাকেন এবং ভেঙে ফেলেন। এরপর তিনি গান ধরেন ‘কারার ওই লৌহ কপাট’। গানের একপর্যায়ে টলতে টলতে বসে পড়েন নোবেল।
এ সময় দর্শকেরা ক্ষেপে গিয়ে পানির বোতল ও জুতা দিয়ে ঢিল ছুড়তে থাকেন। পরে মঞ্চে থাকা আয়োজকদের কয়েকজন এসে নোবেলকে সরিয়ে নিয়ে যান। এমন দৃশ্যের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত নোবেলের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এত বড় মাপের একজন শিল্পী এভাবে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মঞ্চে উঠবেন আমরা আয়োজকেরা ভাবতে পারিনি। আয়োজকদের পক্ষ থেকে আমরা অনুষ্ঠানে আগত দর্শক ও সুধীজনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছি।’ -আমাদের সময়