শনিবার থেকে সারাদেশে চা শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতি
বর্তমান বাজারমূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ৩০০ টাকা মজুরি চুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে শুক্রবার মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ২২টি চা বাগানে ৪র্থ দিনের মতো সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালিত হয়। দাবী না মানায় শনিবার (১৩ আগস্ট) থেকে সারাদেশে একযোগে চা শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল। একযোগে দেশের ১৬৭টি চা বাগানে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে এই কর্মবিরতি পালিত হবে।
চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা জানান, প্রতি দু’বছর অন্তর চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির চুক্তি হওয়ার কথা। বর্তমানে মজুরি চুক্তির মেয়াদ প্রায় ১৯ মাস উত্তীর্ণ হয়েছে। চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সংগঠন মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্টরা এবিষয়ে কোন কর্ণপাত করছেন না। ফলে চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রিয় ও বিভিন্ন ভ্যালী কমিটির উদ্যোগে গত কয়েকদিন যাবত দু’ঘন্টা করে চা বাগান সমুহে কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ সমাবেশ পালন করা হয়।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন মনু-দলই ভ্যালী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাস পাইনকা বলেন, ৩০০ টাকা মজুরি, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন সুবিধাসহ ১২০টি পয়েন্টে আমরা ইতিপূর্বে লিখিত দাবি জানিয়ে আসছি। তবে মালিকপক্ষ এই দাবি না মানার কারণে মজুরি বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে বারবার কথা বলেও কোন কার্যকরী উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। তিনি আরও বলেন, মজুরি বোর্ডের কাছে আমাদের প্রস্তাব হলো দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা নুন্যতম করতে হবে আর মজুরি বোর্ড ১২০ টাকা করে যে চুড়ান্ত করেছে বা গেজেটের অপেক্ষায় সেটিরও নিন্দা জানিয়েছি। শনিবার (১৩ আগস্ট) থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালনে সবধরণের প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে।
এদিকে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিক নেতাদের নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকালে সমঝোতা বৈঠক করেছে শ্রীমঙ্গলস্থ বিভাগীয় শ্রমদপ্তর। সমঝোতা বৈঠকে মালিক পক্ষ না থাকায় আন্দোলন স্থগিত না করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন। বৈঠকে বিভাগীয় শ্রমদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি পঙ্কজ কন্দ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পালসহ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাতটি ভ্যালী কমিটির সভাপতিরাও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পেট খালি থাকলে প্রয়োজন পড়লে মানুষ আইনের বাইরে যায়। আমরা সেখানে আইন মেনেই আন্দোলন করছি। প্রায় ১৯ মাস ধরে মালিক পক্ষের সাথে আলোচনা করলেও আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। চা শ্রমিকরা কি নিদারুন কষ্টে আছেন তা মালিক পক্ষ ও সরকারকে বোঝা উচিত। আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতি পালন করবো।
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান