সুব্রত দেবনাথ-এর কবিতা
কোরাস
আমি হারিয়ে যাই
মুঠো ফোনে স্ক্রল করতে করতে
ভুলে যাই দিন তারিখ
অযথা কাজে ব্যস্ত থাকি
সময়কে দেখাই লাল চোখ,
জীবনকে উপেক্ষা করে
ডেকে আনি স্বেচ্ছামৃত্যু
তবু বেশ আছি
আঠাশ দিনের প্যাকেজে
জ্ঞান কে অজ্ঞানে ঢেকে
সমবেত কোরাসে ডুব দিয়েছি
আধুনিক মায়াজালে ।
জৈষ্ঠের অসহ্য দুপুর।
গ্রামের মেঠো পথ এখন কংক্রিটে বাঁধা
পাশ দিয়ে বয়ে গেছে চম্পাবতী
নির্জন বাঁশঝাড়ে
চেনা সুরে গান ধরেছে
অচিন বাঁশিয়াল –
“আমার হাত বান্ধিবি, পা বান্ধিবি
মন বান্ধিবি কেমনে….. “মরুঝড় এখানে হয় না,
তাই আজও পল্লী সুরে শান্তি খুঁজে পাই
বাঁশের মাচায় বসে
ক্লোরোফিলের ছায়ায়।
রায়ডাকের পাশে কাশবন
নির্ধারণ করে শরৎ বসন্তের মাপকাঠি,
রোজনামচার জীবন শৈলী
নতুন পাতা থেকে রংচটকা দেওয়াল হয়,
সংসার আর সন্ন্যাসের
পার্থক্য বুঝিনি
সপ্তজন্মের বহু আকাঙ্খিত জীবণ
শুধু চলে সময়ের ঘুনসি গলায় নিয়ে
নৈরাশ্য মৃত্যুর পথে ।
সম্পর্কের টানাপোড়েন শেষ
একটি চুক্তিপত্রের স্বাক্ষরে ।
না আমার তাতে অভিযোগ নেই
অভিযোগ নেই তোমার ব্যাক্তিগত সিদ্ধান্তে
প্রথম প্রেমালাপে রোজনামচার মোহিত অনুভব
টাটকা বাঁধনের টান বুঝতে পারি,
নির্দ্বিধায় তোমার ভালোবাসা
কৃষ্ণচূড়ার মাথায় নির্জনে আজও ম্লান,
কুয়াশার সকালে চাঁদ কে জড়িয়ে উষ্ণ চুম্বন
চায়ের কাপে সূর্যমুখীর শেষ হাসি
অকপটে আজও দূরত্ব কমিয়ে আনে,
আবার, নিঃশব্দে জানান দেয় চতুষ্কোণের
অস্থির কথাবার্তা
এখনও তোমার চিঠি আসে
সন্তপর্ণে পড়ি,
আর কফিন বন্দি সম্পর্কের উপর দাঁড়িয়ে ভাবি
কেন এই বিচ্ছেদ?
বাঁ দিকে গভীর খাঁদ
পরিচর্যার অভাবে
তা ক্রমশ বড় হয়ে চলছে।
দায়িত্ব , কর্তব্য, স্বজনপোষন
হারিয়ে যাওয়া, ফিরে পাওয়া
আষ্টেপৃষ্ঠে প্রভাব ফেলছে
অপ্রকাশিত ইচ্ছা ও প্রকাশিত কর্মে,
ব্যস্ততার যাপনে মেপে
দেখা হয়নি তার গভীরতা
আনন্দ বিষাদে কাটছিল সময়
পথের বাঁকে না পড়লে বুঝতাম না
ভেতরের খাঁদ কত গভীর রূপ নিয়েছে ।