আদরিণী মা আমার
-বিশ্বজিৎ মানিক
মাগো তুমি চলে গেছ আজ – অনেক দুরে
পাঁচটি বছর হয়ে গেলো মা – ডাকিনী প্রাণ ভরে।
সেদিন ছিল আঠারো জুন – বৃহস্পতিবার
শোক সাগরে ভাসিয়ে তুমি – দিয়েছিলে ভবপার।
শরীর তোমার খারাপ হলে – নিয়ে যাই ডাক্তার খানায়
সুস্থতা আর আসবেনা ফিরে – জানা যায় পরীক্ষায়।
অন্তিম কালে ধরা পড়ে মাগো – হয়ে গেছে ক্যান্সার
একটুখানি সময়ও ছিলনা – তোমাকে চিকিৎসা করাবার।
ডাক্তার কহিলেন-নিয়ে যান বাড়ি – পুরো শরীর ছেয়ে গেছে
ওপারের ডাক, এসে গেছে বুঝি – যাবার সময় যে খুব কাছে।
যেকোন সময়, নিভে যাবে নাকি – জীবন প্রদীপ খানি
তাইতো সেদিন,তোমাকে আমরা – বাড়িতেই ফিরায়ে আনি।
এতো নিরবে কিভাবে ছড়ায় – দুরারোগ্য এই ব্যাধি?
তোমার শরীরেই বসবাস করে – খেলো বুঝি নিরবধি?
তুমিও বুঝনি কিংবা বুঝাতে চাওনি – আমাদের
হয়তোবা বুঝেছিলে, ভেবেছিলে – কি প্রয়োজন অপচয় অর্থের?
তোমার ছেলেরা রোজগারি ছিল – মাগো তোমার আশীর্বাদে
মেয়েরাও তোমার, কম কিবা যায় – খাটো নয় কেহ সম্পদে।
তবে কেন তুমি নিরবে রহিলে – হলোনা কেন এর প্রকাশ?
যখন জানা হলো, ফুরালো সময় – ছিল না মা অবকাশ।
শেষ ক’টা দিন ঘুমিয়েছিলাম – একই বিছানায়
কবে যে ছিলাম, তোমার সাথে – শৈশবের দিনগুলোয়?
স্মরণে আসে না, সেই দিনগুলো – ছিলাম কখন পাশে?
সুখের দিনগুলো, আমার জীবনে – আর কি কখনো আসে?
মেঝ ছেলে, আমি ছিলাম – তোমার খুবই আদরের
বিশাল হৃদয়, ছিল মা তোমার – গভীরতা যেন সাগরের।
আমিই ছিলাম,একমাত্র তোমার- দুশ্চিন্তার কারণ
ভাবনায় ছিল শুধু , কিভাবে কাটাবো – সুন্দর জীবন?
দুই ছেলে তোমার, উকিল হয়েছে – উপার্জন ভালো তাদের
সরকারি চাকুরে, সীমিত বেতন – তোমার মেঝ ছেলের।
বলেছিলে তুমি, দুই ছেলে ডেকে – তোমরা দেখিবে তাকে
সেও যেন বাচা! তোমাদের মতো – জীবন কাটায় সুখে।
দুই ভাই মিলে, দিয়েছিল কথা – চিন্তার নেই কারণ
ভাই তিনজন, মিলেমিশে আমরা – কাটিয়ে দেবই জীবন।
আশীর্বাদ করো,মাগো তুমি – প্রাণ ভরে আমাদের
সমস্যা কখনো হতে দেবোনা – তোমার মেঝ ছেলের।
পাঁচটি বছর হয়ে গেলো মা – তুমি নেই সকাশে
চাঁদ তাঁরা হয়ে, দেখো মাগো তুমি – বসে ঐ দুর আকাশে।
তোমার ছেলেরা, সকলেই ভালো – আছে মিলেমিশে
মেয়েরাও তোমার, ভাইদেরে তারা – প্রাণ ভরে ভালোবাসে।
১৮/০৬/২০২০ খ্রিস্টাব্দ।