কমলগঞ্জে নদী পাড়ে শরতের শুভ্রতা ছড়াচ্ছে কাশফুল
প্রকৃতিতে শরতের আগমনী বার্তা জানিয়ে দেয় কাশফুল। শরৎকাল মানেই সাদা রঙের খেলা। এ সময় নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা উড়ে বেড়ায়। সবুজ ঘাসের ভেতর মাথা উঁচু করে হাওয়ায় দোল খায় পালকের মতো নরম ধবধবে সাদা কাশফুল। শারদীয় এ ঋতুতে কাশফুল ফোটে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে প্রাণ-প্রাকৃতিতে। নদীর ধার, পুকুরে পাড় কিংবা বিস্তীর্ণ বালুচরে বড্ড অবহেলায় ফোটে কাশফুল। লাগে না কোনো যত্ন-আত্তি। তারপরও দূর থেকে কাশবনে তাকালে মনে হয়, শরতের সাদা মেঘ যেন নেমে এসেছে ধরণির বুকে। একটু বাতাস পেয়ে দলে দলে কাশফুল যখন এদিক-ওদিক মাথা নাড়ায়, তখন মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই।
এমন দৃশ্যের মেলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদী পাড়ের কয়েকটি স্থানে। কমলগঞ্জ পৌরসভার দক্ষিণ কুমড়াকাপন এলাকায় ধলাই নদীর পুরাতন ব্রীজ সংলগ্ন নদীর পাড়ে, গোপালনগর ও বড়গাছ এলাকায় নদীর চরসহ বেশকয়েকটি স্থানে প্রচুর কাশফুল ফুটেছে। স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীরা এখানে আসছেন। কেউবা আনন্দে হারিয়ে যাচ্ছেন কাশবনে। কেউ তুলছেন ছবি। কেউবা হাত বুলিয়ে নিচ্ছেন কাশফুলে। বিশেষ করে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেশি দেখা যায়।
গোপালনগর এলাকায় ধলাই নদীর চরে কাশফুল দেখতে আসা পুষ্পিতা দেব, ইমু আক্তার ও ঐশি দেব বলেন, ‘কাশফুলের সমারোহে বিকালের বাতাস যেন শীতের আগমনের বার্তা দিচ্ছে। কাশফুলের মুগ্ধতায় আমাদের এখানে আসা। শৈশবের স্মৃতিগুলোও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। এই কাশফুল গুলোর সঙ্গে ছবি তুললে ছবিগুলোও অনেক সুন্দর হয়। এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।’
দক্ষিণ কুমড়াকাপন এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী পাপন সরকার বলেন, ‘কাশফুল ছাড়া শরৎ পরিপূর্ণ হয় না। ধলাই নদী তীরে প্রতি বছরই কাশফুল ফোটে। কিন্তু দুঃখের বিষয় অনেকেই ফুল ছিঁড়ে নিয়ে যায় আবার কেউ কেউ গরুর খাবার হিসেবে এগুলো কেটে নিয়ে যেতে চায়।’
কমলগঞ্জ জীব বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি মঞ্জুর আহমদ আজাদ মান্না জানান, ঋতুপরিক্রমায় এখন শরৎকাল। আর সেই শরৎকালের বৈশিষ্ট্য কাশফুল। আমাদের কমলগঞ্জে এটি অতিপরিচিত। ধলাই নদীর পাড় ও চরে এখন কাশফুলের সমারোহ। কাশফুলে রয়েছে বহুবিধ ব্যবহার। তাছাড়া কাশে অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। জ্বালানি বা অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের জন্য নয়, অন্তত সৌন্দর্য প্রেমি মানুষদের মনের চাহিদার জন্য হলেও কাশবন থাকা প্রয়োজন রয়েছে।