গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাআক্রান্ত আরও ৪ রোগী সুস্থ হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের বয়স ৮০ বছর। অন্য দুজনের বয়স ৬০ বছরের ওপরে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৫৩ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে করোনাআক্রান্ত একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। আজ সোমবার এ তথ্য জানান সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা । তিনি আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ তথ্য জানান।
মীরজাদী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ইতিমধ্যে করোনাআক্রান্ত আরও ৪ রোগী সুস্থ হয়েছেন। এঁদের মধ্যে একজনের বয়স ৮০ বছর। অন্য দুজনের বয়স ৬০ বছরের ওপরে।
মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, সর্বশেষ সুস্থ হওয়া চার ব্যক্তির কারও ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ছিল। এরপরও তারা সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাআক্রান্ত হিসেবে যাকে শনাক্ত করা হয়েছে, তাঁর বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। আজ পর্যন্ত দেশে মোট ৪৯ জন করোনাআক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯ জন সুস্থ হয়েছেন। মারা গেছেন পাঁচজন।
তিনি আরো জানান, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টিনে থাকা ৩৬ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৭২৫টি কল এসেছে আইইডিসিআরে।
প্রবাসীর বাড়ি থেকে ফিরে বিরামপুরের যুবকের মৃত্যু
দিনাজপুরের বিরামপুরে আজ সোমবার ভোরে সর্দি, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ফরহাদ হোসেন (৩২) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। পেশায় কৃষিশ্রমিক ফরহাদ উপজেলার জোতবানি ইউনিয়নের তফসি গ্রামের হানিফ উদ্দিনের ছেলে। ইতিমধ্যে গ্রামের পুরো এলাকায় পাহারা বসিয়েছে গ্রাম পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৮ মার্চ ফরহাদ হোসেনসহ তিনজন কাজের সন্ধানে কুমিল্লার লাকসামে যান। সেখানে ইতালিফেরত এক প্রবাসীর বাড়িতে থেকে কৃষিজমিতে কাজ শুরু করেন ফরহাদ। সেখানে যাওয়ার পাঁচ থেকে ছয় দিন পরই তিনি শরীরে জ্বর অনুভব করতে থাকেন। প্যারাসিটামল–জাতীয় ওষুধ সেবন করেন। তাতেও জ্বর না সারলে ২২ মার্চ ফরহাদ ও তাঁর সঙ্গীরা এলাকায় ফিরে আসেন। এলাকায় এসে স্থানীয় পল্লি চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নেন ফরহাদ। গায়ে জ্বর ও শুকনো কাশি নিয়ে আজ ভোররাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
ফরহাদের সঙ্গে কাজে যাওয়া মো. খলিলুর রহমান জানান, ‘কুমিল্লায় যে বাড়িতে আমরা থাকতাম, সেখানে আমাদের সঙ্গে রংপুর এলাকার অনেক শ্রমিক থাকতেন। কুমিল্লায় যাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে ফরহাদ জ্বরে পড়েন। তাঁর জ্বর সারছিল না দেখে আমরা একসঙ্গে বাড়িতে চলে আসি।’
দিনাজপুরের সিভিল সার্জন আবদুল কুদ্দুস জানান, ‘মৃত্যুর সময়ও ফরহাদের সর্দি, জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ছিল। করোনাভাইরাসেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে কি না আমরা নিশ্চিত নই। তবে আমরা জানতে পেরেছি, কুমিল্লায় এক ইতালিফেরত প্রবাসীর বাসায় থেকে কাজ করতেন ফরহাদ। আমরা ইতিমধ্যে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (আইইডিসিআর) বিষয়টি জানিয়েছি। তারা মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে আসছে। নমুনা পরীক্ষার পরে প্রকৃত বিষয়টি জানতে পারব। সেই সঙ্গে মৃত ব্যক্তির পরিবার থেকে শুরু করে পুরো এলাকার সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
যশোরে আইসোলেশন ওয়ার্ডে শিশুর মৃত্যু
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকা ১২ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। শিশুটির বাড়ি যশোর সদর উপজেলার এনায়োতপুর গ্রামে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সর্দি-কাশি-জ্বর-শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ছিল শিশুটি। তাকে গতকাল রেবাবার বিকেলে যশোর জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। করোনাভাইরাসের প্রাথমিক লক্ষণ থাকায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন করে রাখা হয়। আজ সকালে চিকিৎসক ওই ওয়ার্ড পরিদর্শনে গিয়ে শিশুটিকে মৃত অবস্থায় পান। এ সময় ওই ওয়ার্ডে শিশুর সঙ্গে স্বজনদের কেউ ছিলেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক চিকিৎসক হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘রোববার বিকেলে ওই শিশু সর্দি-কাশি-জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসে। তাকে ভর্তি করে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়েছে।’
টেলিমেডিসিন সেবায় মুগদা হাসপাতাল
টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। চার দিন ধরে এই সেবা দিচ্ছে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি এই হাসপাতাল। ২৬ মার্চ থেকে টেলিমেডিসিন ব্যবস্থার মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা এই সেবা নিতে পারবেন যেকোনো মানুষ।
গতকাল রোববার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক শহীদ মো. সাদিকুল ইসলাম জানান, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঢাকাসহ দেশের মানুষ এখন ঘরে অবস্থান করছেন। এমন পরিস্থিতিতে ২৬ মার্চ থেকে আমাদের হাসপাতাল টেলিমেডিসিন ব্যবস্থার মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু করেছে। আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি। ২৪ ঘণ্টা যেকোনো মানুষ এই সেবা নিতে পারবেন।’
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টেলিমেডিসিন বিভাগের ফোন নম্বর: ০১৮৪৪৬৬৫৫৮৫, ০১৮৪৪৬৬৫৩৩৬, ০১৮৪৪৬৬৫৩৩৭।
বাঅ/এমএ