চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে করোনাভাইরাস মহামারি আরো খারাপ রূপ নেবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ওই শহরের মেয়র।
বিল ডে ব্ল্যাসিও বলেছেন, “আগামী ১০ দিনের মধ্যেই এসবের মারাত্মক ঘাটতি দেখা দিতে পারে। আমরা যদি আরো ভেন্টিলেটর না পাই, লোকজন মরতে শুরু করবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের এই অঙ্গরাজ্য ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস প্রকোপের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সারা দেশে যতো মানুষ আক্রান্ত হয়েছে তার প্রায় অর্ধেকই এই রাজ্যের।
যুক্তরাষ্ট্রে এখনও পযন্ত ৩১ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন চারশো জনের মতো।
সারা বিশ্বে আক্রান্তদের তুলনায় নিউ ইয়র্কের আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা পাঁচ শতাংশ।
শনিবার নিউ ইয়র্ক রাজ্যের গভর্নর এন্ড্রু কোমো জানিয়েছেন সেখানে ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মাত্র একদিনেই এই সংখ্যা বেড়েছে চার হাজার।
মেয়র ডি ব্ল্যাসিও বলেছেন, “সকল আমেরিকানের সত্য জানার অধিকার আছে। পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে এবং আসল কথা হচ্ছে এপ্রিল ও মে মাসে অবস্থা আরো খারাপ হবে।”
এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি ঘোষণা অনুমোদন করেছেন যার ফলে নিউ ইয়র্ক রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে কয়েকশো কোটি ডলারের সহায়তা পাবে।
তার পরেও মেয়র ডি ব্ল্যাসিও ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেছেন, ভাইরাসটি মোকাবেলায় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়।
“আমাকে বলতেই হবে: প্রেসিডেন্ট যদি ব্যবস্থা না নেন, লোকজনকে মরতে হবে, তারা হয়তো বেঁচে থাকতো পারবো।”
ঊনিশশো তিরিশের দশকের অর্থনৈতিক সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গ্রেট ডিপ্রেশন বা মহামন্দার পর যুক্তরাষ্ট্রে অনেক বড় এক সঙ্কট তৈরি হতে যাচ্ছে।”
হোয়াইট হাউজে রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় ওয়াশিংটনের জন্যেও তিনি একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার জন্যেও একই ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
“আমেরিকানদের জন্যে এটা এক বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা সবাই এক কঠিন পরীক্ষার মুখে দাঁড়িয়ে আছি,” বলেন মি. ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে।
এসব সামগ্রী দ্রুত কমে আসার কথা জানিয়েছেন নিউ ইয়র্কের চিকিৎসকরাও। তারা বলছেন, হাসপাতালে যেসব ডাক্তার ও নার্স এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, তাদের নিরাপত্তার জন্যেও সামগ্রীর অভাব দেখা দিয়েছে।
অন্যান্য রাজ্যের গভর্নররাও একই ধরনে ঘাটতির কথা জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তারা এবিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সাহায্যের জন্যেও আবেদন করেছেন।
ক্যালিফোর্নিয়াতে কর্মকর্তারা হাসপাতগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন করোনাভাইরাসের পরীক্ষা সীমিত করে ফেলার জন্য।
ওয়াশিংটনের একটি হাসপাতালও বলেছে, এপ্রিল মাসের মধ্যেই তাদের ভেন্টিলেটর শেষ হয়ে যেতে পারে।
ইলিনয় রাজ্যের গভর্নর জে বি প্রিৎজকার বলেছেন, আমাদের কয়েক লাখ মাস্ক এবং গাউন ও গ্লাভস দরকার। তার খুবই সামান্য আমরা পাচ্ছি।”
-বিবিসি বাংলা
সিঅ/এসএ।।