দেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী ও দু’জন পুরুষ।। করোনা আক্রান্ত সন্দেহ হলে যে নম্বরে ফোন দেবেন ।। শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস ।।টাকার মাধ্যমেও ছড়ায় করোনাভাইরাস, এখনই সাবধান হবেন যেভাবে ।। করোনা আতঙ্ক টয়লেট পেপারের জন্য পত্রিকার প্রথম পাতা ফাঁকা!
করোনার সংবাদ পরিক্রমা ।। বাংলাদেশে প্রথম তিনজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী এবং দু’জন পুরুষ রয়েছে। এদের মধ্যে দু’জন ইতালি ফেরত বাংলাদেশি রয়েছেন।
এছাড়া আরো তিনজনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। রবিবার দুপুরে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, গতকাল (শনিবার) তাদের শরীরে করোনা ধরা পড়ে। আক্রান্ত তিনজন রোগীর অবস্থায়ই স্থিতিশীল। তারা ভালো আছেন। তবে আইসোলেশনে থাকবেন।
করোনা আক্রান্ত সন্দেহ হলে যে নম্বরে ফোন দেবেন
চীনের উহান থেকে উৎপত্তি হওয়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিশ্বের শতাধিক দেশে ছড়িছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের নাম। গতকাল শনিবার ইতালি ফেরত দুইজনসহ মোট তিনজন বাংলাদেশির শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। আজ রবিবার দুপুরে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান।
শরীরে করোনার লক্ষণ উপলব্ধি করার পর ওই রোগীরা নিজ থেকেই আইইডিসিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। এরপরই তাদের নমূনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করে নিশ্চিত করা হয় তারা করোনায় আক্রান্ত। হটলাইন নম্বরগুলো হলো: ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১।
যদি কারও মধ্যে শ্বাসকষ্ট থাকে তাহলে নিকটস্থ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, হাসপাতালে যাবেন এবং আমাদের সাথে হটলাইনেও যোগাযোগ করবেন। আপনারা যেসব হাসপাতালে যাবেন সেখান থেকেও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিশ্চিত করা হবে করোনা আছে কি-না।
শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস
শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। এতে আক্রান্তের সংখ্যা আগেই লাখ ছাড়িয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ। মহামারী করোনাভাইরাস আজ রবিবার পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৯৫ মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়েছে। এর মধ্যে চীনের বাইরে মারা গেছে ৪৯৮ জন। শুধু চীনেই মারা গেছে তিন হাজার ৯৭ জন যার বেশিরভাই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা।
গত ডিসেম্বরে হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকেই ছড়ায় করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার মানুষ। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, তাদের দেশে করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছে ৮০ হাজার ৬৯৫ জন। গতকাল শনিবার আক্রান্ত হন ৯৯ জন। প্রতিদিনই নিত্য নতুন দেশে কভিড-১৯ নামের এ ভাইরাসের রোগী পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে, বাংলাদেশে প্রথম তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। আরও তিনজনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। রবিবার দুপুরে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, গতকাল (শনিবার) তাদের শরীরে করোনা ধরা পড়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী এবং দু’জন পুরুষ রয়েছে। এদের মধ্যে দু’জন ইতালি ফেরত বাংলাদেশি রয়েছেন।
টাকার মাধ্যমেও ছড়ায় করোনাভাইরাস, এখনই সাবধান হবেন যেভাবে
টাকার মাধ্যমেও ছড়ায় করোনাভাইরাস। তাই টাকার ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস এখন বাংলাদেশেও ঢুকে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীনের বাইরে ১৭ গুণ দ্রুত হারে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে।
দেশে তিনজনের দেহে ধরা পড়েছে করোনাভাইরাস। যাদেরকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের কোনো ওষুধ নেই। ফলে নিজের সতর্কতাই এই ভাইরাস থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভালো উপায়।
ব্যাংক নোট বা টাকায় নানা ধরণের জীবাণুর উপস্থিতি শনাক্ত করার ঘটনা নতুন নয়। এমনকি ব্যাংক নোটের মাধ্যমে সংক্রামক নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ার কথাও বলেন বিশেষজ্ঞরা।
২০১৫ সালে দিল্লির ইন্সটিটিউট অব জিনোমিকস অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজি-র বিজ্ঞানীরা তাদের এক গবেষণার ফলে জানান, ভারতের বাজারে চালু নোটগুলোর ডিএনএ পরীক্ষা করে তাতে অন্তত ৭৮ রকম বিপজ্জনক মাইক্রোবের অস্তিত্বের প্রমাণ পেয়েছেন- যা থেকে মারাত্মক সব রোগ ছড়াতে পারে।
এমনকি বাংলাদেশের একদল গবেষক গত বছরের অগাস্ট মাসে বলেছিলেন, তারা বাংলাদেশি কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রায় এমন ধরণের ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পেয়েছেন, যা সাধারণত মলমূত্রের মধ্যে থাকে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের ছাত্রী নিশাত তাসনিম প্রায় ছয় মাস ধরে বাজারে প্রচলিত টাকা ও কয়েন নিয়ে গবেষণা করে বলেন, এসব মুদ্রায় তিনি ই-কোলাই জাতীয় ব্যাকটেরিয়া পেয়েছেন।
১৫টি উৎস থেকে নেয়া কাগজের টাকার নোট ও কয়েনে এক হাজারের চেয়ে আরো অনেক বেশি মাত্রায় ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি দেখেছেন তারা। এক হাজার মাত্রা পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়াকে সহনশীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য মনে করা হয়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী টাকা নিয়ে করা ওই গবেষণাটির তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন।
এর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘এ পরীক্ষায় আমরা যা পেয়েছি তা জনস্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে ভয়াবহ। কারণ সাধারণ ব্যাকটেরিয়া তো আছেই, সাথে পাওয়া গেছে মানুষের মল-মূত্র থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক’।
ফলে এসব মুদ্রার মাধ্যমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। ড. চৌধুরী বলেন, যেহেতু আমরা গবেষণা করে টাকায় বিভিন্ন ধরণের ব্যাকটেরিয়া পেয়েছি যা মানুষের অন্ত্রে নানা ধরণের রোগ সৃষ্টি করে তাই এর মাধ্যমে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়াটাও অস্বাভাবিক নয়।
তার মতে, টাকা বা ডলারের ব্যবহার ও আন্তর্জাতিক বিনিময়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাস শুধু একটি দেশের মধ্যে নয় বরং বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
‘যেহেতু এটা সরাসরি মানুষ হাত দিয়ে ধরে, অনেক সময় মুখের থুথু নিয়ে কাউন্ট করে। তাই এর মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেখান থেকে এটা হতে পারে যদি মানুষ সে হাতে খায়, মুখে দেয়।’
তিনি জানান, ভাইরাস বাহকের শরীরে সক্রিয় হয়, অন্যত্র নিষ্ক্রিয় থাকে। টাকায় থাকলে সে হয়তো নিষ্ক্রিয় থাকে, কিন্তু মানুষের সংস্পর্শে এলে সেটি করোনাভাইরাসের উপসর্গ বা রোগের সৃষ্টি করতে পারে, এই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
এমন আশঙ্কায় চলতি বছরের গতমাসে ভাইরাসে উপস্থিতি নিয়ে টাকা বা ব্যাংক নোট জীবাণুমুক্ত করার একটি উদ্যোগ দেখা যায় চীনে। দেশটিতে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর সেখানে ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে বাজার থেকে ব্যাংক নোট সরিয়ে নিয়ে তা আবার জীবাণুমুক্ত করে বাজারে ছাড়ে দেশটি।
টাকার মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণ এড়াবেন যেভাবে
বিশ্বজুড়ে এমন আশঙ্কার পর বিশেষজ্ঞরা, ব্যাংক নোট এড়িয়ে স্পর্শবিহীন মাধ্যম বা প্রযুক্তি ব্যবহার করে কেনাকাটা বা লেনদেন করার পরামর্শ দিয়েছেন। স্পর্শবিহীন লেনদেন বা প্রযুক্তি বলতে, ব্যাংক নোট ছাড়া অন্য মাধ্যম যেমন কার্ড, বিভিন্ন ধরণের অ্যাপ যেমন বিকাশ বা নগদ অথবা অন্য কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে লেনদেনের কথা বোঝানো হয়েছে।
তবে বাংলাদেশের মতো দেশ যেখানে প্রায় শতভাগ লেনদেন হয় ব্যাংক নোটের মাধ্যমে সেখানে কিভাবে এই পরামর্শ বাস্তবায়ন সম্ভব তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ ধরণের পরামর্শ মেনে চলা কঠিন।
তবে এক্ষেত্রে ব্যাংক নোট ব্যবহারের বিষয়ে তারা বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। জাতীয় রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক পরিচালক মাহমুদুর রহমান বলেন, ভাইরাসটি যাতে অতিমাত্রায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ব্যাংক নোট ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে।
এক্ষেত্রে কিছু পরামর্শের কথা বলছেন মাহমুদুর রহমান :
অবশ্যই টাকা গোনার সময় হাত দিয়ে মুখের লালা নেবেন না। ব্যাংক নোট বা টাকা নাড়াচাড়ার পরপরই অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। যারা অত্যধিক মুদ্রা নাড়াচাড়া করেন, যেমন ব্যাংক কর্মী বা মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীরা, তাদেরকে অবশ্যই অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে। তারা দস্তানা বা গ্লাভস পরে নিতে পারেন।
সতর্কতা অবলম্বন করে হ্যান্ড স্যানিটাইজারও ব্যবহার করতে পারেন। টাকা ধরা বা ব্যবহারের পরপরই চোখ, নাক বা মুখে হাত দেয়া যাবে না। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
করোনা আতঙ্ক
টয়লেট পেপারের জন্য পত্রিকার প্রথম পাতা ফাঁকা!
ভয়াবহ হচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। ভাইরাসটি এরই মধ্যে শতাধিক দেশে ছড়িয়েছে। বিশ্বের লক্ষাধিক মানুষ করোনায় আক্রান্ত। করোনা আতঙ্কে ‘টয়লেট পেপার’ ফুরিয়ে গেছে এমন খবর চাউর হওয়ার পর প্রথম পাতা ফাঁকা রেখে পত্রিকা প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়ার একটি দৈনিক। পাতাটি টয়লেট পেপার হিসেবে ব্যবহারের কথা বলেছে পত্রিকাটি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ান ওই দৈনিকের নাম দ্য এনটি নিউজ। সংবাদমাধ্যমটি তাদের টুইটারে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও পোস্ট করে লিখেছে, ‘হ্যাঁ, সত্যি সত্যিই আমরা এটা করেছি।’ তারপর তারা হ্যাশট্যাগে লিখেছে টয়লেটপেপারক্রাইসিস।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের কবলে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়, পর্যটন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলাধুলা-সবকিছুতেই একধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় করোনা আতঙ্কের কারণে সুপারমার্কেটগুলো ফাঁকা হয়ে গেছে। জনগণ তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনে জমা করে রেখেছে।
এনটিএন এর প্রকাশিত ওই ফাঁকা পাতায় আরেকটি বার্তা দেওয়া হয়েছে। তাতে লেখা আছে, ‘আমরা ভেতরে আট পাতার বিশেষ একটি লিফট-আউট প্রিন্ট করেছি, যেগুলো সুবিধাজনক অবস্থায় কাটা কাটা লাইনে দ্বারা বেষ্টিত। জরুরি অবস্থায় যাতে করে সহজেই এটা ব্যবহার করা যায় তার জন্যই এই পদক্ষেপ।’
টুইটার পোস্টটি মুহূর্তেই ইন্টারনেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা নানা প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেন। এরপর অনলাইনে হ্যাশট্যাগ টয়লেটপেপারইমার্জেন্সি অথবা টয়লেটপেপার অ্যাপোক্লিপস ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়ায়।
একজন লিখেছেন, ‘এখন আপনাদের সবার দরজার পেছনে ছয় ইঞ্চির একটি করে পেরেক দরকার।’ অপর একজন লিখেছেন, ‘ডেইলি টেলিগ্রাফ থেকে গ্রাহকদের মনযোগ চুরির জন্য এটা একটা সাহসী পদক্ষেপ, যা ইতোমধ্যেই টয়লেট পেপার হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।’