দেশের সংবাদ ফিচার্ড

কাজে যোগ দেননি সিলেট ও হবিগঞ্জের চা শ্রমিকরা

কাজে যোগ দেননি সিলেট ও হবিগঞ্জের চা শ্রমিকরা

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বৈঠকের পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়া হলেও কাজে যোগ দেননি সিলেটের ২০টি ও হবিগঞ্জের ২৪টি চা বাগানের শ্রমিকরা। দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আজও কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছেন তারা। শ্রমিকরা বলছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
এদিকে মৌলভীবাজারের ৯০টি বাগানের মধ্যে কিছু কিছু বাগানের শ্রমিকরা কাজ শুরু করলেও অনেক বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দেননি।

এরআগে দেশে চা বাগানসমূহে উদ্ভুত শ্রম অসন্তোষ নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান এর সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গত রাত নয়টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চা বাগানের শ্রমিক নেতৃবৃন্দের জরুরি বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিক নেতারা প্রশাসনের সাথে পূর্বের মজুরি বাগানে ফেরার জন্য সিদ্ধান্ত নেন এবং লিখিতভাবে যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন।

জানা যায়, গত ২০ আগস্ট মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও সরকারের প্রতিনিধিদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নতুন মজুরি নির্ধারণ করা হয় ১৪৫ টাকা। এরপর চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার কথা জানান চা শ্রমিক নেতারা। কিন্তু সভা থেকে বের হয়ে সাধারণ চা শ্রমিকদের রোষানলে পড়ে এই সিদ্ধান্ত থেকে বেরিয়ে আসে চা শ্রমিক ইউনিয়ন।

সর্বশেষ রোববার রাতে রাতে অনেকটা গোপনে চা শ্রমিকদের নিয়ে বসেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। এসময় চা শ্রমিকদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, চা শ্রমিকরা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরম শ্রদ্ধা করেন। তার উজ্জল দৃষ্টান্ত আজকের এই সিদ্ধান্ত।

চা শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর উপর আস্থা রেখে তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন এবং তারা কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক। তিনি আমাদের যে সিদ্ধান্ত দিবেন আমরা তা মেনে নেব।

সভায় যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সেগুলো হলো ১) মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রেখে তাঁর সম্মানে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন রেজি নং- নি তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে ২২ আগস্ট থেকে কাজে যোগদান করবেন।

২) আপাতত: চলমান মজুরী অর্থাৎ ১২০/- (একশত বিশ) টাকা হারেই শ্রমিকগণ কাজে যোগদান করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্স পরবর্তীতে মজুরীর বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনার পর চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হবে মর্মে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ দাবি জানান।
৩) আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার পূর্বে প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হওয়ার জন্য চা-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আবেদন করেন যা জেলা প্রশাসক কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উপস্থাপিত হবে।
৪) চা-শ্রমিকদের অন্যান্য দাবিসমূহ লিখিত আকারে জেলা প্রশাসকের নিকট দাখিল করবেন। জেলা প্রশাসক প্রধানমন্ত্রীর সদয় বিবেচনার জান্য দাবীসমূহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করবেন।
৫) বাগান মালিকগন বাগানের প্রচলিত প্রথা/দস্তুর মোতাবেক ধর্মঘটকালীন মজুরী শ্রমিকগণকে পরিশোধ করবেন।

এ সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর উপ-পরিচালক মো. নাহিদুল ইসলাম, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দর মধ্যে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নিপেন পাল,অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি,সহ সভাপতি পংকজ কন্দ, বালিশিরা ভ্যালী সভাপতি বিজয় হাজরা,কমলচন্দ্র ব্যানার্জী, মো. শহীদুল ইসলাম, নির্মল দাশ পাইনকা, কন্ঠ তাঁতী উপস্থিত ছিলেন।

-সূত্রঃ মানবজমিন

 

 

এসএস/সিএ

 


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন