কানাডার প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধণ দাসের পরলোকগমন
ষাটের দশকের ছাত্রনেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী সাধণ দাস ২ মার্চ, ২০২২ সকালে মিসিসাগা, কানাডার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী শিবানী দাস, কন্যা অদিতি দাশ, পুত্র অনুপম দাশ, ভাইবোন, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ৫ মার্চ, ২০২২ মিডোভেল ফিউনারেল সেণ্টার, ব্রাম্পটনে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
সাধন দাস ১৯৪৮ সালে কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় ঈশ্বর পাঠশালা থেকে এসএসসি এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। এসএসসিতে তিনি কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড থেকে মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন। ১৯৭০ সালে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎ প্রকৌশলে পাশ করেন।
ষাট এবং সত্তুরের দশকে তিনি ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একজন অগ্রগামী নেতা। ১৯৭১ সালে তিনি কমিউনিষ্ট পার্টির গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও গণযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে মেইন্টেনেন্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদান করেন। এসময় তৎকালিন প্রেসিডেণ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সান্নিধ্য লাভ করেন।
ব্যক্তি জীবনে সাধন দাস ছিলেন অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল এবং মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ। জীবনের শেষ পর্যন্ত তিনি মনেপ্রাণে মৌলবাদকে ঘৃণা করতেন। স্বপ্ন দেখতেন অসাম্প্রদায়িক, দুর্নীতি, শোষণ এবং বঞ্চনামুক্ত সমাজের। তিনি তাঁর জীবনে এ মনোভাবকে চর্চা করতেন।
১৯৭৫ সালে তিনি শিবানী দাসকে বিয়ে করেন। তাদের মেয়ে অদিতি বর্তমানে কানাডার কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে চাকুরিরত এবং ছেলে ড. অনুপম দাশ ক্যালগেরীর মাউণ্ট রয়্যাল ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতির অধ্যাপক।