কুসুম
কুসুম |||| পুলক বড়ুয়া
তুমি যা যা ফিরিয়ে দিয়েছ
টুপ করে তা বুক পকেটে জমিয়ে রেখেছি
তুমি যা যা ফেরত দিয়েছ
চট করে প্যান্টের পকেটে
দিয়েছি চালান করে
অনবধানতাবশত: কেউ তো
ব্যাক পকেট কাটতে পারে
তাই ওখানে আমার প্রিয় মানিব্যাগটি রেখেছি
টাকা যায় যাক
তোমার ছোঁয়াকে দিতে চাইনি বেহাত করে
তোমার ছায়ার সুরভি হারাতে চাইনি
অপর পরশ
পর পুরুষের ছোঁয়া লাগুক চাইনি
অসতর্কে পড়ুক বেগানা হাত, মোটেই চাইনি
কিছুতে চাইনি বেখেয়ালে টুঁটে যাক একদম
কেউ পিছু নেবে, লুটে নেবে—
তাই তো আগলে আছি, আগলে রেখেছি আমি
ওগুলো সাদরে স্বেচ্ছায় সঞ্চিত রেখেছি
সরিয়ে রেখেছি লুকিয়ে রেখেছি
হৃদয়ের জেবে কিংবা প্যান্টের পকেটে
কোমরের-অন্তর্বাসের গোপন গর্তে
কেউ চাইলেই পারে না ঢুকিয়ে দিতে হাত
অমনি হাতের জাদু পারে না দেখাতে
সহসা দেখাতে পারে না কেউ খেলা
হস্তশিল্পের নৈপুণ্য
আমার অজান্তে ফায়দা লুটবে কেউ
সহজে সুবিধা আদায় করবে হস্ত প্রশস্ত করবে
তাই, ভেবেচিন্তে সযত্নে রেখেছি সতর্ক-দূরত্বে
আমার সমূহ অনুভূতি
অবিকল, অবিকৃত—
হে আমার অক্ষত বিপন্ন অনুভূতিমালা
একান্তে ঘুমিয়ে আছো একজন তুমি
একমাত্র তুমি ছাড়া
বিন্দুমাত্র ভাগাভাগি করতে পারে না
চিহ্নিত করতে সাহস করে না
ভরসা করে না
খোঁজ করতে পারে না
খুন করতে পারে না
গুম করতে পারে না—
তুমি আমার হৃদয়-তীর্থে ঘুমিয়ে রয়েছো
তুমি আমার হৃৎ-কোণে ঘুমিয়ে রয়েছো
আমার বুকের বিনিদ্র আহ্লাদ-হাহাকার
তুমি আমার মনের কারবালা
তুমি ফোরাতের এক ফোঁটা জল
তুমি আমার আঁজলাভরা তৃষ্ণার অতল
আপাত শরীরী সরোবরে ফুটে থাকা শতদল
আমাকে খুলবে বলে
নিজেকে মেলবে বলে
যে-কোনো সময়
তোমার আমার যে-কোনো সময়
নিজেকে খুলবে বলে
নিজেকে মেলাবে বলে
আলো-আঁধারে বিলাবে বলে
বিমূর্ত বাতাসে অমূর্ত খুসবু হবে বলে
তোমাকে নিয়েছি আমি
তোমাকে পলকে করেছি চয়ন
তুমি আমার একান্ত আকাশকুসুম
তুমি আমার অনন্ত আকাশ কুসুম