করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশব্যাপী চলমান গণপরিবহন চলাচল ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন, জরুরি সেবা, জ্বালানি, ওষুধ, পচনশীল ও ত্রাণবাহী পরিবহন এই নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।
আজ শনিবার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক ভিডিও বার্তায় বলেন, জনস্বার্থ বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সারা দেশে গণপরিবহন ‘লকডাউন’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। তখন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছিলেন।
এর আগে সরকার প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল। এরপর পরিস্থিতি বিবেচনায় সেটি বাড়িয়ে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সংবাদপত্র, জ্বালানি পরিবহন ছুটির আওতামুক্ত
সংবাদপত্র ও জ্বালানি পরিবহন ছুটির আওতামুক্ত থাকবে। এই দুটি বিষয় যুক্ত করে সরকার ঘোষিত ছুটির প্রজ্ঞাপন সংশোধন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ১ এপ্রিলের তারিখ দিয়ে প্রজ্ঞাপনটি সংশোধন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২৪ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল, ছুটি বা বন্ধ সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালতের জন্য প্রযোজ্য হবে। স্বাস্থ্যসেবা, সংবাদপত্রসহ অন্য জরুরি কার্যাবলি চলবে। গণপরিবহন ছাড়া অন্যান্য জরুরি পরিবহন যেমন ট্রাক, কার্গো, অ্যাম্বুলেন্স, সংবাদপত্রবাহী গাড়ি ইত্যাদি যথারীতি চলবে।
করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে গতকাল বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ১০ ও ১১ এপ্রিল (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটিও এর সঙ্গে যুক্ত হবে। ফলে ছুটি হবে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত।
সেই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, জরুরি সেবার (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট) ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে না। এ ছাড়া কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্পপণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, জরুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন এবং কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান ও হাসপাতাল এই ছুটির মধ্যে পড়বে না। এখন সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে সংবাদপত্র ও জ্বালানি পরিবহনের বিষয়টিও এখানে যুক্ত করা হয়েছে।
ছুটিতে জরুরি প্রয়োজনে অফিসগুলো খোলা রাখা যাবে। প্রয়োজনে ওষুধশিল্প, উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা চালু রাখতে পারবে। এ ছাড়া মানুষের প্রয়োজন বিবেচনায় ছুটিকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, নির্দিষ্ট কিছু শাখায় সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত নগদ জমা ও উত্তোলন করা যাবে। লেনদেন-পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য ব্যাংক খোলা থাকবে বেলা তিনটা পর্যন্ত।
এ ছাড়া মানুষের জীবন-জীবিকার স্বার্থে রিকশা-ভ্যানসহ যানবাহন, রেল, বাস পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে বলে ছুটির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
সূত্রঃ প্রথম আলো
বাঅ/এমএ