চীনের জন্য সব দরজা বন্ধ ! প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে চীন থেকে কেউ যেন প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। কোনো চীনা নাগরিক বা সম্প্রতি চীন ভ্রমণ করেছেন এমন ব্যক্তিও এর আওতায় পড়ছেন। যেসব দেশ সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া রয়েছে। এর আগে রাশিয়া, জাপান, পাকিস্তান ও ইতালি একই ধরনের ঘোষণা দিয়েছে। খবর বিবিসি।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত শুক্রবার করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। তবে সংস্থাটি এ ধরনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিপন্থী। ডব্লিউএইচওর প্রধান গত শুক্রবার বলেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এ ধরনের পরিস্থিতি বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। এতে তথ্য আদান-প্রদান ও চিকিৎসাসেবার শৃঙ্খলা ভেঙে পড়তে পারে।
এদিকে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্বের এ ধরনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছে। চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিং বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কথা বলেছে কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তার বিপরীতে দিকে যাচ্ছে। এটা অবশ্যই ভালো কিছু নয়।
এদিকে নতুন ধরনের এ করোনা ভাইরাসে এ পর্যন্ত চীনে ২৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ হাজারে। চীনের বাইরে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও জার্মানিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগে আরও কিছু দেশ জানিয়েছে তাদের দেশে চীন ফেরত এমন লোক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত চীনের বাইরে এ রোগে কারও মৃত্যু হয়নি। আর চীনেও বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনা হুবেই প্রদেশে।
এ প্রদেশের বেশিরভাগ এলাকা কার্যত অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বেশিরভাগ সড়ক আটকে দেওয়া হয়েছে, বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। সংক্রমণ থামাতে চীনের বিভিন্ন শহরেও নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। উত্তর চীনের দেড় কোটি বাসিন্দার তিয়ানজিন শহরের সব স্কুল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। চীনে অনেক দেশ ও বিমান কোম্পানি চলাচল বন্ধ করেছে।
এদিকে চীনের মূল ভূখণ্ডে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিজেদের সব অফিসিয়াল শোরুম ও করপোরেট কার্যালয় বন্ধ করছে আইফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল।
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনে প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। দ্রুত এটি দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশটি প্রকৃত পরিস্থিতি গোপন করছে।