চুয়াডাঙ্গায় সাপের সাপান খেলা অনুষ্ঠিত
চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু, চুয়াডাঙ্গা থেকে, ১৩জুলাই।। চুয়াডাঙ্গার গ্রামবাংলার জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলোর মধ্যে সাপ খেলা অন্যতম। এটি সকল বয়সীদের কাছে সমাদৃতও বটে। শত শত মানুষের মাঝে কাঠের মাচায় বিষধর সাপ রাখা। সাপুড়েরা বাদ্যের তালে তালে গান গাইছে। সেই সঙ্গে সাপগুলোও মনে হচ্ছে সাপুড়ের দিকে তাকিয়ে তাকে ছোবল মারতে উদ্যত হচ্ছে, দেখে মনে হয় এ যেন সাপ ও সাপুড়ের প্রেমের মিতালী। এক সাপুড়ে বাদ্যের তালের গান শেষ হলে তিনি বসে পড়েন তারা সাপগুলোকে নিয়ে। এরপর আসেন অপর সাপুড়ে, তিনিও তার সাপগুলোকে প্রদর্শন করেন। এভাবেই দিনভর চলছেন সাপের খেলা। শত শত দর্শক গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঝাঁপান খেলা দেখে আনন্দ উপভোগ করতে লক্ষ্য করা যায়।
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা মোক্তারপুর গ্রামবাসীদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ঝাঁপান খেলায় অংশগ্রহণ করা দুইটি দলের নিজ নিজ সাপুড়েরা মনিবের ইশারায় তাঁদের নিজ নিজ সাপকে বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে, আজকের এ খেলা কিন্তু শুধু মানুষকে আনন্দ উপহারের জন্য নয়, বরং উপস্থিতিদের আনন্দে উল্লাসের সাথে সাথে তোর মনিবের মর্যাদা ও সন্মানের লড়াই। সেজন্যেই ঐতহ্যবাহী ঝাঁপান খেলায় অংশগ্রহণ করা দুটি সাপুড়ে সর্দার দলের প্রতিযোগিদের মাঝে নিজেদের সেরা প্রমাণিত করতে দুটি দল ওঝা বা সর্দাররা উপস্থিতিদের আনন্দে মাতোয়ারা করে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে দেখা যায়।
জানা যায়, দামুড়হুদা উপজেলার সদর ইউনিয়নের মোক্তারপুর গ্রামবাসীদের আয়োজনে ঝাঁপান খেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মহির উদ্দীনের গড়ো’র সভাপতিত্বে গতকাল মোক্তারপুর গড়ো পাড়ায় অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানস্থলটি স্থানীয়সহ আশপাশের এলাকার সব বয়সীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেন। অনুষ্ঠানে যে দুটি শক্তিশালী দল অংশগ্রহণ করেন তার মধ্যে একটি দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ালগাছি ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের সাপুড়ে সর্দার আলমগীর বয়াতির ঝাঁপান দল অপরটি হচ্ছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর উপজেলার গাইঘাটা সাপুড়ে সর্দার ওলীল আলীর ঝাঁপান দল।
মনজিল হোসেনের পরিচালনা অনুষ্ঠিত ঝাঁপান খেলায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দামুড়হুদা উপজেলা শাখা’র সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান টোকন, খবির উদ্দিন, সবদুল মালিতা, আজিম, জারু, সেলিম, ছোটন, রসি, আজিজুল, মিলনসহ পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ।
আয়োজক কমিটির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রাচীন ও গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এই সাপ খেলাটি আজকে হারাতে বসেছে, হারানো গৌরব ফেরাতে নতুন প্রজন্মকে জানান দিতেই তাদের দিনব্যাপী আজকের এ আয়োজন।