ফিচার্ড সাহিত্য ও কবিতা

একজোড়া বাঁকা চোখ ।।। বিচিত্র কুমার 

একজোড়া বাঁকা চোখ ।।। বিচিত্র কুমার


 সে যেনো দাঁড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য সবুজ পাতার আড়ালে; 
তার চোখে মুখে হাত রেখে সাদাপাড়া হলুদবর্ণের শাড়িতে; 
তার একজোড়া বাঁকা চোখ শুধু তাকিয়ে রয়েছে প্রতীক্ষায়
নিদারুণ রিমঝিম বৃষ্টি দিনে আষাঢ়ের আশাতে। 
তার ভেজা ভেজা চুলগুলো উড়ছে রৌদ্রের নেশাতে, 
ঝিরিঝিরি দক্ষিণাবাতাসে।
 
ওই দূর আকাশের গাঁয়,কে যেনো মেঘ গুর গুর করে তোমাকেই ডাকছে?
নকশীকাঁথার মাঠে কিংবা এই ধান শালিকের দেশে;
তুমি কিছুতেই শুনছো না নীরবে একাকী দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
হয়তো বা বারবার ফিরে দিচ্ছো তাকে। 
 
তুমি একবার তাকিয়ে দেখো? ওই আকাশের প্রাণে শুভ্রজল ঝরছে;
ঝিমঝিম রিমঝিম বৃষ্টি ভেজা দিনে,
হয়তো আকাশের বুকে রঙধনু সাজিয়েছে তোমার এক প্রেমিক;
ওগো তুমি একরার হাতটি সরিয়ে দেখো তোমার হৃদয়ের আয়নায় ;
হয়তো বা আমিও একগুচ্ছ কদম ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছি
শুধু তোমারই প্রতীক্ষায়।
 
(০২)
আমাদের প্রেম
 যদি এমন হতো আমাদের প্রেম, 
শৈশবের মতো সরল,ফুলের মতো পবিত্র;
দিবারাত্রির মতো অটল,আকাশের মতো একগুঁয়ে 
পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র। 
 
যদি এমন হতো আমাদের প্রেম, 
তুমি প্রতীক্ষার প্রহর গুনচ্ছো দক্ষিনা বাতাসে;
দু’আঁখিতে টিপটিপ বৃষ্টি অঝরে ঝরছে 
নদী স্রোতের মতো আষাঢ়ের আশাতে।
 
যদি এমন হতো আমাদের প্রেম, 
একটা স্বপ্নের পৃথিবীর মতো,
যেখানে বুলবুলিরা বাসা বাঁধে
নিজেদের ইচ্ছে মতো। 
 
যদি এমন হতো আমাদের প্রেম, 
তুমি হারিয়ে যেতে আমার শীতল নিশ্বাসে;
আমিও হারিয়ে যেতাম তোমার:
মিষ্টি ভালোবাসার বিশ্বাসে।
 
 
(০৩)
ছলনাময়ী বিজলী
 সেদিন কাটিয়েছি নিদ্রাহীন এক অস্থির রজনী,
বিজলির দেখা নেই ঘুম থেকে উঠি বিতৃষ্ণায়;
সে আসে আর যায় বারেবারে হাওয়ার মতো ;
রুমের অর্গলবদ্ধ দরজা খুলে হাঁটছি খোলা দিগন্তয়।
 
রাতজাগা পাখিরা আনাগোনা করেছে সুদূরে
মনে হয় বৈশ্বিক তাপদাহ চলছে দেশে ;
কে যেন কাঁচাকাঠে আগুন ধরিয়েদিয়েছে জীবন্ত পৃথিবীতে
ধুঁইয়ে ধুঁইয়ে মানুষকে রান্না করছে প্রকৃতিতে।
 
বাতাসের একটা মিষ্টি ছোঁয়া, সে যেন এসেছে এইমাত্র
বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে উঠলো রাস্তার মোরে মোরে ;
মিটিমিটি জোনাকির মতো অসংখ্য তারারা আলো ছড়ালো
একে একে সবাই হারিয়ে গেল নিজের ঘরে। 
 
শুধু আমি ফিরিনি তখনো হঠাৎ দেখতে পেলাম-
বাড়ির পাশে লাল টুকটুকে গোলাপ ফুটেছে ;
ঠিক যেন প্রভাতের পূর্বে ওই নতুন গৃহের প্রাচীরে,
মিষ্টি একটা সুগন্ধ বেরিয়েছে নুয়ে পড়া গোলাপবৃক্ষ থেকে ,
দেখে দেখে মুগ্ধ হয় আমি ধিরে ধিরে।
 
অতঃপর আমি বাড়ির রাস্তা দিয়ে ফিরতে ফিরতে, 
যেইনা ওকে ছুঁতে চাই সেই বৈদ্যুতিক আলো নিভিয়ে যায়:
আবারও নির্ঘুম রাতে লোডশেডিং, হাঁপিয়ে ওঠে অঙ্গ শরীর-
ঝিঁঝিঁপোকারা গান ধরেছে গুনগুনিয়ে,কী যে জ্বালা মরার গরম!
 
 
 
সংবাদটি শেয়ার করুন