নাগরজাহ থিংসারাজা (৬১) এবং পুষ্পরানি নাগরাজাহ (৫৬)
টরন্টোর ব্রাম্পটনে করোনায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু, সন্তানদের আহাজারি! অন্টারিও প্রভিন্সের ব্রাম্পটন-এর বাসিন্দা একটি তামিল পরিবারের কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসে ৫ জন আক্রান্ত হলে দু’জন মৃত্যুবরণ করেছেন। জানাযায়, ৬১ বছর বয়সী নাগরাজাহ থিংসারাজাহ এবং তার ৫৬ বছর বয়সী স্ত্রী পুষ্পরানি নাগরাজাহ আক্রান্ত হলে প্রথমে স্ত্রী মারা যাবার পর ঠিক দুদিন পরে গতকাল ১৫ এপ্রিল হাসপাতালে মারা যান থিংসারাজাহ। তিন মেয়েকে রেখে বাবা-মা’র মৃত্যুতে অসহায় হয়ে যায় পরিবারটি। মৃতদম্পতির তিন মেয়ে যাদের বয়স ২৯, ২২ এবং ১৯ তারাও কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে ব্রাম্পটনের হোম আইসোলেশনে রয়েছে।
দম্পতির ভাগ্নি নাথন কাঠির্গামানাথন বলেছেন, “এই তিন সন্তানই জানতো না, তাদের বাবা-মা আর জীবিত নেই, ফলে যখন জানলো পিতৃমাতৃহীন অবস্থায় দিশিহারা হয়ে তারা মানষিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কাঠিরগামান্থন সিটিভি নিউজ টরন্টোকে বলেছেন যে ২ এপ্রিল তার মামা-মামী অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেছিলেন এবং পরের দিনই পুরো পরিবার হাসপাতালে গিয়েছিল। থিংসারাজ আরও গুরুতর অবস্থায় দেখা দেওয়াতে তাকে হাসপাতালে রেখে দেওয়া হয় এবং তার স্ত্রী ও তিন কন্যাকে স্ব-বিচ্ছিন্ন অবস্থায় বাড়িতে রাখা হয়। কিছুদিন পর পুস্পরানী শ্বাস নিতে কষ্ট হলে হাসপাতালে নেওয়ার পর ১৩ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন এবং দু’দিন পর স্বামী ১৫ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
থিংসারাজাহ মিসিসাগার ‘গেট গুরমেট কানাডা’র একজন কর্মচারী ছিলেন, এটি গেট গ্রুপের একটি বিভাগ, একটি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থানের ক্যাটারিং এবং অন-বোর্ড খুচরা সংস্থা। গেটগ্রুপের মুখপাত্র ন্যানসি জুয়েল সিটিভি নিউজ টরন্টোকে এক বিবৃতিতে বলেছেন, “ টরন্টোর ব্রাম্পটনে করোনায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু হওয়াতে এবং আমরা এই সংবাদ দেখে গভীরভাবে দুঃখিত এবং তাদের পরিবার ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা জানাই।
থিংসুরজাহ ব্রাম্পটন, মিসিসাগা এবং ইটোবিকোকের দোকান এবং মন্দিরে তামিল পত্রিকা “উথায়ান” বিতরণ করার জন্যও খণ্ডকালীন কাজ করেছিলেন। সংবাদপত্রের প্রকাশক ও সম্পাদক নাগমণি লোয়েঞ্জ্রালিংগাম তাঁকে একজন “নিখুঁত ভদ্রলোক” হিসাবে বর্ণনা করেছেন যিনি সর্বদা “অত্যন্ত বিনয়ী” ছিলেন। তিনি বলেছেন যে তিনি সর্বশেষ অসুস্থ হওয়ার কয়েকদিন আগে ২৭ শে মার্চ শেষবারের মতো তার কাগজটি বিতরণ করেছিলেন।
কাঠির্গামানাথন বলেছেন যে তিনি চান সেই সম্প্রদায়ের লোকেরা তার মামা ও মামীর কী হয়েছিল সে সম্পর্কে সচেতন হন।
কাঠির্গামানাথন বলেছেন যেহেতু আমার মামা-মামীর কোভিড-১৯ হয়েছিলো, তাই “আমি এই অঞ্চলের আশেপাশের লোকদের, বিশেষত যারা এই তামিল ও শ্রীলঙ্কার স্টোরগুলো এবং সিনিয়রদের আবাসে গিয়েছিলেন তারা নিজেরাই যাচাই করার জন্য একটি সতর্কতা এবং সচেতনতা প্রেরণ করতে চাই।” পাশাপাশি কমিউনিটি থেকে বাবা-মা হারা অসহায় একটি পরিবারবন্ধু দম্পতির তিন কন্যাকে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে একটি GoFundMe প্রচারণা শুরু করেছে, যারা এখন উভয় বাবা-মা মারা যাওয়ার জন্য শোক করছে। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত, GoFundMe raised ৬০,০০০ এর কাছাকাছি ডলার উঠেছে।
সিবিএনএ/এসএস
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন