টানা বৃষ্টিতে কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি, বন্যার আশংকা
গত ২ দিনের টানা বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানিতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ধলাই নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। বৃদ্ধি পাওয়া পানি বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও কমলগঞ্জে কয়েকটি ইউনিয়নে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ১০ স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।
উজানে ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ধলাই নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমা অতিক্রম করে বন্যার আশঙ্কা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলাকাবাসী। শনিবার (১৭ জুন) বেলা ৩ টায় সরেজমিন কমলগঞ্জের ধলাই নদীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, টানা বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানিতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বেড়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখন পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাকিব হোসেন ধলাই নদীতে পানি বৃদ্ধির সত্যতা নিশ্চিত করে এ প্রতিনিধিকে বলেন, বেলা ৩ টায় ভানুগাছ রেলওয়ে সেতু এলাকায় পরিমাপ করে দেখা গেছে ধলাই নদীর পানি বিপদ সীমার ১০২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা এলাকা দিয়ে ইসলামপুর, মাধবপুর, আদমপুর, কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন, কমলগঞ্জ পৌরসভা, মুন্সিবাজার ও রহিমপুর ইউনিয়নের উপর দিয়ে দীর্ঘ ৫৭ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে মনু নদী মিলিত হয়েছে ধলাই নদী। এর মাঝে অসংখ্য স্থানে আকা বাঁকা হয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এসব ইউনিয়নের ৮ থেকে ১০ স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ আছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্বক্ষণিক নজদারি আছে বলেও তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টি হলে ধলাই নদীর পানি আরও বেড়ে বিপদ সীমা অতিক্রম করলে বন্যার আশঙ্কা থাকবে। তবে শনিবার বিকাল থেকে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ায় ধলাই নদীর পানি সামান্যহারে কমতে শুরু করছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন বলেন, ধলাই নদীতে পানি বাড়লেও এখনও বিপদ সীমা অতিক্রম করেনি। ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়ন কাজ হওয়ায় আপাতত ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ঝুঁকিমুক্ত আছে বলে তিনি মনে করেন। তারপরও উপজেলা প্রশাসন ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের দিকে সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে।
কমলগঞ্জে এক রাতে ২টি সিএনজি চুরি
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে একরাতে দুটি সিএনজি অটোরিকশা চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (১৭ জুন) ভোররাতে উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের বিক্রমকল গ্রামের ইসমাইল মিয়ার বাসা থেকে।
জানা যায়, উপজেলার ৩নং মুন্সিবাজার ইউনিয়নের ধীতেশ্বর গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী সুবিধাবঞ্চিত শব্দকর সম্প্রদায়ের জয় শব্দকর এবং গনেশ শব্দকর উভয়ই অসহায় দিনমজুর মানুষ । সিএনজি চালিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করা হতো। এমতাবস্থায়, প্রতিদিনের মত শুক্রবার রাতে স্থানীয় ইসমাইল মিয়ার বাসার গ্যারেজে সিএনজি অটোরিকশা রেখে বাড়িতে গিয়ে ঘুমিয়ে যান। শনিবার সকালে খবর পান ইসমাইল মিয়ার বাড়ির বাহিরের গেইটের তালা কেটে গাড়ী দুটি চুরি করে নিয়ে যায় (চুরিকৃত সিএনজি অটোরিকশার রেজি: নং মৌলভীবাজার থ ১২/৯১৯৮ এবং মৌলভীবাজার থ ১২/৭৪২৪)। এনজিও ঋণের কিস্তিতে নেওয়া সিএনজি অটোরিকশা দুটির জন্য হাউমাউ করে কেঁদে জয় শব্দকর ও গণেশ শব্দকর জানান, এ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানায় জিডির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ও ৩নং মুন্সিবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নাহিদ আহমদ তরফদারসহ ইউপি সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
আলাপকালে মুন্সিবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নাহিদ আহমদ তরফদার জানান, জয় শব্দকর ও গণেশ শব্দকর দিনমজুর অসহায় মানুষ। তাদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম ছিল সিএনজি দুটি। এনজিও’র ঋণের কিস্তিতে নেওয়া সিএনজির এখনো কিস্তি পরিশোধ হয় নাই। সিএনজি দুটি উদ্বারে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
এসএস/সিএ