দিলীপ ঘোষ
তাপস পালের মৃত্যু পিছনে কার হাত? বিস্ফোরক মন্তব্য দিলীপ ঘোষের (ভিডিও)
মমতাকে আক্রমণ করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, “তাপস পালের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলে থাকতে কোনওদিন দেখতে যাননি তাকে। তাপস পালের দুর্ভাগ্যজনক পরিণতি, মৃত্যুর জন্য দায়ী কে? কার হাত রয়েছে এর পিছনে? সম্পূর্ণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী, তৃণমূল দায়ী। সবকিছু মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় উনি (তাপস পাল) করেছেন। তৃণমূলের এক সিনিয়র নেতাকে যখন গ্রেফতার করে সিবিআই, তখন তাকে দেখতে ভুবনেশ্বরে গিয়েছিলেন মমতা। তাপস পালকে তখন মনে পড়েনি। তাপস পাল ফেঁসে গেলেন বলে ছেড়ে দেওয়া হল।”এরপরই দিলীপ বলেন, “তৃণমূলের একাধিক নেতা-মন্ত্রী, সাংসদ দুর্নীতিতে জড়িত। কেউ জেলে গিয়েছেন, কেউ যাবেন। দুষিত সংস্কৃতি শুরু করেছে তৃণমূল। বাংলার রাজনীতিকে কলুষিত করেছে সারদা-নারদের ঘটনা। অন্যকে দায়ী করে নিজের পাপমুক্তি করার চেষ্টা করছেন মমতা। হতাশা থেকে এসব বলেছেন তিনি।”
উল্লেখ্য, এদিন রবীন্দ্রসদনে তাপস পালকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে মমতা বলেন, “তাপস পালের মৃত্যু আবার প্রমাণ করল, একটা এজেন্সির অত্যাচারে একটা মানুষ নিজেকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল, ক্ষতবিক্ষত ছিল, হয়তো মৃত্যুর আগে জানলও না ওর কী অপরাধ ছিল…কী খেলা আমি জানি না। অন্যায় করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন, বিচার করুন। এতদিন জেলের মধ্যে বন্দি করে রাখার কী কৌশল এটা! কেন্দ্রীয় সরকারের জঘন্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক আচরণ থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছে না। আমার চোখে ৩টি মৃত্যু হল। একটা সুলতান আহমেদ। শুনেছিলাম, একটা ফোন পেল, চিঠি পেল তারপর মৃত্যু হল। প্রসূনের স্ত্রীও সহ্য করতে না পেরে মারা গেল। আর তাপসের মৃত্যু। খুবই ব্যথিত, মর্মাহত, শোকাহত।”
তাপস পালের মৃত্যু পিছনে কার হাত? বিস্ফোরক মন্তব্য দিলীপ ঘোষের (ভিডিও) দেখতে এখানে ক্লিক করুন
তাপস রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার, বিস্ফোরক মমতা
তাপস পালের মৃত্যুকে ঘিরে এ বার বিজেপি-র ‘প্রতিহিংসার রাজনীতি’র বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাপস নন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তিন জনের প্রাণ গিয়েছে বলেও বুধবার দাবি করেন তিনি।
মঙ্গলবার ভোরে মারা গিয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা অভিনেতা তাপস পাল। বুধবার সকাল থেকে তার দেহ শায়িত ছিল রবীন্দ্র সদনে। সেখানে এ দিন তাপসকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন মমতা। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির তৃতীয় শিকার তাপস পাল। একটি এজেন্সির দ্বারা অত্যাচারিত হয়ে মানসিক ভাবে ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল তাপস। মৃত্যুর আগে জানতেও পারল না, অপরাধটা কোথায়!
তৃণমূল নেত্রীর দাবি, সেই চাপ সামলাতে না পেরেই অসময়ে চলে গেলেন তাপস পাল।
প্রায় ১ বছর এক মাস জেলে থাকার পর ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কটকের ঝাড়পদা জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন তাপস পাল। বন্দিদশাতেই শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। জামিনে মুক্তি পাওয়ার বছর দুয়েকের মাথায় মৃত্যু হয় তার। তাপসের মৃত্যুর পর গতকালই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলা শুরু করেছিলেন মমতার দলেরই শীর্ষ নেতৃত্ব। ফিরহাদ হাকিম বা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো নেতারা বলতে শুরু করেছিলেন, বদলার রাজনীতির শিকার হতে হল তাপস পালকে।
বুধবার মমতা আরও বলেন, এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক আচরণ। কেন্দ্রীয় সরকারের জঘন্য প্রতিহিংসাপরায়ণ পরিকল্পনা থেকে কেউই রেহাই পাচ্ছে না।
তাপস পালের সঙ্গেই মমতা এ দিন তৃণমূল নেতা সুলতান আহমেদ এবং তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীর মৃত্যুরও প্রসঙ্গও তোলেন। তার দাবি, তাপস পাল আসলে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির তৃতীয় শিকার। এর আগে একই রকম ভাবে চাপ সামলাতে না পেরে সুলতান আহমেদ এবং প্রসূনের স্ত্রী পারমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় মারা গিয়েছেন। সুলতান একটা চিঠি পেল। একটা ফোন এল। তার পর বাথরুমে গিয়ে মারা গেল। তাপসও ফুরিয়ে গেল। অথচ তার যাওয়ার কথা নয়। এ তার অকালমৃত্যু।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
আরও পড়ুনঃ