হাসলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে। তাই দিনে অন্তত একবার হাসতেই হবে। শুধু হার্ট ভালো থাকে তাই নয়, হাসির একগুচ্ছ উপকারিতা রয়েছে। তারপরই , হাসিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিল জাপান। আরও নির্দিষ্ট করে বললে জাপানের ইয়ামাগাতা প্রিফেকচার। উত্তর জাপানের এই প্রিফেকচারের স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার পর, গত সপ্তাহে হাসি বিষয়ে একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের মতে, এই অধ্যাদেশ জারি করায় স্বাস্থ্যের উপর হাসির কতটা উপকারী প্রভাব পড়ে, সেই সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারবেন ইয়ামাগাতার নাগরিকরা। পাঁচ বছর আগে জার্নাল অব এপিডেমিওলজিতে এই বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছিল। গবেষণাটি করেছিল জাপানের ইয়ামাগাটা ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের একটি গবেষক দল। তারাই তুলে ধরে হাসির উপকারিতার কথা।
হাসির নিয়মে বলা হয়েছে যে ইয়ামাগাতার নাগরিকরা ‘হাসির উপকারী স্বাস্থ্যের প্রভাব সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে পারবে এবং দিনে একবার হাসি মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য গঠনে ভূমিকা নেয়’।
কর্মক্ষেত্রগুলোকে ‘হাসিতে ভরা পরিবেশ’ তৈরি করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতি মাসের অষ্টম দিনটিকে ‘হাসির দিন’ হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে। হাসি নিয়ে আরও বেশি প্রচার করা হচ্ছে।অনেক রাজনীতিবিদ এই নিয়মের বিরোধিতা করছেন যারা বলেছেন যে এটি তাদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের পাশাপাশি যারা হাসতে পারে না তাদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। জাপান কমিউনিস্ট পার্টির অ্যাসেম্বলিম্যান তোরু সেকি বলেছেন, ‘হাসা বা না হাসা চিন্তা ও ধর্মের স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি অভ্যন্তরীণ স্বাধীনতা সম্পর্কিত সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত করা মৌলিক মানবাধিকারগুলির মধ্যে একটি।’
প্রিফেকচারাল পলিটিক্স ক্লাব নামক গ্রুপের সাতোরু ইশিগুরো বলেছেন, ‘অসুস্থতা বা অন্যান্য কারণে যাদের হাসতে অসুবিধা হয় তাদের মানবাধিকার ক্ষুণ্ন করা উচিত নয়।’ কেউ কেউ আছেন যারা বলছেন, যদিও হাসি একটি ভাল জিনিস, তবুও এটি মানুষের ব্যক্তিগত পছন্দ। আইন দিয়ে লোকেদের বাধ্য করা উচিত নয়। ৪০ বছর বা তার কম বয়সী প্রায় ১৭,১৫২ জন এই গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন। তারা তাদের হাসির ফ্রিকোয়েন্সি সংক্রান্ত বিশদ একটি প্রশ্নাবলী পূরণ করেছেন, যার পরে তাদের স্বাস্থ্য বেশ কয়েক বছর ধরে ট্র্যাক করা হয়েছিল। ফলাফলে দেখা গেছে যে যারা সপ্তাহে অন্তত একবার হাসেন তাদের কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কম যারা মাসে একবারেরও কম হাসেন তাদের তুলনায়।
সূত্র : wionews (মানবজমিনে প্রকাশিত)