‘ধূমপান মৃত্যুর কারণ’ জেনেও অনেকে বিড়ি-সিগারেট বা তামাক জাতীয় দ্রব্য ফুঁকেই যান। শরীরে রোগ দানা বাঁধতে শুরু করলে টনক নড়ে।
তখনই দেহে জমা হওয়া নিকোটিন ঝরাতে অনেকে সচেষ্ট হয়ে ধূমপান ছেড়ে দেন। কিন্তু ধূমপান ছাড়লেই কি আর দীর্ঘদিনের অত্যাচারের দাগ অর্থাৎ নিকোটিনের প্রভাব শরীর থেকে মুছে যায়? ধূমপান ছাড়ার পর সাধের দেহখানি নিকোটিনমুক্ত করতে আশ্রয় নিতে হবে প্রাকৃতিক উপায়ের। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী সেই উপায়গুলো জেনে নিন:
মধু: মধুর বেশ কিছু ভিটামিন, উত্সেচক এবং প্রোটিন শরীর থেকে নিকোটিন বের করে দেওয়ার পাশাপাশি সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণ মধু সেবনের মাধ্যমে ধূমপান ছাড়তে কোনও অসুবিধাই হয় না।
আদা: ধূমপানের নেশা ছাড়াতে চাইলে আদার ব্যবহার করা যেতে পারে। আদা চা বা কাঁচা আদা নিয়মিত খেলে ধীরে ধীরে ধূমপানের ইচ্ছে কমে যায়। ধূমপানের ইচ্ছে হলেই যদি এক টুকরো কাঁচা আদা মুখে দেওয়া যায় তাহলে ধূমপানের ইচ্ছা প্রশমিত হবে অনেকটাই।
মূলা: ১ গ্লাস মূলার রসের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে দিনে দু’বার করে নিয়মিত খেলে ধূমপানের ইচ্ছা একেবারে কমে যায়। শুধু ধূমপানের অভ্যাসই নয়, যে কোনও ধরনের নেশামুক্তির ক্ষেত্রে আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা মূলার উপরই ভরসা রাখেন।
মরিচের গুঁড়া: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নানাভাবে যদি নিয়মিত মরিচের গুঁড়া খাওয়া যায়, তাহলে ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ধূমপান করার ইচ্ছাও কমতে থাকে। এক গ্লাস পানিতে অল্প পরিমাণ (এক চিমটে) মরিচের গুঁড়া ফেলে সেই পানি পান করা যায়, সেক্ষেত্রে দারুন উপকার পাওয়া যেতে পারে।
আঙুরের রস: ধূমপানের ফলে শরীরের ভিতরে নিকোটিনের মাধ্যমে জমতে থাকা টক্সিন বেরিয়ে গেলেই ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, ধূমপানের ইচ্ছাও কমতে শুরু করে। আর আঙুরের রস ফুসফুসকে টক্সিন-মুক্ত করতে সাহায্য করে।
কমলালেবু: অত্যধিক ধূমপানের কারণে শরীরে মজুত ভিটামিন ‘সি’র পরিমাণ কমে যায়। কমলালেবুতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ থাকে যা নিকোটিন সরিয়ে শরীরের বিপাকীয় কার্যকারিতাও (মেটাবলিজম) বাড়িয়ে দেয়।
গাজর: নিকোটিন ধূমপায়ীদের ত্বকের ক্ষতি করে। আর গাজর ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী। গাজরে প্রচুর পরিমাণ ‘এ, সি, কে ও বি’ থাকে যা দেহ থেকে নিকোটিনকে চির বিদায় দেয়।
পালং শাক: পালং শাকের প্রচুর ফলিক অ্যাসিড দেহের নিকোটিন দূরীকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
ব্রোকলি: ব্রোকলিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ ও বি৫ থাকে। এই সবজি শরীর থেকে নিকোটিনের প্রভাব দ্রুত কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। এছাড়া নিকোটিন দূরীকরণে ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফলমূল (বিশেষত কিউয়ি ফল যা নিউজিল্যান্ড ও চীনে পাওয়া যায়) ও ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ শাক-সবজি খাওয়া যেতে পারে।